প্রচ্ছদ
আরফাতুন নাবিলা
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৪ ১৩:৫৮ পিএম
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৪ ১৯:০৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বর্ষাকালে বৃষ্টিবিলাস হবে না এমনটি হতেই পারে না। বাড়িতে থাকলে বৃষ্টির দিনটি খুব সুন্দর উপভোগ্য হলেও বাইরে বের হলে ঘটনা ঘটে সম্পূর্ণ উল্টো। সেজন্য বাসায় বসে থাকলেও চলবে না। তাই তো বাইরে বের হতে হবে সতর্ক হয়ে, যেন শ্রাবণের মেঘাচ্ছন্ন বা বৃষ্টিভেজা দিনটি উপভোগ করা যায়। এমন দিনের পোশাক কেমন হবে, তা নিয়ে দেখুন বিশেষ প্রচ্ছদ-
‘পাগলা হাওয়ার
বাদল দিনে পাগল আমার মন জেগে ওঠে’ গানের কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যতই এ কথা বলি না কেন,
বৃষ্টিতে যদি হুটহাট আটকে পড়তে হয়, তাহলে শেষমেশ আর রক্ষা নেই। পরনের কাপড় ভিজে একাকার,
গন্তব্যে পৌঁছাতে পৌঁছাতে মন একদম খারাপ। এটা অবশ্য প্রতি বর্ষারই পরিচিত একটি দৃশ্য।
তবে কিছু দিন এই অসুবিধা থাকলেও বৃষ্টি অনেকের কাছেই বেশ উপভোগ্য। বারান্দায় চা বা
কফি নিয়ে বেশ কিছুটা সময় উপভোগ করা, প্রিয়জনের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, আলমারি থেকে পছন্দের
নীল শাড়িটা পরে নিজের মতো কিছুটা সময় কাটানোÑ এসবই চলে বৃষ্টির দিনে। তবে এ কথা ঠিক
যে, বাইরে বের হওয়ার আগে যদি কিছু বাড়তি সতর্কতা মেনে চলা হয়, তাহলে বৃষ্টিকে খুব একটা
বিরক্তিকর লাগবে না।
বৃষ্টির দিনে
যেমন পোশাক
বর্ষাকালের বৃষ্টি কখন আপনাকে ভিজিয়ে দেবে এ কথা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। আর তাই তো কাপড় যদি মোটা বা ভারী হয়, তাহলে ভিজে গেলে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে আপনাকেই। বর্ষাকালে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকে। এজন্য পোশাক ভিজে গেলে সহজে শুকায় না। এই ঋতুতে তাই এমন পোশাক বেছে নিতে হবে যা শুকিয়ে যাবে সহজেই। এমন দিনে পরার জন্য জর্জেট, সিল্ক, শিফন, হাফ সিল্ক, ভিসকস, ক্রেপ সিল্ক বা সাটিন কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাক হবে আদর্শ।
শাড়ি পরতে চাইলে
বৃষ্টির দিনে কষ্ট হবে জেনেও শাড়ির প্রতি গভীর মায়া আর ভালোবাসা থেকেই মেয়েরা শাড়ি পরতে বাদ দেয় না। কিন্তু এই ভালোবাসাও বিড়ম্বনার হতে পারে। বিড়ম্বনা কমাতে তাই হাফ সিল্ক, সিল্ক, শিফন, জর্জেট বা সাটিনের উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। সুতি শাড়ি পরলে সহজে শুকাবে না। অস্বস্তিতে পড়বেন। আর এ সময় সুতি ব্লাউজের পরিবর্তে সিনথেটিক ব্লাউজ বেছে নিন। বৃষ্টিতে ভিজলেও সহজে শুকাবে এবং বাড়ি ফিরে শাড়ি সহজে ধুয়েও নিতে পারবেন।
কাপড়ে রঙ উঠবে
না তো?
খুব শখ করে পছন্দের
পোশাকটি পরে বাইরে বের হলেন, কিন্তু বৃষ্টির পানিতে ভিজে রঙ উঠে একাকার হয়ে গেল! মনটা
কী ভীষণ খারাপ হবে বলুন তো? বর্ষার এ সময়ে পছন্দের পোশাকটি বাইরে পরার উপযোগী কি না
সেটা বোঝার জন্য পোশাকের এক কোণা সামান্য সাবান পানিতে বা শুধু পানিতে ভিজিয়ে রাখুন
কিছুক্ষণ। কয়েক মিনিট পর হাত দিয়ে ঘষে দেখুন রঙ ওঠে কি না। না উঠলে তো ভালো, কিন্তু
যদি ওঠে, তাহলে এ সময় সেই পোশাক না পরাই ভালো।
পোশাকের রঙ
বৃষ্টির দিনে
সাদা বা কালো রঙের পোশাক বাছাই করা উচিত নয়। কারণ এই দুই রঙের কাপড় বৃষ্টির পানিতে
বা কাদা লেগে ছোপ ছোপ দাগ পড়তে পারে। এ আবহাওয়ায় নীল, সি গ্রিন, লেমন, সবুজ, মেরুন,
কমলা রঙের পোশাক বেছে নিতে পারেন। বর্ষায় এক কালারের বদলে ছাপা নকশার কাপড় পরা ভালো।
এতে হঠাৎ বৃষ্টি পড়লে ভিজে গেলেও অস্বস্তি লাগবে না।
পোশাকের কাটছাঁট
ও প্যাটার্ন
লম্বা পোশাক এ সময় এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ কাদা ছিটে পোশাক নষ্ট হতে পারে দ্রুত। তখন সেই দাগ উঠানোও কষ্টের হয়ে যাবে। এজন্য খাটো পোশাক পরতে পারেন। সালোয়ার ঢিলেঢালার বদলে আঁটসাঁট হলে ভালো। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা অফিসে যাওয়া তরুণ-তরুণীরা বর্ষায় স্বাচ্ছন্দ্য বেশি খোঁজেন। তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে মিড লেংথ টিউনিক। কোমর থেকে একটু ফ্লেয়ার করা এই টিউনিকগুলো ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা বেছে নিচ্ছেন। হাতের কাজ ছাড়াও স্মোক, র্যাফল, তাই বেল্ট ও হাইনেকের কম্বিনেশনের এই টিউনিকগুলো এই সিজনে বেশ মানিয়ে যায়। এই পোশাকগুলো বৃষ্টিতে ভিজলেও অস্বস্তিতে ফেলবে না।
পোশাকের নকশা
বর্ষার সময় নানা
ধরনের ফুল, মেঘ, বৃষ্টি নিয়ে প্রচুর কাজ হয় অনলাইন ও অফলাইনে। শাপলা, পদ্ম, সূর্যমুখী,
অপরাজিতা, ডেইজি, মধুমঞ্জরির মতো নানা ফুল নিয়ে কাজ হচ্ছে এখন। ভ্যান গগের স্টারি নাইট,
ইসলামিক নানা মোটিফ নিয়ে করা কাজগুলোও এখন বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ব্লক, বাটিক, স্ক্রিন
প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, এমব্রয়ডারির মাধ্যমে এসব কাজ নিয়মিত করা হচ্ছে। বৃষ্টিপ্রেমী
হোন বা না হোন, সচেতন হয়ে পোশাক বাছাই করলে বৃষ্টির দিনে বাইরে বের হতে খুব একটা মন্দ
লাগবে না।