তৌকির মুহাইমিন
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:০৯ পিএম
প্রচ্ছদটি এঁকেছে অর্নিলা ভৌমিক। সে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী
আমার নাম রাশেদ। গতকাল আমার বন্ধু তার ছোটবেলার বিভিন্ন গল্প বলছিল। তখন আমি জানতে চাইলাম একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে কোনো গল্প আছে কি না। রাশেদ একজন লেখক, সে তার বন্ধু রাজুর জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে কোনো ঘটনা থাকলে তা লিখতে চায়। তখন রাজু কিছুক্ষণ ভেবে বলল, আছে। আমি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি, তখন ছিল ২০০০ সাল।
ওই বছর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে আমি দাদির কাছে জানতে চাইলাম একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে কী কী ফুল দেওয়া যেতে পারে। তখন দাদি পূর্ণিমার চাঁদের দিকে তাকিয়ে আনমনে হাসতে লাগলেন। আর বললেন, আমার আর তোমার দাদার তখন বিয়ের পর কেবল নতুন সংসার সাজাচ্ছিলাম। তোমার দাদা একটি ছোট ব্যবসা করতেন আর আমি ছিলাম গৃহিণী। এর মধ্যেই খবর এলো জিন্নাহ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চান। এ দেশের ছাত্র-জনতাসহ সাধারণ মানুষ এটা মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার জন্য মিছিল করতে চায়। তোমার দাদাও ১৪৪ ধারা ভেঙে সে মিছিলে যায়। বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের জন্য। সালাম, বরকত, রফিকের মতো তার শরীরেও গুলি লাগে। প্রথমে তার পায়ে গুলি লাগে। তার পরেও তোমার দাদা মিছিল চালিয়ে যায়। তারপর তার পেটে আরেকটা গুলি লাগলে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। তখন এক ঠেলাগাড়িওয়ালা তার গাড়িতে করে তোমার দাদাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং সৌভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়। কিন্তু অনেকে ভাষার জন্য শহীদ হন এবং আমরা ভাষার অধিকার পাই। বাংলা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। এই শুনে রাজু খুব গর্ববোধ করে। একুশে ফেব্রুয়ারি খুব সকালে রাজু তার বাগানের সবচেয়ে সুন্দর ফুলগুলো নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায় আর গর্বভরে বলে, এখানে মিশে আছে আমার দাদার রক্ত।
পঞ্চম শ্রেণি, বরিশাল জিলা স্কুল