× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিজ্ঞানী দাদু

শিবুকান্তি দাশ

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪ ১১:৫৯ এএম

আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৪ ১২:১১ পিএম

অলংকরণ : জয়ন্ত সরকার

অলংকরণ : জয়ন্ত সরকার

রাধানগর গ্রামটি খুব সুন্দর। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। গাছের ডালে পাখিরা গান গায়। ছোট ছেলেমেয়েরা পাখির গান শোনে আর নিজেরাও মনের আনন্দে গান করে। স্কুলের সময় হলে যে যার স্কুলে যায়। বিকাল হলে সবাই খেলাধুলায় মেতে থাকে। এ গ্রামেরই ছেলে শোভন। ক্লাস সেভেনে পড়ে। ফুটফুটে একটা ছেলে। সবুজ শার্ট আর সাদা প্যান্ট, পায়ে কালো সু পরে যখন স্কুলে হেঁটে যায়, খুব মায়া লাগে। মা ওকে পথ এগিয়ে দেয়। তারপর একটা মাঠ পেরিয়ে স্কুল। 

শোভন সেদিন স্কুলে যাচ্ছিল। হঠাৎ এক বৃদ্ধ লোক ওর নাম ধরে ডাক দেন। লোকটা অচেনা হলেও শোভনের মনে হয়েছে দাদুর মতো কেউ। কাছে গিয়ে জানতে চাইলÑ দাদু আমাকে ডেকেছ?

‘হ্যাঁ। তোমাকেই ডাকলাম। তুমি তো আমার নাতির মতো। তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে। তুমি কোন ক্লাসে পড়ো?’ 

‘ক্লাস সেভেনে। আমার স্কুলের সময় হয়ে যাচ্ছে দাদু।’

‘বেশ বেশ। তুমি স্কুলে যাও। কিন্তু এই চকলেটগুলো নিয়ে যাও। তোমার বন্ধুদেরও দিও।’ বলতে বলতে দাদু তার ঝোলায় হাত দিয়ে কয়েকটি চকলেট বের করে শোভনকে দিলেন। চকলেটগুলো যেন কেমন। শোভন হাতে নিয়ে দেখে স্বর্ণের মতো জ্বলজ্বল করছে। যেন আলো বের হচ্ছে। শোভন অবাক হয়ে যায়। চকলেটগুলোর দিকে তাকিয়ে সে যেন অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। কিন্তু মুখে কিছুই বলতে পারছে না। দূর থেকে তা খেয়াল করল শোভনের সহপাঠী রতন। শোভন অজ্ঞান হয়ে পড়ার সাথে সাথে দাদু তাকে কোলে তুলে নিলেন এবং মুহূর্তে উধাও হয়ে যান। রতন নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। তার সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল! সে কী করবে! ভেবে না পেয়ে এক দৌড়ে স্কুলে চলে যায়। রতন সোজা হেডস্যারের রুমে গিয়ে বিষয়টা খুলে বলে।

সকল শিক্ষককে ডাকা হলো। পাঁচ মিনিটের মধ্যে স্যারেরা চলে এলেন হেডস্যারের রুমে। জরুরি বৈঠক চলছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস প্রশাসনের লোকও এসেছে। মাঠের চারদিকে পরিদর্শন করলেন থানার ওসি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার। কারও কোনো আন্দাজ কাজে লাগছে না। শোভনের মা-বাবা ও তার বাড়ির লোকজন স্কুলে পৌঁছাল। কোনো ক্লাস হচ্ছে না। 

সব শিক্ষার্থীকে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কেউ যেন বাইরে যেতে না পারে।

এদিকে শোভন চোখ খুলে দেখতে পায় সুন্দর একটা খাটে সে শুয়ে আছে। দাদু তার সামনে একটা চেয়ারে বসা। স্বাভাবিক তিনি। একটা মোটা বইয়ের পাতায় তার চোখ। শোভন মনে মনে চিন্তা করছে সে কোথায় এলো। একবার জানালা দিয়ে একটু বাইরে তাকিয়ে দেখেছে, মনে হয়েছে সব স্বর্ণের গাছপালা, এমনকি সবুজ ঘাসও।

দাদু এবার উঠে বসেন। শোভনকে ইঙ্গিত করে দাদু বললেন, ‘তোমার খিদে লেগেছে নিশ্চয়ই!’ শোভন উঠে দাঁড়াল দাদুর সামনে। 

‘টেবিলে অনেক খাবার আছে, তুমি ইচ্ছামতো খাও।’ শোভনকে দাদু বলল।

‘তুমি খাবে না?’

‘আমি তো তোমাদের মতো খাই না। আমি যা খাব, তা তুমি খেতে পারবে না।’

শোভন ভাবছে- সে কোনো অচেনা দেশে বা গ্রহে চলে এসেছে। দাদুটা নিশ্চয়ই কোনো বিজ্ঞানী। তিনি আমাকে কেন নিয়ে এলেন বুঝতে পারছি না।

দাদু তখনই বলে ওঠেন, ‘তুমি ঠিকই ধরেছ শোভন। এটা একটা ভিন্ন গ্রহের দেশ। আমি অনেক দিন ধরে গবেষণা করছি তোমাদের বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে চাও না। শুধু খেলতে আর মোবাইলে গেম নিয়ে ব্যস্ত থাকো। সারা রাত মোবাইলের ওপর পড়ে থাকো। ঘুমাতেও পারো না। সকাল হলে ঘুমাতে যাও। তোমরা কিছু খেতেও চাও না। বাবা-মা জোর করেও তোমাদের খাওয়াতে পারে না। এজন্য তাদের সব সময় মন খারাপ হয়ে থাকে।’

‘তুমি কী করে জানলে আমাদের এতসব কথা?’

‘আমি অনেক দিন ধরে তোমাদের দেশে ঘুরে বেড়াই।’

‘আমরা তো বাবা-মার সাথে সব সময় ঘুরতে পারি না। গল্প করতে পারি না। বাবা-মা সকাল হলেই তাদের অফিসে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করেন।

তুমি কি আমাকে সাহায্য করতে পারো?’ 

‘নিশ্চয়ই দাদু। আমিও বিজ্ঞানী হতে চাই। তোমার মতো গবেষণা করতে চাই।’ শোভন দাদুকে জানায়।

‘নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই। তুমি আমার কাজে সাহায্য করবে, আমিও তোমাকে বিজ্ঞানী হতে 

সাহায্য করব- বলে দুজনের মধ্যে অলিখিত চুক্তি হয়ে গেল। ওরা দুজন হাসি হাসি মুখে হাত মিলিয়ে খাবার টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা