দিলরুবা নীলা
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৫ ১৭:২৬ পিএম
অলংকরণ : প্রযত রায়, ষষ্ঠ শ্রেণি, মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
রোজ বিকালে একটু না খেললে ভালো লাগে না রাফাতের। প্রতিদিন এক ম্যাচ খেলে রাফাত ও তার বন্ধুরা। ওদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো খেলে আরাফ। ওর পায়ে বল গেলে গোল হবেই।
ওরা এবার ক্লাস ফাইভে পড়ছে। ওরা মানে রাফাত, আরাফ, নাহিয়ান, আরিয়ান, আশরাফুল, আসাদ, তাসিন এবং অরিন।
আজ বিকালে সবাই মাঠে এলেও আরাফ আসেনি। সবাই ভীষণ অবাক হয়। রোজ তো আরাফই আগে আসে।
সবাই চল আমরা আরাফদের বাসায় যাই। নিশ্চয়ই ওর কোনো সমস্যা হয়েছে। রাফাত বলে ওঠে।
চল যাই। সবাই একমত হলো।
আরাফদের বাসা মাঠ থেকে দশ মিনিটের পথ।
আরাফ বাসাতেই ছিল। ওর মা বিছানায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছেন আর আরাফ মাথায় পানি ঢালছে
আর কাঁদছে।
আরাফের বাবা নেই। ওর মা টিউশনি করে সংসার চালায়।
কী হয়েছে আন্টির? নাহিয়ান জানতে চায়।
বুঝতে পারছি না কী হয়েছে হঠাৎ মেঝেতে পড়ে গেল। তার পর থেকে কেমন যেন করছে। চোখ মেলছে না।
দেখি দেখি জ্বর আছে কি না। বলেই রাফাত কপালে হাত দেয়।
নাঃ জ্বর নেই। এক্ষুনি হাসপাতালে নিতে হবে। রাফাত বলে ওঠে।
আমরা কি পারব? তাসিন প্রশ্ন করে।
কেন পারব না!
আসাদ, আরিয়ান বাইরে গিয়ে দেখ কোনো ভ্যান পাওয়া যায় কি না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরা একটি ভ্যান পেয়ে যায়। সবাই মিলে আরাফের মাকে ভ্যানে তুলে পাশের ক্লিনিকে নিয়ে যায়।
হাসপাতালে গিয়ে তাদের ফোন থেকে রাফাত ওর মাকে ফোন দেয়।
রাফাতের মায়ের অনুমতি নিয়ে ডাক্তার পরীক্ষানিরীক্ষা করে জানান হালকা স্ট্রোক করেছেন।
তবে ওরা সময়মতো হাসপাতালে নিয়ে না এলে সমস্যা হতে পারত।
ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ায় আরাফের মা চোখ মেলেন।
তোমরা দারুণ সব বাচ্চা। কত বড় একটা কাজ করেছ জানো? ডাক্তার ছেলেদের প্রশংসা করে।
আরাফের মা বিছানায় শুয়ে আছেন। ডাক্তার বলেছেন আর কিছুক্ষণ পরে তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন।
আরাফের মা কৃতজ্ঞতার চোখে তাকিয়ে আছেন ছেলের বন্ধুদের দিকে।
আর রাফাতের মা তাকিয়ে আছেন তার ছেলের দিকে। তার ছেলেকে এখন আর ফাইভে পড়া শিশু মনে হচ্ছে না।