সালতামামি ২০২৪
গোলাম কিবরিয়া
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৫১ পিএম
দেশজুড়ে এমন গ্রাফিতিতে ফুটে উঠেছে জুলাই অভ্যুথানের চিত্র
কালের আবর্তে চলে যাচ্ছে আরও একটি বছর। নতুন বছরে পা রাখছে পৃথিবী। ২০২৪ সাল দেশের তরুণদের জন্য ছিল বেশ কিছু অর্জন ও সাফল্যের। বছরজুড়ে তারুণ্যের এগিয়ে যাওয়ার উল্লেখযোগ্য গল্প তুলে ধরেছেন গোলাম কিবরিয়া
জেন-জি : সময় বদলে দেওয়া প্রজন্ম
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের কোটা সংস্কারের জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সরকারের দমনপীড়নের মুখে তা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে বিক্ষোভ দমনে সরকারের সহিংস ভূমিকার কারণে কয়েকশ নিরস্ত্র নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে হাজারো ছাত্র-জনতা। এক মাসের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের। তারুণ্যের বাংলাদেশে বছরের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল এটিই।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় ৫ জুন। মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। ঢাকায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয় এবং শহীদ মিনারে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে সংগঠিত হয় এবং রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে।
পরের কয়েকদিন দেশের অন্যান্য অংশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে মিছিল-সমাবেশ করে। ৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ৫ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেন। পরদিন ৬ জুলাই শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দেয়। এভাবেই জুলাইজুড়ে চলে বিক্ষোভ, সহিংসতা, অবরোধ। ৫ আগস্ট সোমবার পর্যন্ত ব্যাপক সহিংসতায় অনেক মানুষের মৃত্যু হয় এবং ওইদিনই ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান।
এ গণঅভ্যুত্থানে ঢাকাকে অন্য এক রূপে দেখা গেল। ঢাকা পরিণত হয়েছে গ্রাফিতি, দেয়াললিখন আর ক্যালিগ্রাফির নগরীতে। এর আগে কখনোই ঢাকার দেয়াল এত রঙিন রূপ ধারণ করেনি। তরুণ শিক্ষার্থীদের হাত দিয়ে জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ই যেন দেয়ালে দেয়ালে ব্যক্ত হয়েছে। শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে তরুণরা দেয়ালের মাধ্যমে নিজেদের আকুতি ব্যক্ত করছে। তাদের রাষ্ট্রকল্পের পরিষ্কার রূপরেখা গ্রাফিতি ও দেয়াললিখনে ফুটে উঠছে। গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক এক রাষ্ট্রকল্পই তারা লালন করে, যেখানে বিচারহীনতা থাকবে না, মৌলিক অধিকারবিরোধী আইন থাকবে না, গুম-ক্রসফায়ার-বাক্স্বাধীনতা হরণ, দুর্নীতি ও লুটপাট থাকবে না। বৈষম্য থাকবে না। তারুণ্যের আত্মত্যাগ আর বীরত্বে ঠাসা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক মাস।
জুলাই ছাত্র আন্দোলনে ঘুরেফিরে আলোচনায় এসেছে জেনারেশন জেড বা জেন-জি প্রজন্ম। কোটা সংস্কার আন্দোলন দিয়ে শুরু, সরকার পতন এবং সরকার গঠনেও রয়েছে তাদের অংশগ্রহণ। চাইছে সমাজটাই বদলে দিতে। অচলায়তন ভেঙে দেশ ও সময় সামনে এগিয়ে যায় তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১-এর গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে, বিজয়ী হয়েছে তারুণ্যের শক্তিতে।
ফোর্বসের তালিকায় ৯ বাংলাদেশি তরুণ
প্রতি বছর বিশ্বের সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তাদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস। এ তালিকায় পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। ফোর্বসের ২০২৪ সালের ‘থার্টি আন্ডার থার্টি’ তালিকায় এ বছর এশিয়া ক্লাসে স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের নয়জন। ফোর্বস ১৬ মে ‘থার্টি আন্ডার থার্টি এশিয়া’ তালিকা প্রকাশ করে। তালিকায় বাংলাদেশের আবদুল গাফ্ফার সাদী, মো. তুষার, শহীদুল ইসলাম, সুলতান মনি, মুমতাহিনা আনিকা, ফাহাদ আহমেদ, রেদোয়ান আহমেদ, মেহেদী শরণ, আনুশা আলমগীর স্থান পান।
‘সায়েন্টিস্ট অব দ্য ফিউচার’ অ্যাওয়ার্ড অর্জন
২৪ থেকে ২৯ জানুয়ারি ভারতের তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরের পিএসজি আইটেকে অনুষ্ঠিত হয় এসপিআরওএস আইআরসি ২০২৪ প্রতিযোগিতা। প্রজেক্ট আলতাইর প্রদর্শনের মাধ্যমে আইআরসিতে নিজেদের সেরা বিদেশি দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে আইইউটির মার্স রোভার টিম। আন্তর্জাতিক রোভার চ্যালেঞ্জ (আইআরসি) ২০২৪ প্রতিযোগিতায় অ্যাস্ট্রোবায়োলজি এক্সপিডিশন মিশনে চ্যাম্পিয়ন এবং পুরো প্রতিযোগিতায় বিশ্বব্যাপী ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী দল প্রজেক্ট আলতাইর।
এশিয়াসেরা বোরড টানেলার্স
মার্চের শেষ সপ্তাহে শেখ মোহাম্মদ শিথিলের নেতৃত্বে ‘বোরড টানেলার্স’ নামে একটি টিম ইলন মাস্কের নট আ বোরিং কমপিটিশনের ফাইনালে অংশ নিয়ে সেরা ৩-এ থাকার পাশাপাশি প্রথম দল হিসেবে সম্মানসূচক ‘রুকি’ পদক জিতেছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলের ২০ শিক্ষার্থী নিয়ে গড়া হয়েছে বোরড টানেলার্স। যাদের মধ্যে সাতজন চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিতে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বাসট্রপে অবস্থিত ইলন মাস্কের দ্য বোরিং কোম্পানির মূল ভেন্যুতে। বোরড টানেলার্সের দলনেতা শেখ মোহাম্মদ শিথিল বলেন, ‘এ অর্জন নিয়ে আমরা এখনও ঘোরের মধ্যে আছি। সেরা ৩-এ থাকা আমাদের জন্য অনেক সম্মানের। রুকি পুরস্কার সেই সম্মান আরও সমৃদ্ধ করেছে। আমরাই এশিয়ার প্রথম দল, যারা এ প্রতিযোগিতায় এত ভালো অবস্থানে পৌঁছালাম। আমাদের প্রতিযোগিতাটি খুবই চ্যালেঞ্জিং। কেননা একটি বোরিং মেশিন তৈরি করতে যে প্রযুক্তি ও গবেষণা প্রয়োজন তা আমাদের দেশে খুব একটা সহজলভ্য নয়। দলগত প্রচেষ্টা ও ইচ্ছাশক্তির জোরে নামমাত্র ফান্ডিং থাকার পরও বিশ্বের বড় বড় দলের সঙ্গে লড়াই করে চূড়ান্ত পর্যায়ে নির্বাচিত হয়েছিল আমাদের দল। বোরড টানেলার্স বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছে। আমাদের লক্ষ্য হলো উদ্ভাবনী মাইক্রো-টানেল বোরিং মেশিন ডিজাইন ও তৈরি করা। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাইরের দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের প্রকৌশলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করা।’
প্রতিযোগিতায় প্রথমবার অংশ নিয়েই নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতার প্রমাণ দেওয়ায় বাংলাদেশ দলটিকে রুকি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাস থেকেও বোরড টানেলার্স টিমকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
