রাজু আহমেদ, রাজশাহী
প্রকাশ : ১১ মে ২০২৪ ১৬:২৭ পিএম
আপডেট : ১১ মে ২০২৪ ১৬:৩৫ পিএম
শেখ রাসেল-২৫ নামরে নতুন জাতের ধান মাঠপর্যায়ে প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন হয়েছে। সম্প্রতি রাজশাহীর বাগমারার শ্রীপুর এলাকায়। প্রবা ফটো
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বিনা ধান-২৫-এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। এই ধানটির নামকরণ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে। স্বল্প সময়ে ফলন ভালো হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ জুগিয়েছে এই নতুন জাতের ধান। বাসমতি চালের বিকল্প হিসেবে এ ধান চাষাবাদে চিকন চাল আমদানি কমাতে পারে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩৫০ চাষি প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে এ ধান চাষাবাদ করেছেন। বিনা ধান-২৫ বোরোর উন্নত একটি নতুন জাত। নতুন উদ্ভাবিত এই ধানের জাতটি সর্বাধিক লম্বা ও সরু। এর চালের আকার চিকন ও লম্বা। বিদেশ থেকে যে বাসমতি চাল আমদানি করা হয়, এটাও অবিকল সেই চালের মতো। এজন্য এই চালের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি। বাজারমূল্যও বেশ ভালো। উৎপাদন ব্যয় অন্য ধানের মতোই। তবে ফলন অন্য ধানের চেয়ে ভালো হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এ ধানের চাল রপ্তানিও করা যাবে। উচ্চফলনশীল হলেও ধানটি হাইব্রিড নয় বলে দাবি কৃষি বিভাগের।
যোগীপাড়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘যদি প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তাহলে বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২৫ মণ ধান উৎপাদন হবে। এই প্রথম নতুন জাতের বিনা ধান-২৫ চাষাবাদ করে বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানগাছের শিষপ্রতি ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ ধান ধরেছে, যা অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশি।’
উপজেলার মজিদপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, ‘নতুন জাতের এই ধান পরীক্ষামূলক চাষাবাদে এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিনা-২৫ ধানকে মূলত শেখ রাসেল-২৫ ধান নামে নামকরণ করা হয়েছে। ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেলের জন্মদিনে এ ধান অবমুক্ত করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলায় এ জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ১০-১৫ দিনের মধ্যেই ধান কাটা-মাড়াই শেষ হবে।
জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, ‘এ বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিনা-২৫ ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আশানুরূপ ফলনও মিলছে। আগামীতে বিনা ধান-২৫ (শেখ রাসেল ধান-২৫) চাষাবাদ আরও বাড়বে। বোরো মৌসুমে এ ধানের চাষ করা হয়। জীবনকাল ১৩৮-১৪৮ দিন। প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ৭ দশমিক ৬ মেট্রিক টন। চালের আকার সরু ও চিকন।’