হানিফ ওয়াহিদ
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:০২ পিএম
এক বন্ধুর ভাইয়ের বিয়েতে বরিশাল গিয়েছিলাম। যেতে অনেক সময় লেগেছিল। কনেবাড়ি পৌঁছাতে রাত হয়ে গেল। সারা রাত না-ঘুমাতে পেরে শরীর খুব খারাপ লাগছিল। জানলাম দুপুরের খাবার খেয়ে বউ নিয়ে রওনা দিতে হবে। নাশতা করে এক বন্ধুকে নিয়ে লঞ্চঘাটে চলে গেলাম। সেখানে লোকজন তেমন নেই। অদূরে দুটি মেয়ে দাঁড়িয়ে নিজেরা হাসাহাসি করছে। অন্য পাশে দুটি ছেলে মেয়েদের ফলো করছে। বুঝলাম কিছু বলতে চাইছে, সাহস পাচ্ছে না। অনেকক্ষণ ধরে লক্ষ করলাম। দুষ্ট বুদ্ধি এলো। মানুষকে অবাক করে মজা পাই। অবাক মানুষের মুখ দেখা আনন্দের।
বন্ধুকে বললাম, দাঁড়া, মেয়ে দুটিকে আই লাভ ইউ বলে আসি।
বন্ধু লাফিয়ে উঠল, কী বলবি? আই লাভ ইউ বলব। মাথা ঠিক আছে তোর? আমার মাথা ঠিকই আছে।
বন্ধু আমার হাত চেপে ধরে বলল চল এখান থেকে কেটে পড়ি। গণপিটুনি খেয়ে মরার শখ নাই।রাখ ব্যাটা, দেখ কী করি।
বন্ধু ভয়ে দোয়া পড়তে শুরু করল, লা ইলাহা ইল্লা আনতা।
আমি মেয়ে দুটির দিকে হাঁটা দিলাম। বন্ধু পারে তো দৌড়ে পালায়। ছেলেগুলো সতর্ক হলো। সবচেয়ে আকর্ষণীয় মেয়েটা আমার দিকে তাকাল। ম্যাডাম, আপনারা কলেজে যাচ্ছেন?
জি। আমি এ এলাকায় নতুন, চেয়ারম্যানের বাড়ি কোন দিকে?
কেন?
আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে আমার বন্ধু, ওদের বাড়ি যাব। আমি রাস্তাঘাট চিনি না। কেউ ঠিকানা বলতে পারছে না।
সে তো অনেক দূর!
ও তাই? তা ওদের গ্রামের নামটা কী?
লালপুর। বলেই কীভাবে যেতে হবে বলে দিল। অনেক উপকার করলেন, ম্যাডাম। আঃ ইয়া লাভু।মেয়েটা অবাক হয়ে বলল, মানে কী? বিনয়ী গলায় বললাম, এটা ইতালিয়ান ভাষা, অর্থ ভালো থাকবেন। বহুদিন ইতালি ছিলাম। মাঝেমধ্যে ওই দেশের ভাষা চলে আসে। শুনে মেয়ে দুটি হাসতে লাগল। এক মেয়ে হাসতে হাসতে উচ্চারণ করল, আঃ ইয়া লাভু।
ছেলেরা আমার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে।
লঞ্চ চলে এলো। মেয়েরা লঞ্চে উঠল। ডেকে গিয়ে দাঁড়াল। লঞ্চও ছেড়ে দিল। আমি হাত নেড়ে চিৎকার করে বললাম, ম্যাডাম, আঃ ইয়া লাভু (দূরে দাঁড়ানো বন্ধু এবং ছেলেরা শুনলÑ আই লাভ ইউ)।
মেয়েরা হাসতে হাসতে হাতনাড়তে লাগল।
ছেলেদের দিকে তাকালাম। তারা চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
পেছন ফিরে দেখি, বন্ধু অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে!