কাজী নওশীণ লায়লা
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৫ ১৩:২৩ পিএম
রমজানে ইফতারে খেজুর নিয়মিত খাওয়া হয়। খেজুর দিয়ে তৈরি করা যায় মজার মজার খাবারও। ইফতারে ভিন্ন স্বাদের কিছু খেতে চাইলে বানিয়ে ফেলতে পারেন খেজুরের নানা পদ। রেসিপি দিয়েছেন কাজী নওশীণ লায়লা
খেজুরের কেক
যা যা লাগবে
বীজ ছাড়ানো খেজুর ১ কাপ, চিনি ২ টেবিল চামচ (খেজুর মিষ্টি চাইলে চিনি স্কিপ করা যায়), মাখন ৩ টেবিল চামচ, ময়দা ১/২ কাপ, সুজি ১/২ কাপ, ভ্যানিলা এসেন্স ৩ ফোঁটা, বেকিং পাউডার ১/২ চা চামচ, বেকিং সোডা ২ চিমটি, দুধ ২০০ এমএল, খেজুর কুচি ৫টি টপিংয়ের জন্য, ড্রাই ফ্রুটস পছন্দমতো।
যেভাবে বানাবেন
দুধ ও খেজুর একসঙ্গে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পরে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এরপর একটি পাত্রে খেজুরের মিশ্রণ ঢেলে তাতে গলানো মাখন মিলিয়ে নিতে হবে। এবারে শুকনো উপকরণ সুজি, ময়দা, চিনি, বেকিং পাউডার দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
একটি মাইক্রোওয়েভ পাত্রে মাখন মাখিয়ে তাতে মিশ্রণ ঢেলে ওপরে ড্রাই ফুড ও খেজুর কুচি দিয়ে দিন। এবার খেজুরের মিশ্রণসহ পাত্রটি হাই হিটে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ৮ মিনিট বেক করে নিলেই তৈরি খেজুরের কেক। এরপর বের করে কেটে পরিবেশন করুন।
খেজুরের হালুয়া
যা যা লাগবে
খেজুর ২ কাপ, চিনি ১ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক), ঘি ২ টেবিল চামচ, কিশমিশ ও বাদাম ২ টেবিল চামচ, গোলাপজল ১ চা চামচ, লিকুইড দুধ ১ কাপ, গুঁড়া দুধ ৩ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া সামান্য
যেভাবে বানাবেন
প্রথমে খেজুরের বিচি ফেলে দিন। এবার ফুটন্ত দুধে খেজুর ভিজিয়ে রাখুন ২ ঘণ্টা। এবার খেজুর ব্লেন্ড করে পেস্ট করে নিন। চুলায় একসঙ্গে সব উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে থাকুন, যাতে পাত্রে লেগে না যায়। হালুয়া হয়ে এলে তাতে এলাচ গুঁড়া আর গোলাপজল দিয়ে কয়েক মিনিট নেড়ে চুলায় আগুন বন্ধ করে দিন। খেজুর মিষ্টি হওয়ায় যারা মিষ্টি কম খেতে পছন্দ করেন তারা চাইলে চিনি না-ও দিতে পারেন। ড্রাই ফ্রুটস দিয়ে পরিবেশন করুন।
খেজুরের আচার
যা যা লাগবে
খেজুর ৫০০ গ্রাম, তেঁতুল ৫০০ গ্রাম, ১ চা চামচ আদা-রসুন বাটা, তেজপাতা, সামান্য শুকনো মরিচ টেলে নেওয়া, ১/২ চা চামচ পাঁচফোড়ন টেলে গুঁড়া করা, ২৫০ এমএল সরিষার তেল, আধা কাপ গুড়, ২ চা চামচ কাশ্মিরি মরিচ গুঁড়া, ৩/৪ টেবিল চামচ ভিনেগার, স্বাদমতো লবণ, পরিমাণমতো বিটলবণ।
আচারের মসলা : ১ চা চামচ পাঁচফোড়ন, ১/২ চা চামচ জিরা, সামান্য মেথি, ৪ চা চামচ মৌরি, ৪ চা চামচ ধনে, ৪ চা চামচ কালিজিরা, ২/৩টি শুকনো মরিচ কড়াইয়ে টেলে আধাভাঙা করে নিতে হবে।
যেভাবে বানাবেন
খেজুরের বিচিগুলো ফেলে ধুয়ে নিতে হবে। এবার সামান্য পানিতে ধোয়া খেজুর এবং আলাদা বাটিতে অল্প পানিতে তেঁতুল নরম হওয়ার জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর খেজুর ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তেঁতুলগুলো চটকে মাড় বের করে নিতে হবে। কড়াইয়ে তেল হালকা গরম হলে তেজপাতা, শুকনো মরিচ, পাঁচফোড়ন দিতে হবে। আদা, রসুন বাটা দিয়ে ভেজে নিতে হবে। এবার খেজুরের পেস্ট আর তেঁতুলের মাড় দিয়ে মিশিয়ে পানি শুকানো পর্যন্ত আবারও নাড়তে থাকুন।
যখন পানি টেনে যাবে তখন লবণ, বিটলবণ, মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে অনবরত নাড়তে থাকতে হবে। পানি শুকিয়ে তেল ওপরে উঠলে এ পর্যায়ে গুড় ও ভিনেগার দিয়ে দিন। নাড়তে থাকুন। ভালোমতো পেস্টটা তেলতেলে দেখতে হলে, আচারের মসলা মিশিয়ে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে খেজুরের আচার।
প্রোটিনবার বা প্রোটিন লাড্ডু
যা যা লাগবে
৫০০ গ্রাম খেজুর, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট, কিশমিশ (৫০ গ্রাম করে), ২৫ গ্রাম পেস্তাবাদাম, ২৫ গ্রাম সাদা তিল খোলা তাওয়ায় ভাজা, ঘি বা বাটার
যেভাবে বানাবেন
খেজুরের বীজ ফেলে ব্লেন্ডার বা মিক্সিতে ঘুরিয়ে নিন। এতে পানি দেবেন না। যাদের ব্লেন্ডার নেই চাইলে পাটায় পিষে নিতে পারেন। এবার কড়াইয়ে ঘি নিয়ে তাতে কুচিয়ে রাখা কাজু, কাঠবাদাম, আখরোট নাড়াচাড়া করে নিন। সবার শেষে কিশমিশ দিতে হবে নইলে পুড়ে যাবে। এবার যোগ করুন সামান্য লবণ। দিয়ে দিন বেটে নেওয়া খেজুর। সমস্ত উপকরণ ভালো করে নেড়েচেড়ে নিয়ে ঘন হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করে দিন। একটু ঠান্ডা হলেই লাড্ডু বা পছন্দসই শেপে বার তৈরি করে নিন। একটা বাটিতে ভাজা তিল রাখুন সঙ্গে কয়েকটি পেস্তা বাদাম কুচি মিলিয়ে নিন। এবার এতে গড়িয়ে নিন। ফ্রিজে অনেক দিন সংরক্ষণ করতে পারবেন।
চিয়া ডেট পুডিং
যা যা লাগবে
চিয়া সিড, ১ কাপ ঘন দুধ, ৩/৪ কাপ বীজ ছাড়া খেজুর
যেভাবে বানাবেন
চিয়া সিড ভিজিয়ে ফ্রিজে ৩০ মিনিট ঢেকে রেখে দিন। এই সময়ে চিয়া সিড ভিজে ঘন হয়ে যাবে। ১ কাপ ঘন দুধে ৩/৪ কাপ বীজ ছাড়া খেজুর ব্লেড করে নিন। ফ্রিজ থেকে বের করে এর মধ্যে কিছু বাদাম কুচি, আম ও দই মিশিয়ে নিন। অথবা অন্য যেকোনো ফল দিয়েও পরিবেশ করতে পারেন। প্রয়োজনে মধু ব্যবহার করতে পারেন। বাচ্চাদের জন্যও বেশ উপকারী আইটেম এটা। শুধু ওজন কমানো নয়, শরীর কর্মক্ষম রাখে, পুষ্টি জোগায়।