স্বপ্নিল কুমার ভদ্র
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৪১ এএম
অলংকরণ : অভি বিশ্বাস, পঞ্চম শ্রেণি, উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বরিশাল
সমাপিকা ঘোষ পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে। থাকে মায়ের সঙ্গে। মা সুজয়া ঘোষ ব্যস্ত মানুষ। শিক্ষিকা। সমাপিকার বাবা থাকে কানাডায়। সমাপিকা প্রায়ই মাকে বলে, আচ্ছা মামণি, বাবা কি একটু বাংলাদেশে আসতে পারে না। সামনেই তো নববর্ষ। নতুন বছর বরণ করতে হবে, বাঙালি বলে কথা! মা ওর কথা শুনে হাসেন। ‘আচ্ছা ঠিক আছে, তোর বাবাকে বলব।’ মা বলেন। মা, পহেলা বৈশাখের সকালে আমি কিন্তু পান্তা-ইলিশ খাব।
আমি সালমা, সুজাতা, মেরিকেও বলে রাখব। মা রাজি হলেন।
‘তোকে কিন্তু অনেক সকালে উঠতে হবে।’ মা বলেন। অনেক ভোরে সমাপিকার ঘুম ভেঙে গেল। রেডিওতে বাজছে ‘এসো এসো, এসো হে বৈশাখ।’ মা ব্যালকনিতে বসে শুনছেন। বাইরে কৃষ্ণচূড়া গাছের সারি। থোকা থোকা হলুদ লাল রঙের কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটে আছে। সমাপিকা কিছুক্ষণের জন্য বিস্মিত হয়ে গেল। তারপর বলল, মা, টিভি থাকতে তুমি রেডিওতে গান শুনছো কেন? মা বললেন, ‘ও কিছু না। আজ পহেলা বৈশাখ তো তাই এই রেডিওটা ব্যবহার করে দেখছিলাম। তুই উঠে গেছিস তাড়াতাড়ি স্নান সেরে ফেল। খেয়ে নে। আজ আমি, তোর বাবা, তুই রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যাব।’ সমাপিকা স্নান সেরে পান্তা-ইলিশ খেয়ে নিল অনেক আনন্দে। পান্তা-ইলিশের স্বাদেই যেন বাঙালির একটা আবহ মিশে আছে।
সমাপিকার বান্ধবী সালমা রহমান, সুজাতা বড়ুয়া, মেরি গোমেজও চলে এসেছে। সবাই মিলে ছায়ানটের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত রমনা উদ্যানে বটমূলের নিচে বর্ষবরণ উৎসবে চলল। পথে গেয়ে উঠল, ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা। অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’
সপ্তম শ্রেণি, ইউনিক প্রগ্রেসিভ স্কুল, ময়মনসিংহ