× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শিশুকে ঘরের কাজও শেখান

আফসানা জামান

প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৫ ১২:৫৫ পিএম

শিশুকে ঘরের কাজও শেখান

একটি শিশু একটু একটু করে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যক্তিত্বের নানা প্রকাশ হতে থাকে। শিশুদের দায়িত্বশীল করে তোলার লক্ষ্যে ঘরের কাজে তাদের অন্তর্ভুক্তি জরুরি। ঘরের কাজ শিশুদের স্বাবলম্বী, কর্মঠ ও স্বনির্ভর হতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু অল্প বয়স থেকে ঘরের কাজে অভ্যস্ত, তাদের পক্ষে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়। তা ছাড়া একঘেয়ে জীবনে বৈচিত্র্যের জন্য খেলাচ্ছলে শিশুদের কাজ শেখানো উচিত। কাজের সময় প্রশংসা ও গুরুত্ব বেশি উল্লেখ করলে শিশু আগ্রহী হবে। এতে করে পরিবারের সঙ্গেও শিশুর বন্ধন দৃঢ় হবে। 

যেভাবে শিশুকে ঘরের কাজ শেখাতে পারেন 

১) শিশুকে বুঝিয়ে বলতে হবে যে এই বাড়ি আর ঘর তারও। অন্য সবার সঙ্গে তারও ঘর সুন্দর ও পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব রয়েছে। শুরুতেই অনেক শিশু ঘরের কাজে আগ্রহী না-ও হতে পারে। তবে তাকে জোর করা বা বকা দেওয়া যাবে না। বুঝিয়ে বললে একদিন সে নিজে থেকেই কাজে আগ্রহী হবে।

২) বয়স অনুযায়ী শিশুকে কাজ ভাগ করে দেওয়া উচিত। প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন কাজের সঙ্গে শিশুকে পরিচয় করিয়ে দিন, এতে করে একঘেয়েমি আসবে না। শুরুতে শিশুকে সহজ ও ছোট ছোট কাজ দিন, কাজের ধরন বুঝিয়ে দেবেন এবং বারবার নিয়ম বদলাবেন না। 

৩) ২-৩ বছর বয়সি শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। তারা বড়দের দেখেই অনেক কাজে অংশগ্রহণ করতে চায়। তখন শিশুদের খেলনা গুছিয়ে রাখা শেখানো যেতে পারে। এটি খেলার একটা অংশ মনে করে শেখাবেন। খাওয়ার পর নিজের প্লেট সিংকে রেখে আসতে শেখান। এতে শিশুর মধ্যে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার প্রবণতা তৈরি হবে। 

৪) ৪-৬ বছর বয়সি শিশুরা পোষা প্রাণীদের খাবার খাওয়ানো ও গোসল করানোতে সাহায্য করতে পারে। গাছে পানি দেওয়া এবং ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে শেখান। নিজের হাতে খাবার খাওয়া ও টুকিটাকি জিনিস আনা-নেওয়া করানো যেতে পারে। 

৫) ৬-৮ বছর বয়সি শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে উৎসাহ দিন। ময়লা জায়গা টিস্যু দিয়ে পরিষ্কার করা, পরিহিত ঘর্মাক্ত পোশাক লন্ড্রি বক্সে রেখে দেওয়া, নিজের বিছানা, পড়ার টেবিল, খেলার জায়গা যথাসম্ভব গুছিয়ে রাখতে বলুন। 

৬) ৯-১০ বছর বয়সে সাধারণত শিশুরা নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে শিখে যায়। খাওয়ার পরে প্লেট ধুয়ে রাখা, টেবিল মোছা, নিজের খাবার নিজেই টিফিন বক্সে ভরা, নিজের স্কুল ব্যাগ নিজেই গোছানো এসব কাজ করানো যেতে পারে। এতে করে শিশুর মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ তৈরি হয়। 

৭) ১০ বছরের ঊর্ধ্বের শিশুরা বাজার করতে, গাছে পানি দিতে, জামা কাপড় ভাঁজ করে গুছিয়ে রাখতে, টেবিলে খাবার পরিবেশন করতে সহায়তা করতে পারে। 

শিশুরা দায়িত্ব নিতে ভালোবাসে। এতে তাদের বিশ্বাস গড়ে ওঠে এবং কাজ সফল করার প্রতি আগ্রহ বাড়ে। কাজ শেষ করার পর তাদের প্রশংসা করলে নতুন কাজে তারা দ্বিগুণ উৎসাহী হয়। একবার যদি আপনি তাদের কঠিন কোনো কাজ দেন, তাহলে সেটা তাদের মতো করেই করতে দিন। প্রতি পদক্ষেপে তাদের ভুল ধরিয়ে দেবেন না। বিশেষ করে ১০ বছর বয়সি বা তার বেশি বয়সিদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বেশি থাকে। টিনএজারদের বাস্তব জীবনের শিক্ষা দেওয়া শুরু করুন। যত দ্রুত শেখাবেন, তত তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়বে, সমস্যার মুখোমুখি হতে ভয় পাবে না। ঘরের দরকারি জিনিস কেনাকাটা করতে নিয়ে যাওয়া, রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা এগুলো ছেলেমেয়ে উভয়কেই শেখাতে হবে। রান্না ও ঘরের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব যেমন মেয়েদের একার না, তেমনই ইলেকট্রনিক্স বা গাড়ি চালানো শুধু ছেলেদের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই সব কাজ মিলেমিশে করতে হবে অল্প বয়স থেকেই। 

ঘরের কাজে অংশগ্রহণ শিশুর বেড়ে ওঠার একটি প্রক্রিয়া। শিশুকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার জন্য ছোটবেলা থেকেই একটু একটু করে ঘরের কাজে যুক্ত করা উচিত, এতে করে সে দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে উঠবে। তাতে শিশুর শৈশব হবে আনন্দপূর্ণ। আর ভবিষ্যতে সুখী আর সফল হওয়াও হয়ে উঠবে সহজ।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা