মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম, হিলি
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:০৭ পিএম
মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন শাপলা শারমিন
দিনাজপুরের হিলির ‘হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরাম’-এর সদস্য শাপলা শারমিন একজন মাশরুম চাষি। মাশরুম চাষ করে নিজেকে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। অন্য নারীদের স্বাবলম্বী করতে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। মাশরুম চাষ করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন এ নারী উদ্যোক্তা।
হিলি শহরের হীরামতি সিনেমা হলের পুবপাশে শাপলা শারমিনের ‘স্নেহা মাশরুম ঘর’। তিন বছর আগে প্রথমে ২৯টি মাশরুম বেড তৈরির মধ্য দিয়ে যাত্রা করেন। বর্তমান তার দুটি খামার, তাতে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার মাশরুমের বেড। বেড তৈরির ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মাশরুম উৎপাদন হয়। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ কেজি মাশরুম উত্তোলন করেন তিনি। প্রতি কেজির দাম পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। মাসে তার আয় হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমান তিনি একজন সফল মাশরুম চাষি। তার এ খামার এলাকায় সাড়া ফেলেছে।
এ ছাড়া এ নারী উদ্যোক্তা গড়ে তুলেছেন মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। নারী উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন নারী প্রশিক্ষণ নিতে আসছেন সেখানে।
নারী উদ্যোক্তা ফোরামের আরমিন আক্তার পলি বলেন, ‘আমার একটি ছাদবাগান আছে। পাশাপাশি টব তৈরি করি। আজ শাপলা আপার বাসায় এসেছি মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিতে। তিনি মাশরুম চাষ করে যেভাবে নিজেকে স্বাবলম্বী করেছেন, ইনশাল্লাহ আমিও মাশরুম চাষ করে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলব।’
মাশরুম চাষি শাপলা শারমিন বলেন, ‘প্রথমে বাড়ির তিনটি মুরগি বিক্রি করে ২৯টি মাশরুম বেড তৈরি করি। এরপর ধীরে ধীরে দুটি মাশরুম খামার করে ফেলি। তবে এ খামার তৈরি করতে সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছি আমি। মাশরুম চাষে তেমন কোনো ব্যয় হয় না। খড়ের বেড তৈরি করে বীজ দিয়ে মাশরুম চাষ হয়। আমার মাসে যে আয় হয় তা দিয়ে সংসার ভালোভাবে চলে। অনেক নারী আমার মাশরুম ঘরে আসছেন এবং প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আশা করি আমি যেমন এ মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছি, অন্য নারীরাও স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।’
হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হামিদা আকতার ডালিম বলেন, ‘আমরা নারী, আমরাও পারি, শহর কিংবা গ্রামে আমরা পৌঁছে যাব সবখানে। পুরুষের পাশাপাশি আমরা হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তারা এগিয়ে যাচ্ছি।’
ফোরামের সভাপতি রোমেনা আক্তার মণি বলেন, ‘মাশরুম একটি পুষ্টিকর খাদ্য, শরীরের অনেক রোগের প্রতিকার হিসেবে কাজ করে। শাপলা শারমিন একজন নারী উদ্যোক্তা। হাঁটি হাঁটি পা পা করে তিনি আজ একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তার স্নেহা মাশরুম ঘর আজ ব্যাপক পরিচিত। নারীরা নিজেকে স্বাবলম্বী করতে তার মাশরুম ঘরে প্রশিক্ষণ নিতে আসছেন।’