নাকিব নিজাম
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:০২ এএম
মায়া দ্বীপ। ছবি : সংগৃহীত
কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই প্রিয়জনকে সময় দিতে পারেন না ঠিকমতো। এতে হয়তো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর হাজারো অভিযোগ আপনাকে নিয়ে। আর মাত্র কয়েক দিন পরই ভ্যালেন্টাইন ডে। তাই প্রিয়জনের অভিমান ভাঙাতে আজই তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ঘুরে আসুন ঢাকার আশপাশের দর্শনীয় ছয়টি স্পট থেকে।
গোলাপ গ্রাম
ঢাকার কাছাকাছি ভ্রমণের আদর্শ এক স্থান হলো গোলাপ গ্রাম। একটু মুক্ত হাওয়া আর স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার অদূরে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের গোলাপ গ্রামে। শীতকালই হলো গোলাপ গ্রাম ভ্রমণের সেরা সময়। বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, কমলাপুর গ্রামজুড়ে আছে গোলাপের রাজ্য। যতদূর চোখ যায় দেখতে পাবেন গোলাপ আর গোলাপ। তুরাগ নদের তীরে মিরপুর বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশে অবস্থিত গোলাপ গ্রাম। মিরপুরের দিয়াবাড়ি থেকে ট্রলারে উঠলে ৩০ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন গোলাপের স্বর্গরাজ্যে। বর্তমানে শহরবাসীর কাছে ভ্রমণের জন্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই গোলাপ গ্রাম। খুব অল্প খরচেই ঘুরে আসা যায় এই গ্রাম থেকে। গ্রামের আঁকাবাঁকা সরুপথের পাশঘেঁষে অসংখ্য গোলাপের বাগান দেখতে পাবেন সেখানে।
ঢাকার খুব কাছেই সাভারে তুরাগ তীরে সাদুল্লাপুর। ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকেই প্রথমে যেতে হবে গাবতলী। এর পর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে যেকোনো বাসে সাভার বাসস্ট্যান্ডের ওভারব্রিজের নিচে নেমে ওভারব্রিজ পার হয়ে ব্যাটারিচালিত হ্যালো বাইকে করে যেতে পারেন স্বপ্নের মতো সুন্দর গোলাপ গ্রামে। এ ছাড়াও মিরপুর শাহআলী মাজারের সামনে থেকে লেগুনায় যেতে পারেন আকরান বাজার। ভাড়া পড়বে ৩৫ টাকা। সেখান থেকে জনপ্রতি ২০ টাকা অটো ভাড়ায় সাদুল্লাহপুর গ্রামে যেতে পারবেন।
নিজস্ব পরিবহনে যেতে চাইলে এই পথ দিয়েই যাওয়া যাবে। সাভার থেকে যেতে চাইলে সাভার চৌরঙ্গী মার্কেটের সামনে থেকে যেতে হবে আকরান বাজার। সেখান থেকে অটোতে সাদুল্লাহপুর গ্রাম। যারা সাঁতার জানেন না তারা নৌকাপথে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকবেন। আর যারা নৌপথে ভ্রমণ
করবেন তারা সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ফেরার চেষ্টা করবেন। গ্রামে ভালো খাবারের হোটেল না থাকায় আপনি খাবার নিয়ে যেতে পারেন। গ্রামের মানুষ বিরক্ত বা তাদের অসুবিধা হয়Ñ এমন কাজ করবেন না।
আড়াইহাজার মেঘনার চর
ঢাকার কাছে আড়াইহাজার চর এলাকা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অল্প সময়ের মধ্যে। বিস্তীর্ণ এলাকায় এই রকম মনোরম পরিবেশ আর কোথাও পাবেন না এই যান্ত্রিক নগরীর আশপাশে। সারা দিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন এখানে। খাওয়া-দাওয়া এবং ট্রলারের খরচ মিলিয়ে মোটামুটি ৩-৪ জনের জন্য ৭০০-১০০০ টাকা খরচ হতে পারে। যাওয়ার জন্য প্রথমে গুলিস্তান থেকে যেতে হবে মদনপুর। সেখান থেকে আড়াইহাজার যাবেন।
নরসিংদীর জমিদারবাড়ি
জমিদারবাড়ি ঘুরতে যাওয়াটাও বেশ জৌলুসের! এ বাড়ির বাইরের দিকে তাকালেই চোখ জুড়িয়ে যায়। নিখুঁত সৌন্দর্যের এই ভবনগুলো শত বছর পরও ঐতিহ্যপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের মুগ্ধ করে তোলে। উকিলবাড়ি নামে পরিচিত নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা বাজার থেকে মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত লক্ষণ সাহার জমিদারবাড়ি।
মায়া দ্বীপ
নারায়ণগঞ্জ জেলার বারদী ইউনিয়নের মায়া দ্বীপ হতে পারে বিশেষ দিনের বিকাল কাটানোর দারুণ এক স্থান। মায়া দ্বীপ হলো মেঘনা নদীর বুকে ভেসে ওঠা একটি দারুণ সুন্দর চরের নাম। ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী বারদী ইউনিয়নের অন্তর্গত নুনেরটেক গ্রামেই মায়া দ্বীপের অবস্থান। এ গ্রাম মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন।
জিন্দা পার্ক
১৫০ একর জায়গা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে জিন্দা পার্ক। ১০ হাজারের বেশি গাছ, ৫টি জলাধার ও অসংখ্য পাখি রয়েছে এ পার্কে। এ ছাড়া রয়েছে ক্যান্টিন, লাইব্রেরি, চিড়িয়াখানা। এ ছাড়াও রয়েছে ৮টি সুসজ্জিত নৌবহর। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে এ পার্ক। প্রবেশ মূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০০ টাকা ও ছোটদের ৫০ টাকা। পার্কিং চার্জ ৫০ টাকা।