সাজেদুর আবেদীন শান্ত
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৭ এএম
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১৯ এএম
মুখে লম্বা দাড়ি রাখায় নরওয়েজিয়ান-আমেরিকান কৃষক হ্যান্স ল্যাংসেথের নাম উঠেছিল গিনেস বুকে। উঠবেই না বা কেন! তার দাড়ি লম্বা হয়েছিল প্রায় ১৭ ফুট ৬ ইঞ্চি! অন্যদিকে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান বোনাপার্ট তার মুখে কোনো দাড়িই রাখতেন না। তিনি প্রতিদিন ক্লিন শেভ করতেন। প্রতিদিন সকালে সাজসজ্জার ঘরটাকে রীতিমতো যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়ে ফেলতেন। কারণ দুনিয়া কাঁপানো এ বীর অন্য কারও হাতে দাড়ি কাটাতে ভয় পেতেন।
বলতেন, ‘অন্যের হাতে অমন ধারালো অস্ত্র, সেটা জেনেও তার সামনে আমার গাল-গলা এগিয়ে দেব তেমন বোকা আমি নই।’ তাই নেপোলিয়ান নিজেই তার দাড়ি কামাতেন। এতে অবশ্য তার সাহায্যকারী লাগত বেশ কয়েকজন। একজন সামনে আয়না ধরে রাখত। আর একজন পানির পাত্র। তিনি সারা ঘর হেঁটে হেঁটে দাড়ি কামাতেন। আর এ কাজটা করতে নেপোলিয়ান সময় নিতেন প্রায় ২ ঘণ্টা। দাড়ি কাটা নিয়ে এ তো গেল নেপোলিয়ানের কাহিনী। গবেষণা থেকেও জানা যায়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ যিনি নিয়মিত দাড়ির যত্ন নেন অর্থাৎ দাড়ি কাটেন বা ছাঁটেন, তিনি সারা জীবনে গড়ে ৩ হাজার ৩৫০ ঘণ্টা ব্যয় করেন দাড়ির পেছনে। যা দিনের হিসাবে ১৩৯ দিন। এ দিনের সংখ্যাটা নেহাত কম না, তাই হয়তো এ সময় বাঁচাতে বিখ্যাত আইরিশ নাট্যকার, সাহিত্যিক ও সমালোচক জর্জ বার্নার্ড শ দাড়ি রেখেছিলেন। কিন্তু না! তিনি দাড়ি রেখেছিলেন অন্য এক কারণে। জানা যায়, শর বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তিনি তার বাবাকে দাড়ি কামাতে দেখে বলেছিলেন, ‘বাবা, তুমি দাড়ি কামাচ্ছ কেন!’
এ কথা শুনে তার বাবা শর দিকে নীরবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলেছিলেন, ‘আরে তাই তো, আমি কেন এ ফালতু কাজ করছি?’ এই বলে তিনি তার রেজার জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলেছিলেন এবং জীবনে তা আর কখনও ধরেননি। তাই শও ঠিক করেছিলেন আর রেজার ধরবেন না। যার কারণে তার দাড়ি রাখা।
বিখ্যাতদের গল্প যা-ই হোক, আপনি দাড়ি কাটুন বা রাখুন আপনাকে নিতে হবে দাড়ির যত্ন। আর দাড়ির যত্নের জন্য বা দাড়ি নিয়ে ভাবার জন্য যদি সারা বছর সময় না-ও পান তাহলে সেপ্টেম্বরের প্রথম শনিবার আপনি ভাবতে পারেন দাড়ি নিয়ে। অথবা ক্যালেন্ডারের পাতায় আগেই দাগ কাটিয়ে রাখতে পারেন যে এই দিনে দাড়ির যত্নের জন্য সময় রাখতেই হবে। কেননা সেপ্টেম্বরের প্রথম শনিবার বিশ্ব দাড়ি দিবস। ২০১০ সাল থেকে শুধু আপনার দাড়ির জন্য বিশ্বে পালিত হচ্ছে গোটা একটি দিন। তাই এ দিবসটি হেলাফেলায় না কাটিয়ে দাড়ির যত্ন নিয়ে কাটান। কেননা অনেকেই মনে করেন দাড়ি পৌরুষের প্রতীক।
এ ছাড়া দাড়ি রাখার স্বাস্থ্যগত দারুণ কিছু উপকারও রয়েছে। এর মধ্য অন্যতম হলো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মুখ হয়ে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া, যার ফলে রোগবালাই কম হওয়া। অন্যদিকে শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখা।
সূত্র : ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে