× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মেডিকেলে চান্স পেয়েও অনিশ্চয়তায় আরিফা

শেখ সোহেল

প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:০০ এএম

আরিফার স্বপ্নের পথে এগিয়ে চলার বাধা দারিদ্র্য। প্রবা ফটো

আরিফার স্বপ্নের পথে এগিয়ে চলার বাধা দারিদ্র্য। প্রবা ফটো

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের ভ্যানচালক শেখ আসাদুজ্জামান ও হামিমা আক্তারের বড় মেয়ে  আরিফা আক্তার। অদম্য মেধার কারণেই পারিবারিক প্রতিকূলতার মধ্যেও পড়াশোনায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। চলতি বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেলে ভর্তির চান্স পান।

বাবা ভ্যানচালক। মা সেলাই মেশিন চালিয়ে কোনোমতে চালান সংসার। এনজিওর ঋণ ও মায়ের সামান্য গহনা বন্ধক রেখে পড়ালেখার খরচ বহন করেন। সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় বাবা-মাসহ পরিবারের সবার মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে।

আরিফা আক্তার বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। আমার বাবা একজন ভ্যানচালক, মা সেলাই মেশিনে কাজ করেন। আমরা দুই বোন। আমি বড়। ছোট বোন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। আমার বাবা-মা খেয়ে না খেয়ে আমাকে পড়ালেখা করাচ্ছেন। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৯৭১তম হয়ে শেরেবাংলা মেডিকেলে চান্স পেলেও বর্তমানে আর্থিক অভাবে ভর্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক হয়ে মা-বাবার দুঃখ ঘোচাতে চাই। বিনামূল্যে গরিব মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে চাই। কিন্তু টাকার অভাবে আমার সেই স্বপ্নপূরণ হবে কি না জানি না। এখন আমার পড়াশোনার জন্য সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি সবার কাছে সাহায্যের আবেদন জানাই।’

পরিবারের সঙ্গে আরিফা

শেখ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমি নিজের নামটাও লেখতে পারি না। যখন আমার এ মেয়ে তার মায়ের গর্ভে তখন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একটা অনুষ্ঠানে যাই; সেখানে সকলে স্বাক্ষর দিতে পারলেও আমি স্বাক্ষর দিতে পারি নাই। তখন থেকেই আমি স্বপ্ন দেখেছি আমার যত কষ্টই হোক না কেন আমি আমার সন্তান ছেলে বা মেয়ে হোক ডাক্তার বানাব। আল্লাহ আমার সেই স্বপ্ন পূর্ণ করেছে। আমার চাইতে কেউ সুখী মানুষ আর নাই। আমার সে আশা আজ পূরণ হয়েছে। তবে এখন আশঙ্কায় আছি কীভাবে মেয়ের পড়াশুনার খরচ জোগাব। তার পরও আমি আমার মেয়েকে বলেছি, তুমি যদি ডাক্তার হতে পারো অসহায় গরিব মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা করবে। 

তিনি আরও বলেন, প্রচণ্ড অর্থকষ্টে থাকলেও আমি ও আমার স্ত্রী কখনও দুই মেয়ের পড়াশুনা বন্ধ করি নাই। আমি শহরের পিটিআই সড়কের একটি ভাড়া বাসায় থাকি। আমার দুইটা মেয়ে; ছোট মেয়েটি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। এনজিওর ঋণ ও গহনা বন্ধক রাখা ঋণ পরিশোধ করে ভর্তি হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণে সমাজের বিত্তবান ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

আরিফার মা হামিমা আক্তার বলেন, ‘অনেক কষ্টে অনেকটা সংগ্রাম করে আমরা আরিফার লেখাপড়া চালিয়েছি। আমার সোনার গহনা বন্ধক রেখেও ওদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছি। শুনেছি মেডিকেলে পড়তে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমাদের তো সেই সঙ্গতি নাই। আমি বাড়িতে বসে সেলাই মেশিনে দর্জির কাজ করি। ওর বাবা লেখাপড়া না জানলেও হাড়ভাঙ্গা কষ্ট করে ভ্যান চালিয়ে আমার সংসার চালাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। 

হামিমা আরও বলেন, আমার স্বামী ভ্যান চালিয়ে কখনও ২০০ টাকা, ৩০০ টাকা ইনকাম করে আমাদের সংসার চালায়। যা টাকা ইনকাম করে বাসা ভাড়া দিতে আর মেয়েদের পড়াশোনা করাতে গিয়ে আমাদের না খেয়েও থাকতে হয়। খুব কষ্ট তার পরেও আল্লাহ আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকাইছেন। আমাদের খুব ইচ্ছা ছিল মেয়ে ডাক্তার হবে। আল্লাহ আমার সে আশা পূরণ করেছে। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টাও করব দুই মেয়ের জন্য।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা