সন্তান
ওয়াসি তানজীম
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:২৬ এএম
শীতকালে শিশুরা কমবেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। কেননা ঠান্ডা আবহাওয়া এবং শুষ্ক বাতাস শিশুদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই শিশুদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি।
শীতের এ সময়ে শিশুদের ত্বক, শ্বাসযন্ত্র এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার প্রতি খেয়াল রাখার পাশাপাশি সঠিক পোশাক, খাদ্যাভ্যাস এবং ঘরের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।
ত্বকের যত্ন
নিতে হবে নিয়মিত
শীতকালে শিশুর
ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি, কারণ ঠান্ডা এবং শুষ্ক বাতাস তাদের ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ
করে তোলে। শিশুর ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে গোসলের পরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে
হবে। এ সময় সাবানের ব্যবহার সীমিত রাখা উচিত। এমনিতেও শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি
মৃদু সাবান ব্যবহার করা ভালো। ঠোঁটফাটা থেকে রক্ষা করতে শিশুর ঠোঁটে লিপ বাম ব্যবহার
করতে পারেন। এ ছাড়া গোসলের সময় খুব গরম পানি এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি ত্বকের প্রাকৃতিক
তেল নষ্ট করতে পারে।
নির্বাচন করুন
সঠিক পোশাক
সঠিক পোশাক নির্বাচন
শীতে শিশুর সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্তরযুক্ত পোশাক শিশুর দেহকে তাপ
ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে তাপমাত্রা অনুযায়ী পোশাক পরিবর্তন করাও সহজ হয়। শিশুর
মাথা ও পা গরম রাখতে টুপি ও মোজা অপরিহার্য। ত্বকের সংস্পর্শে আসা পোশাক অবশ্যই নরম
এবং আরামদায়ক হওয়া উচিত, যাতে কোনোরকম চুলকানি বা অস্বস্তি না হয়।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস
জরুরি
শিশুর রোগপ্রতিরোধ
ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস নিশ্চিত করা জরুরি। শীতকালে স্যুপ, খিচুড়ি,
গরম দুধ ইত্যাদি উষ্ণ খাবার শিশুকে আরাম দেয় এবং শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন
সি-সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলা, আমলকী এবং সবুজ শাকসবজি তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
সাহায্য করে। শীতকালে শিশুদের কম পানি পান করার প্রবণতা থাকে, তাই তাদের পর্যাপ্ত পানি
পান করানোর দিকে নজর দিতে হবে।
সাধারণ সতর্কতা
ঠান্ডা এবং ফ্লু
থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য কিছু সাধারণ সতর্কতা মেনে চলা উচিত। নিয়মিত হাত ধোয়ার
অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে খাওয়ার আগে এবং বাইরে থেকে আসার পরে। ঘরের
পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ধুলাবালিমুক্ত রাখতে হবে। শিশুদের ভিড় এড়িয়ে চলা
ভালো, কারণ এ সময়ে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। সময়মতো ফ্লু ভ্যাকসিন দেওয়া হলে শিশুরা
অনেকাংশে সুরক্ষিত থাকে।
ঘরের তাপমাত্রার
দিকে লক্ষ রাখুন
শীতকালে ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক রাখা জরুরি। ঘরের ভেতরে খুব বেশি ঠান্ডা এড়াতে হিটার ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তাপমাত্রা যেন অতিরিক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা বজায় রাখতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে, যা শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য উপকারী। ঘরের পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করতে দরজা-জানালা সাময়িক খুলে দেওয়া যেতে পারে।
এ ছাড়া শিশুর
আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করাও শীতে গুরুত্বপূর্ণ। উষ্ণ এবং নরম বিছানা শিশুর আরামের জন্য
অপরিহার্য। হালকা গরম কম্বল ব্যবহার করলে শিশু আরামে ঘুমাতে পারবে। ঠান্ডা রাতে শিশুর
পাশেই থাকুন, যাতে সে নিরাপদ এবং আরামদায়ক বোধ করে।
সঠিক যত্ন শিশুর
শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে এবং এ ঋতু শিশুর জন্য আনন্দদায়ক হবে।