× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রন্টুর মাছ শিকার

আহসান হাবীব

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫ ১৪:১০ পিএম

অলংকরণ : নিঝুম নিসর্গ, ষষ্ঠ শ্রেণি, রোজডেল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খুলনা

অলংকরণ : নিঝুম নিসর্গ, ষষ্ঠ শ্রেণি, রোজডেল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খুলনা

আজ ভোররাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা শহরটা মনে হয় ভেসেই যাবে আজ। রন্টু ভালো করেই জানে, আজ স্কুলে যেতে হবে না। এই বৃষ্টিতে মা তাকে স্কুলে যেতে দেবে না। এই আনন্দে সে সেকেন্ড রাউন্ড ঘুম দিতে যখন প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই মার গলা শোনা গেল।

Ñ রন্টু?

Ñ হু

Ñ উঠেছিস?

Ñ উহু

Ñ ওট বলছি। রন্টু আতঙ্কিত হলো মা কি স্কুলে যেতে বলবে। সে চেঁচাল

Ñ স্কুলে যাব?

Ñ স্কুলে যেতে হবে না। তবে বাজারে যেতে হবে। ওট জলদি। উফ এই বৃষ্টির মধ্যে বাজারে যাব। কী আর করা মা যখন বলেছে যেতেই হবে। চট করে উঠে পরে রন্টু। বাজারে যাওয়ার রাস্তাটা অবশ্য তার বেশ প্রিয়। একটা ছোট্ট পুকুরের পাশ দিয়ে যেতে হয়। এই পুকুরেই

রন্টু বাবার সঙ্গে সাঁতার শিখেছে। সে কারণেই কি না কে জানে পুকুরটা তার বেশ

প্রিয়।

Ñ চট করে নাশতা সেরে ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়ল রন্টু। মা একশ টাকা দিয়েছে, শুধু ছোট মাছ কিনলেই হবে। আর কিছু কিনতে হবে না, বাকি শাকসবজি সব বাসাতেই আছে।

পুকুরের পাশের রাস্তায় নেমে হতভম্ব হয়ে গেল রন্টু। কোথায় পুকুর? রাস্তা পুকুর থই থই জলে সব একাকার। পুকুর কোথায় আর রাস্তা কোথায় বোঝার কোনো বুদ্ধি নেই। আর তখনই ঝম ঝম করে বৃষ্টি শুরু হলো। একেই বোধহয় বলে কেটস অ্যান্ড ডগ বৃষ্টি। বাজারের ব্যাগটা ভাঁজ করে পকেটে ঢুকিয়ে ছাতাটা বাগিয়ে ধরে এগোতে যাবে, তখনই দুর্ঘটনাটা ঘটল। 

হুঁশ করে তলিয়ে গেল রন্টু পানিতে। ব্যাপারটা বুঝতে একটু সময় লাগল যেন রন্টুর, সে রাস্তা থেকে সটান পুকুরে পড়েছে। ভাগ্যিস সাঁতার জানে রন্টু নইলে কী যে হতো। হাপুস হুপুস করে মাথাটা ভাসাল কোনো রকমে। ডান হাতে তখনও ছাতাটা ধরা। ছাতাটা খোলা আছে বলে ছাতা নিয়ে সাঁতরে ওপরে উঠতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত উঠে এলো পুকুর থেকে ছাতাটা সহই, ছাতাটা তখনও খোলা পানিভর্তি হয়ে আছে... যেন কালো বিশাল একটা গামলা ভর্তি পানি আর তখনই আঁতকে উঠল রন্টু এ কী কাণ্ড!! তার ছাতাভর্তি মাছ ... মানে কী!?

আরে সত্যিই তো ছটফট করছে ছোট ছোট মাছগুলো পুঁটিমাছ আর খলসে মাছের

একটা বাজার বসেছে যেন তার ছাতার পানিতে।


সকাল সকাল ফিরতে দেখে মা অবাক হলোÑ ‘কীরে এত তাড়াতাড়ি বাজার হয়ে গেল। একেবারে

কাকভেজা হয়ে গেছিস দেখছি।

ছাতাটা নিলি কী করতে শুনি?’

Ñ এই দেখ বলে ছাতাটা খুলে ধরে রন্টু

তাজা মাছগুলো তখনও ছটফট করছে ছাতার মধ্যে। মা হতভম্ব। বাবাও হতভম্ব।

Ñ ছাতার মধ্যে এত তাজা মাছ এলো কোত্থেকেরে?

রন্টু তখন পুরো কাহিনী খুলে বলল। শুনে বাবা-মা দুজনেই একসঙ্গে আঁতকে উঠলেন। বাবা তো

বিরক্তি প্রকাশ করলেন মার প্রতি

Ñ এই বৃষ্টিতে ওকে কেন বাজারে পাঠালে? আমাকে বলতে

Ñ তুমি যেভাবে ঘুমুচ্ছিলে... মা গামছা এনে রন্টুর মাথা, গা, হাত, পা মুছতে শুরু

করেছেন। তাকে যেন একটু অপ্রস্তুত মনে হচ্ছে। তবে মাছগুলো সব ছাতা থেকে যখন

মেঝেতে ঢালা হলো। তখন একটা সিন হলো বটে, তখনও মাছগুলো ছটফট করছে। বাবা বললেনÑ

রন্টু তোর ছাতায় এতগুলো মাছ কেন এলো বলতে পারিস?

Ñ না কেন?

Ñ আসলে বৃষ্টির সময় পুকুরের পানির তাপমাত্রা অনেক নেমে যায়। তাই মাছেরা পানির ওপরের

লেভেলে চলে আসে ধূসর; একটু উত্তাপের জন্য, একই সঙ্গে ওপরে অক্সিজেনের লেভেলও বেশি থাকে।

আরেকটা কারণ আছে

Ñ কী কারণ?

Ñ বৃষ্টির সময় পানির ক্লাউডি নেস বেড়ে যায়। মাছদের দেখতে অসুবিধা হয়, তাদের ওপরে

উঠে আসার এটাও একটা কারণ বটে।

বাবার লেকচার শুনতে আজ খুব খারাপ লাগল না রন্টুর। তার ছাতার ভেতর এতগুলো মাছ একসঙ্গে ধরা

খাওয়ার পেছনে তাহলে বিজ্ঞানও একটা কারণ। ভাবে রন্টু। মা অবশ্য বাজারের ওই ১০০ টাকা আর ফেরত

নিলেন না। রন্টু তখন ভাবতে শুরু করেছে ওই ১০০ টাকা দিয়ে পরদিন স্কুলে গিয়ে কী কী কিনে খাবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মারুফ কামাল খান

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা