সমৃদ্ধ সাহা
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৫৪ এএম
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২ পিএম
বাদলপুরের মাদল বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শুভ। খুব শান্তশিষ্ট এবং কৌতূহলী একটা ছেলে সে। পাখপাখালির মধুর কলরবে ঘুম ভাঙে শুভর। জানালার পর্দা দুটি সরিয়ে সে মাঠের দিকে তাকায় এবং এক মনে সবুজ ঘাসের গায়ে বিন্দু বিন্দু শিশিরকণা জমে থাকতে দেখে তার মন আনন্দ ভরে যায়। এমন সময় মা বলে উঠলেন, ‘শুভ স্কুলের সময় হয়ে গেছে।’
শুভ মায়ের কথা শুনে দ্রুত তৈরি হয়ে নেয় স্কুলের জন্য। স্কুলের পথে কুয়াশার দেয়াল ভেদ করে যেতে যেতে সে উপভোগ করতে থাকে অপরূপ প্রকৃতি। বিদ্যালয়ে পৌঁছে শ্রেণিকক্ষে বসার কিছুক্ষণের মধ্যেই মীরা ম্যাম প্রবেশ করলেন। মীরা ম্যাম বাংলা পড়ান। খুব শান্ত মেজাজের শিক্ষক তিনি। একই সঙ্গে মীরা ম্যাম শুভর খুব প্রিয়। শুভ মীরা ম্যামকে তার সকালের দারুণ অভিজ্ঞতার কথা বলে। তখন মীরা ম্যাম শুভকে বলেন, ‘এখন হেমন্তকাল। এ সময়ে শীতের আগাম খবর দেয়। হালকা কুয়াশার মধ্যে সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি দেখতে কি যে আনন্দ লাগে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ধানের শীষের গায়ে সূর্যের কোমল আলোয় জ্বলজ্বল করা শিশিরবিন্দুর সৌন্দর্য সবার মন কেড়ে নেয়। চারপাশ ম-ম করে শিউলি ফুল ও দোলনচাঁপার মন মাতানো সুগন্ধে। হেমন্তে নতুন আমন ধান কাটার পর সে ধান থেকে চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত হয় যে উৎসব তাকে বলা হয় নবান্ন। নবান্ন শব্দের অর্থ নতুন অন্ন। এ সময় প্রতিটি গ্রামে বাড়ি বাড়ি রান্না করা হয় নতুন চালের পিঠাপুলি ও পায়েস। আঃ খেতে কি আয়েশ। সবকিছু মিলিয়ে যেন শুধু বলতে ইচ্ছে করে, তোমার সৌন্দর্যের নেই কোনো অন্ত, তাইতো তোমার নাম হয়েছে হেমন্ত।’ মীরা ম্যামের কথা সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনল। স্কুল শেষে বাসায় ফিরে শুভ তার ডায়েরিতে লিখল, ‘তোমাকে দেখে মনে হয়, তুমি শিল্পীর আঁকা ছবি। সত্যি! হেমন্ত, তুমি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কবি।’
সপ্তম শ্রেণি,মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মানিকগঞ্জ