রম্য গল্প
অমল সাহা
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৫২ পিএম
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:০০ পিএম
বউ নিয়ে হাস্য-পরিহাস,
নিন্দাচর্চা অনেক হয়েছে। তাই আমি আজ পৃথিবীর তাবৎ বউয়ের পক্ষে কথা বলতে চাই। সাবেক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলও বলেছিলেন, ‘সবচেয়ে বড় অর্জন, বিয়ে করার জন্য
আমি বউকে পটাতে পেরেছিলাম।’ আমি মনে করি পুরুষদের একমাত্র মৌলিক চাহিদা হওয়া উচিত একজন
বউ জোগাড় করা। এটিই মানব জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। যে বউ পাইল সে সব পাইল!
যাই হোক, একজন
বউ পেলে একজন পুরুষের কী উপকার হতে পারে তার একটি বিশদ বিবরণ দিচ্ছি। এতে বউদের যত
বদনাম সব ঘুচে যাবে। আমেরিকান স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান কাম অভিনেতা জেরি সেইনফিল্ড বলেছেন,
একজন স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ানের যেমন শুরু করার পর্যায়ে যেতে ১০ বছর লাগে তেমনই ভালো
স্বামী হতে গেলে ১০ বছর লেগে যায়! শিখতে সময় লাগে তো! প্রথমত যে পুরুষ বিয়ে করল, সে
যেন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই সহজে ভর্তি হলো। এখন তার শিক্ষার পালা।
শিক্ষাটা আবার সুশিক্ষা। ‘সু’ দিয়ে শিক্ষা অবধিও গড়াতে পারে। কারণ পৃথিবীতে এমন কোনো
বিষয় নেই যা বউরা স্বামীদের চাইতে বেশি জানে না। গার্হস্থ্য অর্থনীতি থেকে ফরেন পলিসি
সবই তার নখদর্পণে। আপনি এতদিন হয়তো জানতেন না বা জানার আগ্রহ বোধ করেননি যে আপনার আত্মীয়স্বজন
কেমন ধরনের মানুষ। কিন্তু বিয়ের পর বউ আপনাকে জানিয়ে দেবে, আপনার কোন আত্মীয় কোন ধান্দায়
ঘোরে। কে ঘড়েল, কে পাকনা টাইপের, কার মুখে মধু পেটে বিষ ইত্যাদি জরুরি ইনফরমেশন একটা
শ্বেতপত্র আকারে আপনার সামনে তুলে ধরবে। আসলে বিয়ের পর স্বামীর শিক্ষাজীবন শুরু হয়।
কীভাবে পাজামা পরবে, প্যান্ট পরবে, জাঙিয়া পরবে, কীভাবে হাঁটবে, কথা বলবে, খাবে। এমনকি
এই প্রথম পুরুষ জানবে, তার ঘুমানোর ধরন নাকি ভালো না। সকালে তার লুঙ্গি মাফলার হয়ে
যায়! ভাগ্য ভালো শীতের দিন ছিল, গায়ে লেপ ছিল নয়তো মহাকেলেঙ্কারি হয়ে যেত ইত্যাদি ইত্যাদি।
বিয়ের পর আপনি
নিজেকে চেনার একটা মস্ত সুযোগ পাবেন। নিজেকে আাবিষ্কার করবেন। সেই সক্রেটিসের ‘নো দাইসেল্ফ’।
বুঝতে পারবেন আপনি কতটা বলদ। বিয়ের আগে কল্পনা করতেন, আপনি বিছানায় থাকতে বউ বেড-টি
নিয়ে হাজির হবে, বলবে, শুনছোÑওঠো চা এনেছি। অ্যাই ওঠো না, দুষ্টুটা চা-টা নাও! বা আরও
কিছু ভেবেছিলেন। কিন্তু এখন দেখছেন বউ সকালবেলায় বাজারের থলে হাতে ধরিয়ে দিয়ে ঝাড়ি
মারে, যাও বাজারে যাও। কোথায় গেলÑ শুনছো, ওগো চা-টা নাও!
আর দেখবেন আপনার
বলা-কওয়াও ঠিক নেই। আপনি যা বলেন সব ভুলভাল বলেন। তখন আপনি নিজেই ভাববেন আপনি আদতে
ভুলই বলেন যখন আপনার বউ শাড়ি পরে সেজেগুজে আপনার সামনে এসে বলেন, দেখো তো কেমন লাগছে?
আপনি হাসি দিয়ে
বলেন, দারুণ!
পরক্ষণেই ভাবেন,
সত্যিই আপনি ভুলই বলেন!
এভাবেই বউ-বিশ্ববিদ্যালয়ে
আপনি সারা জীবন ছাত্রনেতাদের মতো একজন শিক্ষার্থীই রয়ে যাবেন। আপনি বিয়ের পর স্বীকার
করতে বাধ্য হবেন, আপনার মতো একটা বলদকে বিয়ে করে বউ আপনাকে ধন্য করেছে!