হানিফ ওয়াহিদ
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৪ ১৬:৩০ পিএম
মহাজ্ঞানী আইনস্টাইন একবার স্বপ্নে দেখলেন তিনি বাংলাদেশের এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন।
আইনস্টাইন বাজার করতে পছন্দ করেন না, কিন্তু বউ তাকে অকর্মা অপদার্থ বলে গালাগাল করে গলাধাক্কা দিয়ে বাজারে পাঠিয়েছে।
গবেষণা ফেলে তিনি কাঁচাবাজার করে নেয়েঘেমে বাড়ি ফিরেছেন কিন্তু তার বউ সখিনার বাজার পছন্দ হয়নি। বউ যা লিস্ট করে দিয়েছেন, তার পরও কয়েকটি জিনিস ভুলে বাদ পড়ে গেছে।
পচা মাছটির দিকেই তোমাকে নজর দিতে হলো? বলি, তোমার বুদ্ধিশুদ্ধি হবে কবে?
আইনস্টাইন লজ্জায় বলতে পারলেন না, ১০০% তাজা মাছ বলে মাছওয়ালা তাকে পচা মাছ গছিয়ে দিয়েছে।
সখিনা মাংসের পোঁটলা বের করে বলল, এখানে মাংস কই? সবই দেখি হাড্ডি। এ জমানায়ও এত বোকা মানুষ থাকে! শুধু আমি বলেই তোমার সংসার করে গেলাম…
পাড়ার একেকজন মহিলা যেন লেডি শার্লক হোমস। আওয়াজ পেলেই গন্ধ শুঁকে চলে আসে। অন্যের বিষয়ে মানুষের এত কৌতূহল থাকবে কেন? মানুষের প্রাইভেসি থাকবে না?
আইনস্টাইন মিনমিনে গলায় সখিনাকে বললেন, সারাক্ষণ আমাকে তুমি বোকা বলো কেন? পৃথিবীর মানুষ আমাকে কত সম্মান করে জানো তুমি?
সখিনা বিরক্তি প্রকাশ করে বলল, বিয়ের আগে আমিও তো তোমাকে বুদ্ধিমান ভাবতাম, লাভ কী হলো? সারা পৃথিবীর মানুষ তো আর তোমাকে নিয়ে সংসার করে না, আমি করি। তুমি যে এত বোকা তারা তো আর জানে না।
আইনস্টাইন কী বলবেন ভেবে পেলেন না। অবাক হয়ে দেখলেন, বিয়ের আগে তিনি নিজের কোনো দোষ খুঁজে পেতেন না, এখন কোনো গুণ খুঁজে পাচ্ছেন না!
সখিনা দাঁত কিড়মিড় করে বলল, লবণ আনতে বলছিলাম, আনো নাই। যাও, তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে লবণ নিয়ে আসো।
লবণ আনতে গিয়ে মন খারাপ করে একটা চায়ের দোকানে ঢুকলেন, চা খেয়ে মন ভালো করা উদ্দেশ্য। অবাক হয়ে দেখলেন, এখানে যারা চা খাচ্ছে তারা সবাই তার চেয়েও বড় বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ। এদের কথা শুনলে মনে হয় একেকজন গ্যালিলিও, প্লেটো, নিউটনের চেয়ে বেশি জানে। বারাক ওবামা এখানে হয়ে যায় বারেক মিয়া, জো বাইডেন হয়ে গেছে জবাই দেন!
তিনি আরও বেশি মন খারাপ করে আবার বাড়ির পথ ধরলেন। সখিনা চিৎকার করে বলল, লবণ কই?
আইনস্টাইন আবার মুদির দোকানে দৌড়ে গেলেন। লবণ আনতে ভুলে গেছেন। গিয়ে দেখেন ১০ টাকার লবণ ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কাস্টমার দোকানির সঙ্গে ঝগড়া করছে, কারণ সে ওজনে কম দিয়েছে।
লবণ বউয়ের হাতে দিয়ে তিনি আবার গবেষণাগারে ঢুকলেন। কিছুতেই মন ভালো লাগছে না। তিনি ফেসবুকে একটা পোস্ট দিলেন, ‘বউ সব সময় আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কী করি বলেন তো বন্ধুরা।’
শত শত কমেন্ট এলো। একটা কমেন্ট দেখে তিনি খুবই অবাক হলেন। সে লিখেছে, বউ ডিভোর্স দিয়ে দেন।
আইনস্টাইন অবাক হয়ে লিখলেন, ডিভোর্স দেব কেন?
আরে ভাই, বউ পরকীয়া করলে ডিভোর্স না দিয়ে উপায় কী? আমি একজন উকিল। পরামর্শ লাগলে আওয়াজ দিয়েন।
সখিনার খালাতো ভাই কুদ্দুস লিখেছে, বউ পালার সামর্থ্য নাই, বিয়ে করছেন কেন মিয়া? বউ পালতে বুদ্ধি লাগে।
স্কুলজীবনের বন্ধুর কমেন্ট, তুই সারা জীবন গাধাই রয়ে গেলি। কবে যে তোর বুদ্ধি হবে!
কলেজজীবনের বন্ধু লিখলেন, তোর মতো গাধার এখনও বউ টিকে আছে, এটা তো দশম আশ্চর্য!
ল্যাংটা কালের এক দোস্ত লিখলেন, শক্ত মাইর লাগা। মাইরের ওপর ওষুধ নাই।
ফেসবুক ফ্রেন্ড রহিম লিখেছেন, আজকাল গাধা না হলে কেউ বিয়ে করে?
এক মহিলার কমেন্ট-নিশ্চয় আপনি কিপটা মানুষ। বউকে কসমেটিকস, গয়নাগাটি কিনে দেন না। বাইরে খেতে নেন না। এমন ব্যাটাদের বউ থাকে না।
কমেন্ট পড়তে পড়তে তিনি হাঁপাতে লাগলেন। তার ঘুম ভেঙে গেল। ঘামে শরীর ভিজে গেছে।
সত্যি সত্যি কোনো বাঙালি মেয়ে বিয়ে করেন নাই, এ আনন্দে তিনি চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন।