ফেনী সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৭ এএম
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৩১ এএম
অতিথি পাখির কলতানে জাম্বারা দীঘি মুখরিত হয়ে উঠেছে। ছবি : প্রবা
নী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের জাহানপুর জাম্বারা দীঘি অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠেছে। সকাল বেলা পাখিদের কলকাকলিতে ঘুম ভাঙে দীঘি পাড়ের মানুষের। এ দীঘিতে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার অতিথি পাখির আগমন স্থানীয়দের হাড় কাঁপানো শীতের বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এসব পাখির কিচির মিছির শব্দে পুরো এলাকা এখন মুখরিত। এসব পাখির কোলাহল দেখতে প্রতিদিনই ভীড় জমাচ্ছেন আশপাশের এলাকা থেকে আগত দর্শনার্থীরা। জনপ্রতিনিধিদের সতর্কতা ও স্থানীয়দের সচেতনতায় এ দীঘিটি যেন অতিথি পাখিদের জন্য অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা জানায়, জাহানপুর মোল্লা বাড়ির সামনে প্রায় ৪ একর আয়তনের জাম্বারা দীঘিতে শীতে প্রতিবছর অতিথি পাখির আগমন ঘটে। নভেম্বরের শেষের দিকে আগত এ পাখি ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ফিরে যায় নিজ আবাসস্থলে। চলতি মৌসুমে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার পাখির সমাগম ঘটেছে এ দীঘিতে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দীঘির অদূরে থাকতেই শোনা যায় পাখিদের কিচির মিচির শব্দ। হাজার হাজার পাখির বিচরণ স্বচক্ষে দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ আসছে এ দীঘির পাড়ে। ঘন গাছের ছায়াবেষ্টিত চতুর্পাশ মোড়ানো এ দীঘির সৌন্দয্য যেন দর্শনার্থীদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
পাখির বিচরণ দেখতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, অতিথি পাখির কিচির মিচির শব্দে যেনো হারিয়ে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। সত্যিই দৃশ্যপট উপভোগ করার মতো।
স্থানীয় সাদিয়া আফরিন বলেন, এখানে শিকারীরা পাখি শিকার করে না বলেই পাখির অভয়ারণ্য হয়েছে। প্রতিবছরই পাখির সংখ্যা বাড়ছে। স্থানীয়দের সচেতনতায় কেউ ঢিলও ছুড়তে পারে না।
শর্শদীর ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়া উদ্দিন মোল্লা বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে এ দীঘিতে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও হাজার হাজার পাখির সমাগম ঘটেছে। আগত এ অতিথি পাখিদের অভয়রাণ্য ও আবাসস্থলে যাতে কোন প্রকারের সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা এলাকায় একটি টিমকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারা এ বিষয়ে সতর্ক ও সোচ্চার থাকায় এ দীঘিতে দিন দিন অতিথি পাখির আগমন বাড়ছে। পাখিরা নিজেদের মত করে মুক্ত আকাশে বিচরণ করে দীঘিতে অবস্থান নিয়ে দর্শনার্থীদের বিনোদন ও প্রশান্তি দিচ্ছে।
অতিথি পাখির কলতানে জাম্বারা দীঘি মুখরিত হয়ে উঠেছে। ছবি : প্রবা
শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা বলেন, সম্প্রতি ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে এসে পাখির কলকাকলি দেখে এ দীঘিতে অভয়ারণ্য নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। সেই আলোকেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। স্থানীয়দের সতর্কতা ও সচেতনতায় এ দীঘিটি অতিথি পাখির জন্য অভয়ারণ্য হওয়ায় দিন দিন পাখির আগমন বাড়ছে।
ফেনী জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, শীত প্রধান দেশ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি অতিথি হয়ে আসে। এরা ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও দীঘিতে অবস্থান নেয়। শীত কমার সাথে সাথে এসব পাখি আপন নীড়ে ফিরে যায়। দেশে আগত অতিথি পাখি নিধন না করতে আইন করা হয়েছে। এ আইনের আওতায় বিভিন্ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও পাখির আবাসস্থলের আশপাশের ব্যক্তিদের সচেতন করতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।