× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভাষাপ্রেমের গল্প

জারাদ ত্রিস্তান

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:১৪ পিএম

প্রচ্ছদটি এঁকেছে অর্নিলা ভৌমিক। সে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী

প্রচ্ছদটি এঁকেছে অর্নিলা ভৌমিক। সে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী

বর্ণ এবং শ্রেয়ান খুব খুশি। কারণ, নানাভাই আজ বাসায় এসেছেন। মামা ও মামিও সঙ্গে। মামা আমেরিকা থেকে এই প্রথম মামিকে নিয়ে দেশে এসেছেন। বর্ণ ক্লাস ওয়ানে পড়ে। শ্রেয়ান পড়ে ফোরে। নানাভাই চিকিৎসা করাতেই ঢাকা আসছেন। মামা ও মামি এসেছেন তাকে দেখতে। নানাভাই গল্প বলতে ভালোবাসেন। তাই তিনি এলে শ্রেয়ানের বন্ধুরা গল্প শুনতে চলে আসে। আজও তেমন ডেভিড, রাধিকা, ভিকি এবং তন্ময় এসেছে। নানাভাই দেখে বললেন ‘কী হে, বিচ্ছু বাহিনী চলে এসেছো?’

‘হ্যাঁ, আপনার সঙ্গে দেখা করতে চলে এসেছি।’ বলে উঠল রাধিকা।

নানাভাই হাসিমুখে বলে উঠলেন, ‘খুবই ভালো আছি। তা, কী নিয়ে কথা হচ্ছিল?’ জিজ্ঞেস করলেন।

‘একুশে ফেব্রুয়ারির র‍্যালিতে আন্টিও আমাদের সঙ্গে যাবেন, এটা নিয়েই কথা হচ্ছিল।’ বলল ভিকি।

‘একুশে ফেব্রুয়ারিতে র‌্যালি কেন?’ প্রশ্ন করে উঠল বর্ণ।

‘একুশে ফেব্রুয়ারি তো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, এ কারণেই র‌্যালি হবে।’ একসঙ্গে বলে উঠল তন্ময় আর ডেভিড।

‘কী দিবস?’ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল বর্ণ।

‘কেন তুমি জানো না?’ বলে উঠলেন নানাভাই।

‘কেন?’ হতভম্ব বর্ণ জিজ্ঞেস করল।

‘কারণ, একুশে ফেব্রুয়ারি অনেক নাম না জানা ব্যক্তি মাতৃভাষা বাংলার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।’ বললেন নানাভাই।

‘বিষয়টা একটু খুলে বলো নানাভাই?’ এবার বলল, শ্রেয়ান।

‘শোনো তবে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হয়। জন্ম নেয় দুটি দেশ। ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তানের আবার দুটি ভাগ পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। পূর্ব বাংলায় থাকত বাংলাভাষী মানুষ। পশ্চিম পাকিস্তান সিদ্ধান্ত নেয় বাংলার রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। কিন্তু বাঙালিরা কেন তা মেনে নেবে! পূর্ব বাংলায় বাংলাভাষীর সংখ্যা ছিল বেশি। তারা রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবি জানায়...’

নানাভাই শেষ করার আগেই বর্ণ প্রশ্ন করে ওঠেÑ ‘একটা ভাষার জন্য এত দাবি কেন?’ 

নানাভাই বললেন, ‘বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। মাতৃভাষা মানে মানুষ যে ভাষা মা বা কাছের লোকজনের কাছ থেকে শেখে। মাতৃভাষা প্রাণের ভাষা। বাঙালির পূর্বপুরুষরাও এ ভাষায় কথা বলত। তারাও এ ভাষায় পরিপূর্ণভাবে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে।’

‘বুঝতে পেরেছি নানাভাই, তুমি তোমার গল্প চালিয়ে যাও।’ নানাভাই বলা শেষ করলেন। ‘আচ্ছা এটাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বলে কেন?’ আবার প্রশ্ন বর্ণের। ‘ভাষার জন্য এমন আত্মদান সারা বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায়নি। সারা বিশ্বের মানুষ বাঙালির মাতৃভাষাপ্রেম দেখে অবাক হয়ে যায়। একসময় কানাডাপ্রবাসী মাতৃভাষাপ্রেমী কয়েকজন ব্যক্তি জাতিসংঘের কাছে এ দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস করে তোলার জন্য আবেদন জানান। জাতিসংঘ বিষয়টি খতিয়ে দেখে এর মর্ম বুঝতে পারে এবং ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিশ্বের প্রায় সব দেশ এ দিনটি নিজ নিজ মতো করে পালন করে।’

‘বাঃ কত কিছু জানতে পারলাম তোমার থেকে, কিন্তু আমরা এ আন্দোলন করে কী পেলাম?’

‘আর জানো তো, বাংলা এখন পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম মাতৃভাষা, প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। আর আফ্রিকার ছোট্ট একটি স্বাধীন দেশ সিয়েরালিওন বাংলা ভাষাকে তাদের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।’ বলে উঠল জর্জিয়া।

পঞ্চম শ্রেণি, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা