ওয়াসি তানজীম
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:২৩ এএম
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪১ এএম
আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শীতে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে শুরু করে। ফলে বাড়ে সর্দি-কাশিসহ নানা রোগের ঝুঁকি। সুস্থ থাকতে এ সময় শীতকালীন ফল ও শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এতে শরীরে যাবতীয় পুষ্টিগুণও মেলে আবার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে।
তবে শীতে কোন
কোন ফল খাওয়া জরুরি, তা হয়তো অনেকেরই অজানা। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার
(ইউএসডিএ) অনুসারে, সাইট্রাস ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। আর এ ভিটামিন শরীরের রোগপ্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ কারণে শীতে পর্যাপ্ত ভিটামিন সিযুক্ত ফল খাওয়া জরুরি।
মেডিলাইন প্লাসের
তথ্যমতে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেই শীতকালীন সর্দি ও অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ে। ভিটামিন
সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিভাইরাল। এ ভিটামিন কিন্তু প্রতিদিনই গ্রহণ করতে হবে। কারণ
ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয় হওয়ায় প্রতিদিনেরটা শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
হার্ভার্ড হেলথ
পাবলিশিংয়ের তথ্যমতে, ভিটামিন সি শরীরকে শ্বেত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া
এ ভিটামিন ঠান্ডা লাগা থেকে রক্ষা করতে পারে। মেডিলাইন প্লাস অনুসারে, ভিটামিন সির
পুষ্টিগুণ অসুস্থতার গুরুতর প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।
ইউএসডিএ অনুসারে,
সাইট্রাস ফলের মধ্যে আনারস হলো ভিটামিন সির একটি দুর্দান্ত উৎস। ১ কাপ আনারসে থাকে
৭৮.৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। একটি পর্যালোচনা অনুসারে, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এ ফলের অন্যান্য
স্বাস্থ্যসুবিধাও আছে। এতে রোগপ্রতিরোধকারী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
বৈশিষ্ট্য আছে; যা স্নায়ু ও পাচনতন্ত্রের উপকার করে।
কমলা ও লেবুজাতীয়
ফল
শীতকালে কমলা,
মাল্টা এবং লেবু প্রচুর পাওয়া যায়। এ ফলগুলো ভিটামিন সির ভালো উৎস, যা শরীরে রোগপ্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং ঠান্ডা ও ফ্লু
প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
আমলকী
আমলকী শীতের একটি
অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফল। এটি ভিটামিন সির পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ, যা দেহ
থেকে টকসিন দূর করে। এটি লিভার পরিষ্কার রাখতে, ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং হজমশক্তি বাড়াতে
সহায়ক।
আপেল
প্রতিদিন একটি
আপেল খেলে ডাক্তারের প্রয়োজন হয় নাÑ এ কথাটি খুবই প্রচলিত। আপেল ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে
ভরপুর। শীতে এটি খেলে হজম ভালো হয় এবং শরীর উষ্ণ থাকে। এ ছাড়া এটি ত্বকের আর্দ্রতা
বজায় রাখে।
পেয়ারা
পেয়ারা ভিটামিন
সি, পটাশিয়াম এবং ফাইবারের দারুণ উৎস। এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শীতকালে সর্দি-কাশির
ঝুঁকি কমায়। পেয়ারায় কম ক্যালোরি থাকায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।
ডালিম
ডালিম রক্তস্বল্পতা
দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক উজ্জ্বল করে এবং রোগপ্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ায়। ডালিম রক্ত পরিশোধনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কলা
যদিও কলা সারা
বছরই পাওয়া যায়, শীতে এটি বিশেষ উপকারী। এতে থাকা পটাশিয়াম শরীরের শক্তি বাড়ায় এবং
হজম ভালো রাখে। এ ছাড়া কলা ঠান্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বেরিজাতীয়
ফল
স্ট্রবেরি ও ব্লুবেরি
শীতকালে পাওয়া যায় এবং এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এগুলো শরীরের টকসিন দূর করে
এবং ত্বক মসৃণ রাখে।
শীতকালে সিজনাল
ফল খেলে শরীর উষ্ণ ও সুস্থ থাকে। এসব ফল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ত্বক,
হজম এবং রক্তস্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শীতের ফল অন্তর্ভুক্ত
করা অত্যন্ত জরুরি।