প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:০০ পিএম
পানির অন্য নাম জীবনÑকথাটা এমনিতে
আসেনি। যে খাবারই খাওয়া হোক না কেন, পানি পান না করলে তৃপ্তি পাওয়া যায় না। আর
পানি পানের উপকারিতাও অন্য অনেক খাবারের থেকে বেশি। স্লোভাকিয়ার পুরোনো একটি
প্রবাদÑবিশুদ্ধ পানি হলো পৃথিবীর প্রথম ও সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ। কিন্তু পানি
পানেরও আছে নিয়ম। খনার বচন বলে, ‘ফল খেয়ে জল খায়, যম বলে আয় আয়।’ তাই পানি কখন,
কীভাবে ও কতটুকু পান করা হলো, সে হিসার রাখলেই পাওয়া যাবে পানির পরিপূর্ণ উপকার।
শরীরের প্রতিটি কোষের জন্য প্রয়োজন
পানির। এ ছাড়া সৌন্দর্য ধরে রাখতেও পানি দরকার। সুন্দর ত্বক ও চুলের জন্য পানি
পানে দিতে হবে সব থেকে গুরুত্ব।
দিনের যে সময়ই পানি পান করা হোক না
কেন, কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মানতেই হবে। অতিরিক্ত পানি পানে শরীরের প্রয়োজনের বাড়তি
অংশ কোষে প্রবেশ করে। এতে পানির কারণে ওজন বেড়ে যায়। এটি অস্বাস্থ্যকর। এতে কিডনির
ওপর চাপ তৈরি হয় এবং শরীর থেকে সোডিয়াম বেরিয়ে যায়। তাই দিনে ১২ গ্লাস বা ৩ লিটার
পানি পান করার পরামর্শ দিলেন পুষ্টিবিদ নিগার সুলতানা।
ঘুম থেকে উঠে
ঘুম থকে উঠেই প্রথমে চা বা কফি নয়,
পান করতে পারেন ১ থেকে ২ গ্লাস পানি। ঘুমানোর লম্বা সময়ে শরীরে পানির কমতি হয়, যা
সকালে উঠে পূরণ করতেই দরকার পানি।
খাওয়ার আগে ও পরে
খাওয়ার ১৫ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি
ওজন কমাতে সাহায্য করে। খালি পেটে পানি পান করলে পেট ভরা থাকে, যা অতিরিক্ত খাওয়া
কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু খাওয়ার মধ্যে পানি পান করা যাবে না। এতে খাবার হজমে
সমস্যা তৈরি হবে। আবার খাবার শেষ করেই সঙ্গে সঙ্গে পানি পান ঠিক নয়। অবশ্যই ১০
থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
ব্যায়ামের সময়
ব্যায়াম করার ১০ মিনিট আগে এক গ্লাস
পানি পান করা উচিত। কিন্তু ব্যায়ামের মাঝখানে পানি নয়। আবার ব্যায়াম শেষ করে ৫
মিনিট পর পানি পান করা ভালো। ব্যায়াম করার জন্য ঘাম ঝরবে। ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে
প্রচুর সোডিয়াম বেরিয়ে যায়, যা পূরণ করতে হবে পানি দিয়েই।
বসে করুন পানি পান
পানি পানের একটি সঠিক নিয়ম হলো
দাঁড়িয়ে নয়, বরং বসে পান করা। এতে শরীরের পেশি বিশ্রাম পায় ও হজম সহজ হয়।
একবারে সব নয়
পানি পানে তাড়াহুড়া করা উচিত নয়।
একবারে সবটুকু পানি পান করা ভুল পদ্ধতি। সময় নিয়ে অল্প অল্প করে পানি শেষ করতে
হবে। এতে পানি পানের পরিমাণ বাড়ানো যায় আর কতটুকু পানি পান করা হলো, সে হিসাব
থাকে। এ ছাড়া একবারে পান করলে পেটে পানির চাপও তৈরি হয়। এ ছাড়া একবারে বেশি পানি
পান করায় অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
ফল খেয়ে নয়
ফল খেয়ে পানি পান না করার কথা অনেকেই
শুনেছেন। কারণ হিসেবে নিগার সুলতানা বলেন, ফল খাওয়ার পর পানি পান করলে ফলের
পুষ্টিগুণ পানির সঙ্গে মিশে কমে যায়। ফলের উপাদান ঠিকঠাক পাওয়া যায় না।
গিজারের পানি নয়
সব থেকে বিশুদ্ধ পানি হলো চুলায় ২০
মিনিট ফুটানো পানি। অনেকেই মনে করেন গিজারে পানি ফুটে আসে, তাই এটি বিশুদ্ধ।
কিন্তু পানি ফুটলেও গিজারের পানিতে থাকে প্রচুর সিসা, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই
সঠিক নিয়মে ফুটানো পানিই খেতে হবে।
খুব ঠান্ডা বা গরম পানি
খুব গরম বা ফ্রিজ থেকে বের করা
অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাই এমন পানি পান করা উচিত নয়।