রোবোটিকে বাংলাদেশের দুই স্বর্ণপদক
বছরজুড়ে সাফল্যের ঝুলিতে বিশেষ অর্জন হয়ে ছিল টেকসই প্রযুক্তির রোবট উদ্ভাবনের মাধ্যমে একই ক্যাটাগরিতে দুটি স্বর্ণপদক জয় করা। দেশের সফল রোবোটিক দল টিম অ্যাটলাস এবং দেশের প্রথম নারী রোবোটিক দল কোড ব্ল্যাক একই মঞ্চে ওড়াল লাল-সবুজের পতাকা। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় ১৬ মে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড সায়েন্স এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিযোগিতায় দেশের নারী-পুরুষের দুই দল হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ রেখে জয় করেছে স্বর্ণপদক।
ইউআইইউ মার্স রোভার টিম হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন
বছরের আরেক আলোচিত ঘটনা হচ্ছে ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ ২০২৪ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে ‘ইউআইইউ মার্স রোভার টিম’। প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড ২৯ মে থেকে ১ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা স্টেটের হ্যাঙ্কসভিলে মার্স ডেজার্ট রিসার্চ স্টেশনে অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ ও ২০২৩ সালের প্রতিযোগিতায়ও এশিয়ায় প্রথম হয়েছিল ইউআইইউ। ইউআইইউ মার্স রোভার টিম মিশন অতিক্রমের এ সফলতায় চূড়ান্ত পর্বে ৩৮টি দলের মধ্যে বিশ্বে পঞ্চম স্থান অর্জন করলেও এশিয়ান দলগুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এ পর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পোল্যান্ড, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, চিলি, মেক্সিকো, তুরস্কসহ প্রায় ১৫টি দেশের প্রতিযোগীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ইউআইইউ মার্স রোভার দল।
প্রথম বাংলাদেশি নারী ফিনিশার ছন্দা
বিশ্বে ডুয়াথলনের (রানিং-সাইক্লিং-রানিং) সবচেয়ে বড় আসর পাওয়ারম্যান মালয়েশিয়া-২০২৪। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সফলতার সঙ্গে শেষ করা প্রথম বাংলাদেশি নারী পাওয়ারম্যান হয়েছেন কানিজ ফাতেমা ছন্দা। ৯ জুন মালয়েশিয়ার পুত্রাজায়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ থেকে প্রথম নারী হিসেবে ডুয়াথলনে অংশ নিয়ে ফিনিশার হোন ছন্দা। বাংলাদেশে অপ্রচলিত এ গেমসে বাংলাদেশিরা তেমন অংশ না নিলেও পুরো বিশ্ব থেকে ২ হাজার ১৮৩ জন এ আসরে অংশ নেন। তাদের মধ্যে নারী প্রতিযোগীর সংখ্যা ছিল ৩৩১।
মঙ্গলবারতায় জয়ের বার্তা
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জ (ARC) ২০২৪-এ রানার্সআপ এবং এআরসি জুনিয়র ২০২৪ এক্সপ্লোরেশন চ্যালেঞ্জে চ্যাম্পিয়ন শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (MIST)-এর মার্স রোভার টিম ‘মঙ্গলবারতা’। স্পেস এক্সপ্লোরেশন সোসাইটি (UKET)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় ১৭ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার মিডল ইস্ট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয় ARC’24। মোট ২৩৫.১৮ পয়েন্ট অর্জন করে তারা ২১টি টিমের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। এ ছাড়া দলটির দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে তারা জিতে নেয় ‘বেস্ট টিম স্ট্রাকচার’-এর জন্য ARC স্পেশাল প্রাইজ।
