প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:০৭ পিএম
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:০৭ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
দেশের সামগ্রিক পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ‘এ্যাডভেঞ্চার’ এবং ‘গলফ ট্যুরিজম’-কে গুরুত্ব দিয়ে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘Youth Engagement in Promoting Adventure and Golf Tourism’ শীর্ষক অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারা বলেন তরুণরাই দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে আগামী দিনের পথপ্রদর্শক।
গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকাল ৫টায় রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে Bangladesh Adventure Tourism Association (BATA) ও Bangladesh Integrated Rural Based Association (BIRBA)-এর যৌথ উদ্যোগে এবং Arunima Resort Golf Club এর সার্বিক সহযোগীতায় Youth Engagement in Promoting Adventure and Golf Tourism শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসমারিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরিন জাহান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা এবং ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন খবির উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, দেশের সামগ্রিক পর্যটন উন্নয়নে তরুণদেরকে অবশ্যই সম্পৃক্ত করতে হবে। তরুণদের নেতৃত্বেই দেশে এ্যাডভেঞ্চার এবং গলফ টুরিজমের উন্নয়নসহ পর্যটন শিল্পে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠবে। ইতোমধ্যেই বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এবং তার অধীনস্থ সংস্থা বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এতদবিষয়ে নানা ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। বি.এ.টি.এ এবং বারবা এই দুটি সংগঠন আজকের সেমিনারের মাধ্যমে দেশের পর্যটন শিল্পকে একটি নতুন দিগন্ত উম্মোচন করে দিয়েছে। তরুণরা ইতোমধ্যেই প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারুণ্যের শক্তিতে যে কোন পরিবর্তন এবং উন্নয়ন সম্ভব। প্রধান অতিথি মনে করেন, পর্যটন শিল্পে এ্যাডভেঞ্চার এবং স্পোর্টস বিশেষ করে গলফ খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, গলফের মাধ্যমে দেশে অনেক বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করা যাবে। তরুণরা এ্যাডভেঞ্চার উন্নয়নেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে।
অরুণিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব এবং বাংলাদেশ এ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট খবির উদ্দিন আহেমদ বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও তরুণদের নেতুত্বে গলফ স্পোর্টস তথা গলফ ট্যুরিজমের জনপ্রিয়তা দিনি দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে দেশে এ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম তরুণদের নেতৃত্বেই এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ছাত্র ও তরুণ বয়সে যুব নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং জেসিআই এর ওয়াল্ডওয়াইড ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বিশ্বের বহু দেশে তিনি ঘুরেছেন এবং বর্তমান সময়ে ভ্রমণ করছেন। ফলে এ্যাডভেঞ্চার এবং গলফ ট্যুরিজমসহ সামগ্রিক পর্যটন উন্নয়নে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। উক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের উন্নত সেবা প্রদানে এবং দেশের তরুণদের গলফ খেলায় আগ্রহী করার জন্য অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তরুণদের পর্যটন শিল্পে সম্পৃক্ত করলে তারা সকল মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকবে এবং এ্যাডভেঞ্চার এবং গলফ ট্যুরিজমসহ দেশের সামগ্রিক পর্যটন উন্নয়নে মনোনিবেশ করতে পারবে। তিনি বলেন, সম্মানিত সেনাবাহিনী প্রধান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশন জেনারেল ওয়াকার -উজ-জামান ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব পরিদর্শনের পর থেকে অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব পরিপূর্ণতা লাভ করে। এজন্য তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন-এর চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা তার বক্তব্যে এ্যাডভেঞ্চার এবং গলফ ট্যুরিজমের উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরেনে এবং বিভিন্ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিল বাংলাদেশ (এনএসসিবি)-এর সচিব আমিনুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, দেশের স্পোর্টস-এর উন্নয়নে তরুণরা সম্পৃক্ত আছে এবং তাদেরকে আরও বেশি বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে। তিনি গলফ স্পোর্টস এবং গলফ ট্যুরিজমের উন্নয়নে সকল ধরণের সহযোগীতা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মোহম্মদ আব্দুর রহিম খান, সিনিয়র ফ্যাকাল্টি এন্ড উইং চিফ, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব গভর্নেন্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট। তিনি তার প্রবন্ধে দেশের সামগ্রিক পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে এ্যাডভেঞ্চার এবং গলফ ট্যুরিজমের উন্নয়নে গুরুত্ব দেন। প্রবন্ধে তরুণদের কীভাবে এ্যাডভেঞ্চার এবং গলফ ট্যুরিজমের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা যায় এবং তাদের সম্পৃক্ত করলে কী কী বেনিফিট হবে এ বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। তরুণদের দেশের পর্যটন শিল্পে দ্রুত সম্পৃক্ত করার বিষয়েও প্রবন্ধে সুপারিশ করা হয়।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বি.এ.টি.এর সেক্রেটারি জেনারেল মশিউর খন্দকার, টোয়বের প্রেসিডেন্ট রাফিউজ্জামান রাফি, টিডাব-এর চেয়ারম্যান
আসলাম খান, আই.এস.সি ফর ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি-এর চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল, এভিয়েশন এন্ড ট্যুরিজম জার্নলিষ্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট তানজিম আনোয়ার, পাটা বাংলাদেশ চ্যাপ্টার-এর সেক্রেটারি জেনারেল তৌফিক রহমান, ওয়ার্ল্ড ট্র্যাভেল এন্ড ট্যুরিজম ক্লাব-এর প্রেসিডেন্ট মিজ তৌহিদা সুলতানা রুনু, এছাড়াও বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।