দিলরুবা নীলা
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৪৭ পিএম
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:০৮ পিএম
অলংকরণ : জয়ন্ত সরকার
অনুদের ক্লাস ফোরের সবচেয়ে দুষ্টু ছেলে রিংকু আর সবচেয়ে ভালো অনু। অনু যে শুধু লেখাপড়ায় ভালো তা নয়, তার ব্যবহারও চমৎকার। অনুর বাবা নেই। মা ছোট্ট একটা চাকরি করেন। অনু চাইলেই সবকিছু পায় না। কিন্তু তা নিয়ে তার মোটেও আফসোস নেই। সে সব সময় হাসিখুশি থাকে।
রিংকু ভীষণ দুষ্টু এবং মজার ছেলে। লেখাপড়া করে না ঠিকই, কিন্তু মজার মজার গল্প বলে ক্লাস মাতিয়ে রাখে।
ক্লাসের কেউই তাকে অপছন্দ করে না।
সামনে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা। সবাই পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও রিংকুর লেখাপড়ার কোনো খবর নেই। সারা দিন মজার মজার সব কাণ্ড ঘটাতে ব্যস্ত সে। পড়তে বললে উত্তর দেয়Ñ পরীক্ষার আগের দিন পড়ব!
কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন এক মহাবিপত্তি ঘটল। স্কুলে এলেন নতুন এক টিচার। শুধু যে স্কুলে এলেন তা নয়, উপরন্তু নতুন টিচার দোলা ম্যাম হলেন অনুদের ক্লাস টিচার। এক দিনেই ওরা বুঝে গেল দোলা ম্যাম ভীষণ কড়া টিচার।
পরীক্ষার দিনই তিনি বলে দিলেন শারীরিক শিক্ষা পরীক্ষায় সবাইকে সাদা জুতা-মোজা পরে আসতে হবে। নইলে ১০ নম্বর মাইনাস। ২৫ নম্বরে ১০ নম্বর মাইনাস মানে অদ্ভুত কারবার।
শারীরিক শিক্ষা পরীক্ষা শুরু হবে। ক্লাস ফোরের শিক্ষার্থীরা লাইন ধরে মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। সবাই এসেছে ফুল ড্রেসে। আকাশি শার্ট, নেভি ব্লু প্যান্ট সঙ্গে সাদা জুতা-মোজা।
হঠাৎ রিংকু খেয়াল করে অনুর পায়ে জুতা নেই। সে পরে আছে চামড়ার এক জোড়া স্যান্ডেল। রিংকু এক পা-দুই পা করে এগিয়ে আসে অনুর দিকে।
কিরে অনু, তোর সাদা জুতা কই?
আর বলিস না। আগের জুতো জোড়া এত ছোট হয়ে গেছে যে কষ্ট করেও পায়ে দিতে পারলাম না। আর নতুন জুতো কিনব কী করে, মা তো এখনও বেতন পায়নি।
কোনো চিন্তা করিস না অনু। আমার পা আর তোর পা তো সমান। এ জুতা জোড়া পরে নে। রিংকু নিজের জুতা-মোজা খুলে দেয় অনুকে।
নারে রিংকু, পরব না। জুতা না পরলে ম্যাম তোকে নম্বর কম দেবে। অনু বলে।
আরে আমি কম নম্বর পেলে আর কী হবে? তুই কম নম্বর পেলে ফার্স্ট হতে পারবি না। রিংকু অনুকে জবাব দেয়।
Ñকে কম নম্বর পাবে, আমাদের রিংকু? মোটেও না। এবারের শারীরিক শিক্ষা পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পাবে আমাদের সোনার ছেলে রিংকু।
কখন যে দোলা ম্যাম ওদের কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন ওরা কেউ টের পায়নি।