প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৪১ পিএম
ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে ঠান্ডা-জ্বর বা হাঁচি-কাশি প্রায় প্রতি ঘরেই দেখা যায়। এগুলো সাধারণ অসুখ হলেও অনেক সময় বেশ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। তাই জেনে নিন এ সমস্যাগুলো উপশমের জন্য কিছু কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার। তবে মনে রাখবেন, এগুলো সব সময় কার্যকর না-ও হতে পারে, এবং সমস্যার তীব্রতা বাড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ঠান্ডা ও ফ্লু : পার্থক্য বোঝা জরুরি
ঠান্ডা ও ভাইরাসজনিত জ্বরের সাধারণ কারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা বা
ফ্লু। যদিও এদের উপসর্গ একরকম মনে হতে পারে, এগুলো আলাদা অসুখ। ঠান্ডা
সাধারণত মৃদু উপসর্গ সৃষ্টি করে, কিন্তু ফ্লু শরীর আরও দুর্বল করে দেয় এবং
শয্যাশায়ী করে তুলতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জ্বর দিয়ে শুরু হয়, যা
শেষে আপনাকে ক্লান্ত করে তোলে।
খাবারের যত্ন নিন
ঠান্ডা বা জ্বরের সময় খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দিতে পারে।
এ সময়ে শরীরের শক্তি ধরে রাখতে হালকা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। তবে ক্ষুধা
না লাগলে জোর করে খাওয়ার দরকার নেই।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
শরীরের ক্লান্তি অনুযায়ী বিশ্রাম নিন। বাড়তি কাজের চাপ নেওয়া একেবারেই উচিত নয়। পর্যাপ্ত ঘুম শরীর দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।
লেবু ও মধুর মিশ্রণ
গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করলে ঠান্ডা ও
সর্দিজনিত অস্বস্তি কমে। এটি স্বস্তিদায়ক এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে কিছুটা প্রতিরোধ
গড়ে তোলে।
পর্যাপ্ত পানি পান
ঠান্ডা বা ফ্লুর সময় শরীরের পানিশূন্যতা রোধে বেশি করে পানি পান করুন। পাশাপাশি চা বা কফি খেতেও পারেন। তবে অতিরিক্ত পানি পান ক্ষতিকর হতে পারে, তাই পরিমিত পানীয় গ্রহণ করুন।
হাঁচি-কাশি নিয়ন্ত্রণে মাস্ক ব্যবহার
হাঁচি-কাশি হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন, যাতে অন্যদের সংক্রমণ এড়ানো যায়। বাইরে গেলে এ বিষয়ে বাড়তি সচেতনতা প্রয়োজন।
ওষুধের সঠিক ব্যবহার
প্রয়োজনে প্যারাসিটামল বা অ্যান্টি-হিস্টামিনজাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়। তাপমাত্রা ১০০°F-এর নিচে থাকলে প্যারাসিটামল সেবনের প্রয়োজন হয় না।
বাষ্প গ্রহণ
অতিরিক্ত মাথাব্যথা বা নাক বন্ধ থাকলে গরম পানিতে মেনথল দিয়ে তার বাষ্প গ্রহণ করলে আরাম পাওয়া যায়। এটি মাথাব্যথাও কমায়।
সাবধানতা : ভিটামিন সি ও জিঙ্ক
ঠান্ডাজনিত রোগের জন্য ভিটামিন সি কিছুটা কার্যকর হলেও এটি আশানুরূপ ফল দিতে পারে না। অতিরিক্ত ভিটামিন সি শরীর থেকে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। তবে জিঙ্কের মাত্রা বেশি হলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নয়
ঠান্ডা বা ফ্লু ভাইরাসজনিত অসুখ, যেখানে
অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। তাই অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার থেকে বিরত
থাকুন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সুষম খাবার এবং ঘরোয়া প্রতিকার মেনে চললে ঠান্ডা ও জ্বর থেকে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে
পরিস্থিতি জটিল মনে হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।