ঘোরাঘুরিতে যা যা প্রয়োজন

ভ্রমণে দেশ বা দেশের বাইরে যেখানেই যাওয়া হোক না কেন, সঙ্গে দরকারি জিনিস নিতেই হয়। গুছিয়ে জিনিস না নিলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বিপত্তি, যার কারণে পুরো ট্যুরের আনন্দই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘুরতে গেলে কোন জিনিসগুলো সঙ্গে রাখা জরুরি।

কাগজপত্র

ঘুরতে গেলে কিছু কাগজপত্র সব সময় সঙ্গে রাখা জরুরি। যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স বা টিকিটের প্রিন্ট কপি, এমন কোনো জায়গা যেখানে অনুমতিপত্র লাগবে সেই কাগজ ইত্যাদি। দরকারি এ জিনিসগুলো একটি আলাদা ফাইলে রেখে ব্যাগে রাখবেন। এতে ব্যাগ বারবার খুঁজে বের করার ঝামেলা পোহাতে হবে না।

পোশাক

যখন যেখানে ঘুরতে যাবেন সে জায়গার আবহাওয়া সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। পোশাক স্বাচ্ছন্দ্যের না হলে ঘুরে মোটেও আরাম পাওয়া যাবে না। কেমন বাতাস থাকে, রোদ বা বৃষ্টির সম্ভাবনা কেমন এসব জেনে পোশাক নির্বাচন করতে হবে।

ওষুধ ও ফার্স্ট এইড কিট

ভ্রমণ মানেই যে প্রতিটি মুহূর্ত থাকবে ছবির মতো নিখুঁত, তা নয়। হঠাৎ মাথা ধরে গেলে, হজমে গোলমাল হলে কিংবা হাত-পা কেটে গেলে তৎক্ষণাৎ কাজে দেবে হাতের কাছে থাকা দরকারি ওষুধ ও ফার্স্ট এইড কিট। প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড, ব্যান্ড-এইড, ব্যথানাশক আর অ্যান্টিসেপটিক, ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ, গজ, স্যাভলন, মুভ, তুলা এগুলো সঙ্গে রাখুন।

চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক

এক দিনের জন্য না হয় চলা যায়, কিন্তু ট্যুর যদি কয়েক দিনের হয় তাহলে চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। চলতি পথে ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলে যোগাযোগের মাধ্যমটাও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ব্যাগ গোছানোর সময় এগুলো সঙ্গে রাখতে হবে।

শুকনো খাবার ও পানি

ভ্রমণে সঠিক খাবার নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের একটু এদিক-সেদিক হলে বা ভুল খাবার খেলে হজমে সমস্যা থেকে শুরু করে নানা অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। ঘরে বানানো খাবারের সঙ্গে সঙ্গে শুকনো খাবার যেমন বিস্কুট, বাদাম, চকলেট, ড্রাই ফ্রুটস ইত্যাদি রাখতে পারেন। স্থানীয় জায়গাগুলোয় পরিচ্ছন্ন হোটেল দেখে নির্বাচন করবেন। নতুন পরিবেশে হুট করে খাবার শরীরে অ্যাডজাস্ট না-ও হতে পারে। চাইলে পোর্টেবল রাইস কুকার ব্যাগে বহন করতে পারেন। এতে ভাত, খিচুড়ি বা নুডলসের মতো খাবারগুলো অনায়াসে রেঁধে ফেলা যাবে।

নগদ টাকা

মানিব্যাগে আমরা এখন নগদ টাকা কম রাখি, ব্যাংকের কার্ডটাই বেশি থাকে। তবে ঘুরতে গেলে যে সব জায়গায় বুথ পাবেন এর নিশ্চয়তা নেই। তাই কিছু টাকা সঙ্গে রাখতে হবে। যদি দেশের বাইরে যান, খরচের জন্য সে দেশের কারেন্সি ভাঙিয়ে নেওয়া ভালো।

টয়লেটরি ও হাইজিনসামগ্রী

ভ্রমণে বের হলে আনুষঙ্গিক সব জিনিসের মাঝে হাইজিনসামগ্রী থাকাটাও জরুরি। ব্যাগে টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, ছোট একটা সাবান বা লিকুইড হ্যান্ডওয়াশ, তোয়ালে, টিস্যু, ওয়েট ওয়াইপস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। নারীদের জন্য অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় হলো স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানো যায়।

ব্যাকপ্যাক ও এয়ারটাইট ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ

ভ্রমণ মানেই নতুন পথে হাঁটা, কখনও পাহাড় পেরিয়ে, কখনও নদী বা সমুদ্রের ধারে ছুটে যাওয়া। এ পথে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সঙ্গী হচ্ছে একটি শক্তপোক্ত ব্যাকপ্যাক। এটি শুধু জিনিসপত্র বহনের জন্য নয়, বরং যাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্যও জরুরি।

মেকআপ ট্রাভেল কিট

এ কিট শুধু ফটো-রেডি থাকার জন্য নয়, বরং প্রতিদিনের জন্য একটুখানি সতেজতা, আত্মবিশ্বাস আর নিজেকে ভালো রাখার জন্য বিশেষভাবে জরুরি। 

ভ্রমণ মানেই তো আর একটা বিশাল মেকআপ ব্যাগ বহন করা সম্ভব নয়। আর সব পণ্য সব জায়গার জন্য উপযুক্তও না। এ জায়গায় একটি বুদ্ধিমানের মতো গুছিয়ে নেওয়া কিট হতে পারে আপনার ভ্রমণের বিউটি লাইফসেভার। ট্রায়াল বা স্যাম্পল সাইজ প্রোডাক্ট সঙ্গে রাখুন।

সব সময় ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ ব্যবহার করুন। ট্যুরে ভারী মেকআপ নয়, ন্যাচারাল লুক সবচেয়ে কার্যকর। সানস্ক্রিন নিতে কখনও ভুলবেন না। ত্বকের সুরক্ষা অনেকটাই নির্ভর করছে এর ওপর। সঙ্গে মেকআপ রিমুভার ওয়াইপস, আইলাইনার বা কাজল, মিনি মাশকারা এগুলোও ব্যাগে রাখতে পারেন।