একজন বুয়েটে প্রথম, অন্যজন মেডিকেলে দ্বিতীয়
সাহিদা আক্তার
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫ ১১:২২ এএম
তোফায়েল আহমেদ ও সানজিদ অপূর্ব বিন সিরাজ
তাদের দুজনের পড়াশোনা একই কলেজে। একই শ্রেণিকক্ষে পাশাপাশি বসেছেন দুই বছর। একসঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন চট্টগ্রামে। উচ্চ মাধ্যমিকে দুজনই পেয়েছেন জিপিএ-৫। এরপর ভর্তি পরীক্ষায় একজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এ প্রথম, অন্যজন মেডিকেলে দ্বিতীয় হয়েছেন।
বুয়েটে প্রথম হয়েছেন তোফায়েল আহমেদ। আর মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছেন সানজিদ অপূর্ব বিন সিরাজ। সানজিদ ভর্তি হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। এর আগে দুজনই পড়েছেন চট্টগ্রাম কলেজে। কলেজের প্রথম বর্ষ থেকেই তাদের বন্ধুত্ব। শুরু থেকে একসঙ্গে থেকেছেন। এখন উচ্চশিক্ষার জন্য আলাদা হলেন।
প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা
সানজিদের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের গারাংগিয়া গ্রামে। সানজিদ জানালেন, ভর্তি পরীক্ষার আগে গড়ে মাত্র ৫ ঘণ্টা ঘুমাতেন। বাকি সময় পড়ার মধ্যে ডুবে থাকতেন। ইংরেজি পড়তে গিয়ে বেগ পেতে হতো। ভয় ছিল ইংরেজিতে নম্বর তুলতে পারবেন কি না। শেষ পর্যন্ত ভালো ফল করায় সবাই খুশি। ১৯ জানুয়ারি মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ফল পাওয়ার পর তার মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান তার দুই ভাই।
সানজিদ বলেন, ‘কলেজে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। পত্রপত্রিকা পড়ার অভ্যাস রয়েছে। পত্রিকায় চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। এরপর ভর্তি পরীক্ষার জন্য দুটি কোচিংয়ে ভর্তি হই। নিয়মিত ক্লাস শুরু করি। নাওয়াখাওয়া ভুলে শুধু পড়েছি।’
এবার আসা যাক তোফায়েলের গল্পে। তার বাড়ি কুমিল্লার পূর্ব চান্দিপুরে। তোফায়েল বললেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হব ভাবিনি। কিন্তু শুরুর দিকে থাকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমি প্রস্তুতি নিয়েছি পরিকল্পনামাফিক। প্রতিদিন ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করতাম। সে অনুযায়ী পড়তাম। সময়ের দিকে তাকাইনি। কখনও ১০ ঘণ্টাও লাগত পড়া শেষ করতে। আর প্রকৌশলবিদ্যার দিকে নজর ছিল। তাই গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এসব বিষয় অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে পড়েছি। এখন কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হব। ভবিষ্যতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করব।’
সানজিদের মতো তোফায়েলও কলেজের প্রথম বর্ষ থেকে প্রস্তুতি নিতে থাকেন। মূলত কলেজে ওঠার পরই বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন তিনি। এজন্য কলেজের প্রাক্তন যারা বুয়েটে পড়ছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলেন। পরামর্শ নেন। তিনি বলেন, ‘কলেজে ওঠার পর বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন দেখা শুরু। আমার কলেজের (চট্টগ্রাম কলেজ) অনেক বড় ভাই বুয়েটে পড়েন। তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছি। তাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতাম।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রতি আমার অনেক আগ্রহ। আমি এ বিষয়টার গভীরে যেতে চাই। এ কারণে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ব। এআই নিয়ে কাজ করব। আর ক্লাবে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে এখনও ভাবিনি। নিশ্চয় ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্ন ক্লাবের বিষয়ে খোঁজ নেব।’