× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

টিপস

রমজানে সুস্থতা

অরুণিতা ঘোষাল

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:২১ পিএম

পুষ্টিবিদ অরুণিতা ঘোষাল

পুষ্টিবিদ অরুণিতা ঘোষাল

শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। সিয়াম সাধনার এ মাসে আপনার স্বাস্থ্য যেন ইবাদতের পথে বিঘ্ন সৃষ্টি না করে সেজন্য মেনে চলতে হবে নিয়ন্ত্রিত, পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস। রোজায় কীভাবে সুস্থ থাকবেন সে বিষয়ে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ অরুণিতা ঘোষাল

স্বাভাবিক সময়ে সারা দিনে বারবার খাদ্য এবং পানীয় গ্রহণের মাধ্যমে আমরা শরীরের চাহিদা পূরণ করি, রোজার সময় মাত্র তিনটি মূল খাবারের মাধ্যমে সে চাহিদা পূরণ করা হয়। তাই ইফতার, রাতের খাবার এবং সাহরি, কোনোটা বাদ দিলে বা সেই সময়ে ভুল খাদ্য নির্বাচন-পরবর্তী সারা দিন রোজা রাখার সময় এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস, কিডনি রোগে ভুগছেন, গর্ভবতী বা উঠতি বয়সের কিশোর-কিশোরী, তাদের রোজায় খাবারের ব্যপারে আরও যত্নশীল হতে হবে।

ইফতারিতে যা খেতে পারেন

দীর্ঘ সময় রোজা রাখার পর ইফতার দিয়ে শুরু হয় খাদ্যগ্রহণ। বিশুদ্ধ এক গ্লাস পানি এবং একটি বা দুটি খেজুর রোজা ভাঙার সর্বোত্তম মাধ্যম সবার জন্য। সুন্নতের পাশাপাশি পানিশূন্যতা রোধ এবং তাৎক্ষণিক গ্লুকোজ সরবরাহ করে পানি এবং খেজুর শরীর উৎফুল্ল করে তুলবে। ডায়াবেটিস রোগীরা সারা দিন পর একটি খেজুর খেতে অসুবিধা নেই। এরপর মূল ইফতারের জন্য বাইরের ভাজাপোড়া বাদ দিয়ে বেছে নিন সহজপাচ্য বাড়ির খাবার। দই-চিড়া, কলা, দুধ-মুড়ি, ছোলা সেদ্ধ-মুড়ি বা সাধারণ ভাত, খিচুড়ি সঙ্গে সবজি, মাছ-মাংস। পানীয় হিসেবে চিয়া বা তোকমা দেওয়া শরবত রাখা যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনি ছাড়া ইসপগুল দেওয়া শরবত উপকারী। ইফতারের সময় ছাড়াও সাহরিতে ইসপগুল রাখতে পারেন ডায়াবেটিস রোগীরা। গর্ভবতী মায়েরা লাচ্ছি, ফলের শরবত, দই-ফলের স্মুদি বেছে নিতে পারেন।

রাতের খাবার

ইফতারের পর তারাবি শেষ করে অনেকেই রাতের খাবারটা আর খেতে চান না। একবারে সাহরিতে খান। সুস্থ থাকতে এবং রাতের ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে রাতের খাবারের বিকল্প নেই। রাতের খাবারে রাখুন ভাত বা রুটি, সবজি, প্রোটিন হিসেবে মাছ-মাংস বা ডিম। সঙ্গে এক গ্লাস দুধ বা দই। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন অবশ্যই একটি ডিম এবং এক গ্লাস দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খেতে হবে। তারা রাতের খাবারের সঙ্গে এ দুটি খাবার যোগ করে নিতে পারেন। দুধ খেতে না পারলে দই বা ছানা অবশ্যই রাখবেন এক বেলায়। ডায়াবেটিস রোগীরা লাল আটার রুটির সঙ্গে দুধ রাখতে পারেন রাতের খাবারে। কিশোর-কিশোরীদের রাতের খাবারে খিচুড়ি সঙ্গে সামান্য লেবুর রস, মাংস বা বাড়িতে চাল-ডাল-মাংস মিলিয়ে হালিম করে দিতে পারেন। রাতে সবার জন্যই একটি সহজ, হালকা এবং উপাদেয় খাবার হলো মাংস-সবজি এবং সঙ্গে কিছুটা ওটস বা চাল মিশিয়ে বানানো স্যুপ।

সেহরির খাবার

এবার আসি সেহরির খাবারে। অনেকেই সেহরির খাবার নিয়ে অবহেলা করেন। মনে রাখবেন, সেহরিতে কী খাচ্ছেন তার ওপর কিন্তু নির্ভর করছে আপনার সারা দিনের শরীর, মন-মেজাজ। এ সময়ে খালি পেটে থাকা বা অতিরিক্ত খাওয়া, ভুল খাবার বেছে নেওয়ার জন্য সারা দিন শারীরিক অস্বস্তি, গ্যাস, মাথাব্যথা, মেজাজ খিটখিটে থাকার মতো অসুবিধা বোধ করতে পারেন। সেহরিতে ভাত-রুটি-ওটস যেটাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন সেই কার্বোহাইড্রেট বেছে নিন। সঙ্গে সবজি, মাছ/মাংস থাকবে। এর সঙ্গে যারা ইফতার বা রাতের খাবারে দুধ খান না, এ সময়ে কিছুটা ইসপগুল দিয়ে এক কাপ দুধ খেতে পারেন। যারা দুধ খান না, তারা দই রাখতে পারেন। এ সময়ে গর্ভবতী মা এবং ডায়াবেটিস রোগী উভয়েই একটি খেজুর খেতে পারেন। এ ধরনের খাবার অনেকটা সময় পেটে থাকে এবং গ্যাস, অ্যাসিডিটির আশঙ্কাও কমায়।

পরিমিত পরিমাণে সুষম খাবারের পাশাপাশি সবারই ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি এবং পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবার রাখতে হবে পানিশূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে। রোজার সময় বেসন, ডাল জাতীয় দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন গ্রহণ বেড়ে যায়। তাই চেষ্টা করবেন ডাল জাতীয় খাবারগুলো অদলবদল করে খেতে, ছোলা থাকলে সেদিন পেঁয়াজু বা বেসনের তৈরি কিছু রাখবেন না, যেদিন বাসায় হালিম করবেন সেদিন ছোলা রাখবেন না। এভাবে ভারসাম্য রাখতে হবে নয়তো ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়া, কিডনি রোগীর অবস্থার অবনতি হতে পারে।

বাচ্চাদের জন্য স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি ডিম-দুধের পুডিং, পায়েস, শাকসবজির পাকোড়া, বাসায় বানানো হালিম, খিচুড়ি, চিয়া-তোকমা দেওয়া শরবত এমন সব মুখরোচক কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাবার রাখলে বাচ্চারাও রোজায় খাওয়াদাওয়া নিয়ে খুশি থাকবে এবং তাদের পুষ্টি চাহিদাও মিটবে।

যারা কিডনি, ডায়াবেটিস রোগী, গর্ভাবস্থায় আছেন অবশ্যই রোজা শুরুর আগে নিজ নিজ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেবেন রোজা রাখতে পারবেন কি না এবং ওষুধের ডোজ কেমন হবে।

এ এক মাস নিয়ন্ত্রিত, সুষম খাদ্যাভ্যাস যেমন আপনার মেটাবলিক সিস্টেম রিস্টার্ট দিতে পারে, তেমনই বাইরের খাবার, অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, খাবার স্কিপ করা এসব ওজন বাড়ানো, স্কিনের ক্ষতিসহ নানা রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে। পবিত্র এ মাসে তাই সবাই যেন নিজের খাদ্যাভ্যাস নিয়েও সংযম ধারণ করি এবং পরিবারের সবার সুষম পুষ্টি নিশ্চিত করতে উৎসাহ জানাই।

  • রেজিস্টার্ড অ্যাসোসিয়েট নিউট্রিশনিস্ট, এএফএন, ইউকে। এমএস হিউম্যান নিউট্রিশন, ইউকে
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা