তাছলিম সিদ্দিক
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫ ১৩:৩৮ পিএম
ঈদের আর খুব বেশি সময় নেই। রমজানে শরীরে পানিশূন্যতার পরিমাণ বেড়ে যায় বলে ত্বক মলিন হয়ে যায় দ্রুত। ঈদের দিনও যদি এ মলিনতা রয়ে যায় তাহলে কি দেখতে ভালো লাগবে বলুন? সারা দিন পানি পান না করা গেলেও ত্বকের যত্ন নেওয়ার আরও কিছু উপায় রয়েছে। এগুলো মেনে চললে ঈদের দিন আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।
ত্বক পরিষ্কার
সারা দিন বাইরে থাকার কারণে বা ঘরে কাজ করে হোক, ত্বকের অবস্থা এমনিতেই নাজেহাল হয়ে পড়ে। রোজা রেখে ক্লান্তির ছাপও পড়ে চেহারায়। যেহেতু শরীরের ভেতরে পানি প্রবেশ করছে না সেজন্য বাইর থেকেই যেন ত্বক পানি পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য দিনে অন্তত ২-৩ বার মুখে পানির ঝাপটা দিতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই ডাবল ক্লিনজিং করতে হবে। সারা দিনের ধুলোবালি, ময়লা, সানস্ক্রিন, মেকআপ পার্টিকেলস রিমুভ করার জন্য ডাবল ক্লেনজিং করা আবশ্যক। নইলে ত্বকের মলিনতা কমবে না।
পর্যাপ্ত পানি পান
দিনে সাধারণত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। পানিশূন্যতা দূর হলে ত্বক আর্দ্র থাকবে এবং উজ্জ্বল দেখাবে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে চোখের নিচের কালো দাগও কমে আসবে। যেহেতু রমজান মাস চলছে, এ সময় সারা দিন যেহেতু পানি পান করা যায় না, তাই ইফতারের পর থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। অনেকেই একসঙ্গে ২/৩ গ্লাস পানি পান করতে চান। এটা করা মোটেও উচিত নয়। অতিরিক্ত পানি পানে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। কিছুক্ষণ পরপর অল্প অল্প করে পানি খান যেন শরীরের চাহিদাও মেটে, ত্বকও সুস্থ থাকে।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস
সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্বল ত্বক পাওয়ার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে পর্যাপ্ত ঘুম। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। কম ঘুমালে ত্বক নিস্তেজ দেখাবে এবং বলিরেখা দেখা দিতে পারে। রমজানে ঘুমের সময় নির্ধারণ করা কিছুটা কঠিন। রাতে ঘুম একটু কম হলেও ইফতারের পর বা দিনের বেলা সেটা পুষিয়ে নেওয়া যায় কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার
সেহরিতে খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি, আমিষ ও প্রোটিনযুক্ত খাবার, শাকসবজি রাখুন। এতে সারা দিনে শরীরে শক্তি পাওয়া যাবে, সেই সঙ্গে ত্বকের চাহিদাও পূরণ হবে। ইফতারে তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং বেশি করে ফলমূল, সালাদ ও খেজুর খান। ফলের শরবত, লাচ্ছিও রাখুন ইফতারের টেবিলে। পানিযুক্ত ফল যেমন তরমুজ, আনারস, মালটা এগুলো অবশ্যই খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে। এটি ত্বকের ওপর একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি করে, যা ত্বকের পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। সকালে ও রাতে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
এক্সফোলিয়েশন
ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে ১-২ বার স্ক্রাব ব্যবহার করুন। ব্র্যান্ডের স্ক্রাব যদি ব্যবহার করতে না চান, সে ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপাদান দিয়ে ঘরেই বানিয়ে ফেলতে পারেন স্ক্রাব। আমি আপনাদের দুটি স্ক্রাব তৈরির উপায় বলে দিচ্ছি।
প্রথম স্ক্রাব : ১ চামচ কফি পাউডার + দুধ + মধু মিশিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। জোরে জোরে ঘষবেন না। এতে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
দ্বিতীয় স্ক্রাব : টমেটো স্লাইস কেটে তার ওপর মধু ও চিনি দিয়ে স্ক্রাব করুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহার
সূর্যের তাপে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ থেকে ত্বকে অ্যালার্জি, লালচে ভাব, র্যাশ হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় স্কিন ক্যানসারের কারণও কিন্তু এ সূর্যরশ্মি। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে চাইলে নিয়মিত সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। বাইরে যাওয়ার আগে এবং ঘরে থাকলেও ৩-৪ ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই করতে হবে। এসপিএফ ৩০ বা ৫০যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে সুরক্ষা বেশি পাওয়া যাবে।
ফেসপ্যাক ব্যবহার
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য ফেসপ্যাক খুব ভালো কাজ করে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী বানিয়ে নিতে পারেন ফেসপ্যাক।
শুষ্ক ত্বকের জন্য ফেসপ্যাক : এক চিমটি হলুদ + দুধ + কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ফেসপ্যাক : মুলতানি মাটি + মধু + গোলাপজল মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন ১৫-২০ মিনিট। এরপর মুখ ধুয়ে নিন।