রায়হান আহমেদ তামীম
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:১৮ পিএম
নারী ও শিশু নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।
‘আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা এমন একটি সমাজে যেখানে ছোটবেলা থেকেই দেখেছি পুরুষরা নারীদের চেয়ে অগ্রগামী। বরাবরই তারা নারীকে ছাপিয়ে এগিয়ে যায়। তখন থেকেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম যেভাবেই হোক পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করব।’ দয়িতা ফাউন্ডেশনের শুরুর গল্প জানতে চাইলে এভাবেই বললেন দয়িতার প্রতিষ্ঠাতা নুপুর আক্তার নোভা।
তার ভাষ্যমতে, দয়িতা ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য এমন একটি সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে প্রত্যেক নারী সুশিক্ষায় বেড়ে উঠবে, তারা নিজ অধিকার, প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকবে। ফাউন্ডেশনটি কাজ করে যাচ্ছে সমাজে নারীদের নিয়ে প্রচলিত ট্যাবু ভেঙে দিয়ে তাদের সুন্দর একটি সমাজ দিতে, যেখানে তারা সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর একটি জীবন গড়ে নিতে পারে।
নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিক্ষা, অধিকার, বাল্যবিবাহ রোধ, মাসিক সুরক্ষা ও সচেতনতা, মাসিককালীন কুসংস্কার রোধ, মানসিক স্বাস্থ্য, শিশুদের নিরাপদ-অনিরাপদ স্পর্শ সম্পর্কে সচেতনতা এবং নারীর আত্মপ্রতিরক্ষা নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।
উদ্যমী তরুণী নুপুর আক্তার নোভা বলেন, ‘আমরা এমন একটি জায়গায় কাজ শুরু করেছি, যেটি গ্রাম ও শহরের মাঝামাঝি। যেখানে নারীরা নিজেদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মাসিক সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ কিংবা নিজ প্রতিরক্ষা বিষয়ে সচেতন নয়। তারা বিভিন্ন কুসংস্কার ও গোঁড়ামির মধ্যে আটকে আছে। তারা জানে না, মাসিককালীন কী কী করণীয় রয়েছে কিংবা বাল্যবিবাহের ক্ষতিকারক দিক কী। দয়িতা ফাউন্ডেশন এমন নারীদের নিয়ে কাজ করে।’
শুরুতে অল্প কয়েকজন মিলে কাজ শুরু করেন তারা। এলাকাভিত্তিক বৈঠক, আলোচনা সভা, বিভিন্ন স্কুলে সেমিনার, সুরক্ষা বাক্স স্থাপন, প্যাড বিতরণসহ নানা কাজের মাধ্যমে তাদের সংগঠন এগিয়ে যেতে থাকে। তাদের কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা। বর্তমানে দেশের কয়েকটি জেলায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দয়িতার স্বেচ্ছাসেবীরা।
নোভা আরও বলেন, ‘আমরা আরও কাজ করছি নারী আত্মপ্রতিরক্ষা শিক্ষা নিয়ে। যেখানে আমরা স্কুলের শিক্ষার্থীদের শেখাই কীভাবে ইভ টিজিং কিংবা যেকোনো হয়রানিমূলক পরিস্থিতি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হয়। তা ছাড়া ‘good touch & bad touch’ সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকি।’
এ ছাড়া নারীদের নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি ‘বিদ্যাপীঠ’ নামে পথশিশুদের নিয়ে স্কুলের কার্যক্রম শুরু করেছেন তারা। সেখানে ৩০-এর অধিক পথশিশু পড়াশোনা করছে। দয়িতার স্বেচ্ছাসেবীরা স্বপ্ন দেখেন একটি সুন্দর বৈষম্যহীন সমাজের। যেখানে নারী ও শিশুরা পাবে তাদের প্রাপ্য অধিকার।