সারাফ নাওয়ারের বাজিমাত
সোনাদিয়া দ্বীপের জন্য টেকসই ওশানেরিয়াম কমপ্লেক্স ডিজাইন করে শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম বড় আন্তর্জাতিক স্থাপত্যশিল্প প্রতিযোগিতা ‘দি ইনস্পাইরেলি অ্যাওয়ার্ডস’ জিতে ৯২১ জন প্রতিযোগীর মধ্যে প্রথম হয়ে বাজিমাত করেছেন বাংলাদেশের সারাফ নাওয়ার। প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে স্থাপত্যের শিক্ষার্থীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। সারাফ বলেন, ‘হাজারের বেশি নির্বাচক থাকেন এ প্রতিযোগিতায়। বুঝতে পারিনি জিতে যাব। এ প্রজেক্ট আমার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’ আগস্টে ফাইনালিস্টদের নাম ঘোষণা করা হয় এবং ১৪ সেপ্টেম্বর সেই কাঙ্ক্ষিত দিন। যেদিন সবাইকে পেছনে ফেলে সারাফ নাওয়ারকে স্থাপত্য বিভাগে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রথম বাংলাদেশি ‘আয়রন লেডি’
মালয়েশিয়ার লাংকাউইতে অনুষ্ঠিত হয়েছে কঠিনতম ট্রায়াথলন (সাঁতার, সাইক্লিং ও দৌড়ের সমন্বয়ে ক্রীড়া) আয়রনম্যানের দুই ফরম্যাটের প্রতিযোগিতা। এতে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে অংশ নিয়ে প্রথমবারের চেষ্টাতেই সফল হয়েছেন ফেরদৌসী আক্তার মারিয়া।
লরিয়েট সম্মাননা পেলেন জলবায়ুকর্মী সোহানুর
চলতি বছরের ইয়াং অ্যাকটিভিস্ট সামিট-২০২৪ লরিয়েট সম্মাননা জিতে দেশের জন্য অনন্য সম্মান বয়ে আনেন বাংলাদেশের জলবায়ুকর্মী সোহানুর রহমান। বিশ্বজুড়ে তরুণ কর্মীদের অসামান্য কাজের স্বীকৃতি দিতে এ অনুপ্রেরণামূলক ইভেন্টের ষষ্ঠ সংস্করণ ১৯ নভেম্বর জেনেভায় জাতিসংঘ দপ্তর প্যালাইস ডেস ন্যাশনসে অনুষ্ঠিত হয়। সোহানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের হয়ে কপ-২৯ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনে তিনি জলবায়ু ন্যায়বিচারের পক্ষে এবং নিজের মাতৃভাষা বাংলায় বক্তৃতা দিয়েছেন। একই সঙ্গে সোহানুর তার সাহসী সহকর্মী শ্রাবণসহ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদ ও আহত সব তরুণ এবং জলবায়ু যোদ্ধাদের তার এ পুরস্কার উৎসর্গ করেছেন।
গণিতের বিশ্বমঞ্চে ছয় স্বর্ণ
ডিসেম্বরের শুরুতেই বিজয়ের কেতন ওড়াল আমাদের জেন-জি প্রজন্ম। মেধা আর উদ্ভাবনের খেলায় কাতার জয় করল কিশোর গণিত অনুরাগীরা। এবারের ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিকস টিম চ্যাম্পিয়নশিপে রীতিমতো ছক্কা হাঁকিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছে তারা। ২৮ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত হয় গণিতের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিকস টিম চ্যাম্পিয়নশিপ। বিশ্বের ২৭ দেশ থেকে ১২০টির বেশি দলের ৭ শতাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বাংলাদেশের পাঁচটি টিম ‘দ্য বেঙ্গল হেক্সাগন’, ‘দ্য রয়েল সিক্স অব বেঙ্গল’, ‘দ্য ডেল্টা সিক্স’, ‘দ্য বেঙ্গল হেক্সা’ ও ‘দ্য বেঙ্গল ট্রাইনোমিয়াল’। এ পাঁচটি দল থেকে একেকজন সদস্য বাজিমাত করেন এক ঘণ্টার তিন ধাপের পরীক্ষায়। প্রথমবারে অংশ নিয়েই রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের উচ্চারিত ‘ভেনি, ভিডি, ভিসি’ বাস্তবে রূপ দিয়ে পারস্য জয় করলেন টিমের ২৭ জন সদস্যই। ছয়টি স্বর্ণ, ১১টি রৌপ্য, সাতটি ব্রোঞ্জ এবং তিনটি মেরিট নিয়ে অনন্য অর্জনের অংশীদার হয় বাংলাদেশ।