মাউন্ট এভারেস্ট ও লোৎসে অভিযানে যাবেন কাজী বিপ্লব
গোলাম কিবরিয়া
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০৯ পিএম
পর্বতারোহী কাজী বিপ্লব
বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট ও লোৎসে অভিযানে আগামী বছর (২০২৬ সাল) যাচ্ছেন পর্বতারোহী কাজী বিপ্লব (কাজী বাহলুল মজনু বিপ্লব)। ২০ এপ্রিল এক ঘোষণায় তার এই অভিযানের কথা জানান। এক অভিযানে হিমালয়ের দুই শৃঙ্গ জয়ের অনন্য রেকর্ড গড়তে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন তিনি।
পর্বতারোহণের পরিভাষায় একে বলা হয় ‘ডাবল হেডার’। এ প্রসঙ্গে কাজী বিপ্লব বলেন, ‘বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে যাওয়া অনেকের স্বপ্ন। প্রতি বছর হাজারো পর্বতারোহী এভারেস্টের পথে হাঁটেন। কিন্তু এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার পর একই সঙ্গে আরেক পর্বতশৃঙ্গ লোৎসে ওঠার চেষ্টা বাংলাদেশ থেকে এর আগে বাবর আলী করেছিলেন। আমি দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সেই চ্যালেঞ্জটাই নিলাম। অর্থাৎ একই অভিযানে মাউন্ট এভারেস্ট ও চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসের চূড়ায় উঠব।’
পর্বতারোহণ যখন নেশা
কাজী বিপ্লব ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৭ হাজার মিটার একটি এবং ৬ হাজার মিটার ১৩টিসহ মোট ১৪টি ক্লাইম্বিং অভিযান এবং একটি ট্রেকিং অভিযানে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, পর্বতারোহণে প্রতিনিয়ত আমার মা-বাবাসহ ঘরের সবাই, ক্লাবের বন্ধুরা, বন্ধুরা, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনসহ ছোট-বড় সবাই সব সময় সাহস এবং উৎসাহ দিয়ে গেছেন। এখনও দিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে আমাদের ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম ভাইয়ের কথায় উৎসাহ পাই অনেক বেশি। বেশিরভাগ পর্বতারোহীই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বিন্দুতে দাঁড়িয়ে পৃথিবী দেখার স্বপ্ন দেখেন। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমি সব সময় চ্যালেঞ্জিং আর নতুন কিছু করতে পছন্দ করি। তাই এবার ডাবল হেডার জয় করতে চাই। বহু দিনের এই স্বপ্ন পূরণে সবাইকে পাশে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে বড় পাওয়া হলো স্পন্সর। এটি না পেলে পর্বতারোহণ বেশি দিন ধরে রাখা সম্ভব হতো না। কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই যেসব স্পন্সর আমাদের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অভিযানের অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এবারও আশা করব মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পাশে থাকবে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান। মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানের আয়োজক বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব।
এক নজরে ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত কাজী বিপ্লবের অভিযানের পর্বতের নাম, উচ্চতা উল্লেখ করা হলো।
ক্লাইম্বিং অভিযান :
১. স্টক কাং রি পর্বত : ২০০৯ সাল, ইন্ডিয়া।
উচ্চতা : ২০ হাজার ১৯০ ফুট।
২. লবুজে পর্বত : ২০০৯ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ৭৫ ফুট।
৩. চেকিগো/নেপাল-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পিক : ২০১০ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ৫২৮ ফুট।
৪. ইমজা সে/আইল্যান্ড পিক : ২০১২ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ২২৬ ফুট।
৫. কেয়াজো রি পর্বত : ২০১৪ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ২৯৫ ফুট।
৬. কেয়াজো রি পর্বত : ২০১৫ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ২৯৫ ফুট।
৭. মেরা পিক পর্বত : ২০১৬ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২১ হাজার ৮৩০ ফুট।
৮. লারকে পর্বত : ২০১৭ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ৫০০ ফুট।
৯. লাকপা রি পর্বত : ২০১৮ সাল, চীন (তিব্বত)।
উচ্চতা ২৩ হাজার ১১৩ ফুট।
৭ হাজার মিটারের পর্বত :
১০. ফার্চামো পর্বত : ২০১৯ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ৩০০ ফুট।
১১. দোগারি হিমাল পর্বত : ২০২২ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২১ হাজার ৪৪৩ ফুট।
১২. ডোলামা খাং পর্বত : ২০২২ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ৭৭৪ ফুট।
১৩. ফার্চামো পর্বত : ২০২৩ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ৩০০ ফুট।
৬ হাজার মিটারের পর্বত :
১৪. ইমজা সে/আইল্যান্ড পিক : ২০২৪ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ২০ হাজার ২২৬ ফুট।
ট্রেকিং অভিযান
১৫. অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প : ২০২৪ সাল, নেপাল।
উচ্চতা : ১৩ হাজার ৫৫০ ফুট।