× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ধানই যখন টাকা

সাইদুর রহমান আসাদ, সুনামগঞ্জ

প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪ ১৪:৩১ পিএম

আপডেট : ০৫ মে ২০২৪ ১৪:৩৬ পিএম

ধানের বিনিময়ে শাকসবজিসহ বিভিন্ন পণ্য কিনছেন কৃষকরা। প্রবা ফটো

ধানের বিনিময়ে শাকসবজিসহ বিভিন্ন পণ্য কিনছেন কৃষকরা। প্রবা ফটো

টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে না কোনো পণ্য। ধানের বিনিময়ে মিলছে অন্য যেকোনো পণ্য। সারা দিন ভ্যানগাড়িতে এভাবে ধানের সঙ্গে শাকসবজিসহ বিভিন্ন পণ্য বিনিময় করছেন বিক্রেতারা। অনেকে অস্থায়ী দোকানঘরও বসিয়েছেন। এমন ব্যতিক্রমী ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী দোকানপাটে পণ্যের বিনিময় চলছে এখন সুনামগঞ্জ জেলাজুড়ে।

কেবল চলতি বছর নয়, প্রতি বছরই এ সময় এমন ঘটনা ঘটে। বৈশাখের শুরু থেকে ধানের বিনিময়ে টমেটো, শসা, ঝিঙা, আলুসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রির ঘটনা ঘটে হাওরাঞ্চলে। শুধু সবজি নয়; আইসক্রিম, এমনকি গরম গরম জিলাপিও বিক্রি হচ্ছে। বৈশাখজুড়েই অব্যাহত থাকবে এই আয়োজন।

হাওরে ভালো ধান হলে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। তখন নির্দিষ্ট সময়ে এ রকম লেনদেন চলে। জেলায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই প্রতিটি ধানের খলায় চলছে এমন পণ্য বিনিময়ের আয়োজন।

বছরের এই সময়ে দম ফেলার ফুরসত নেই কৃষকের। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বাজারে যাওয়ার সময়ও নেই তাদের। দিনভর ধানের খলায়, মাড়াই, ছিটা ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ধানের বিনিময়ে এভাবে প্রয়োজন ও শখের পণ্য পাওয়ায় খুশিই হন তারা।

হাওরে প্রায় শেষের দিকে ধান কাটা ও মাড়াই। খলায় শুকিয়ে সিংহভাগ কৃষকের গোলায় তোলার কাজও শেষ। শুরু হয়েছে বিভিন্ন স্থানে ধানের বদলে পণ্য বিনিময়।

সম্প্রতি তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরপাড়ে ধানের এক খলায় আলাপ হয় বিক্রেতা গণি মিয়ার সঙ্গে। তিনি একটি ভ্যানগাড়িতে বিক্রি করছেন শুঁটকি, সিদল, আলু, টমেটো, শসা, ঝিঙা, পেঁয়াজ, রসুনসহ আরও নানা জাতের সবজি। কথায় কথায় জানালেন, ১ কেজি ধানে ১ কেজি টমেটো, ২ কেজি ধানে ১ কেজি কাঁচা মরিচ, একই দরে ১ কেজি চিচিঙ্গা, ১ কেজি ধানে ১ কেজি ঢেঁড়স, ১ কেজি ধানে ৫০ গ্রাম সিদল ও ৩ কেজি ধানে ১ কেজি আলু বিক্রি করছেন। তিনি আরও জানান, বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই ভ্যানে শাকসবজি বিক্রি করছেন। যেখানে ধানের খলা, সেখানেই তার ভ্যান যায়। কৃষক-কৃষাণীরা তার কাছ থেকে ধানের বিনিময়ে এসব জিনিস নেন। অনেকে টাকা দিয়েও শাকসবজি কেনেন তার কাছ থেকে।

ঝালমুড়ি ও আইসক্রিম বিক্রেতা সুহেল মিয়া জানান, প্রতি কেজি ধান ২০ টাকা হিসেবে আইসক্রিম ও ঝালমুড়ি বিক্রি করছেন তিনি। এভাবে তিনি প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ মণ ধান সংগ্রহ করতে পারেন।

বড়দল গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. আকরামিন মিয়া বলেন, ‘আমরা বৈশাখে ধান দিয়েই মাছ, শাকসবজি কিনে থাকি। সবাই হাওরে ও ধানের খলায় কাজ করছে। বাজারে যাওয়ার সময় নাই। এসব ভ্রাম্যমাণ দোকান বাড়ির কাছে ধানের খলায় আসায় সুবিধাই হয়। ধান-চাল তো ঘরেই থাকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তাদের কাছ থেকে ধান দিয়ে নিয়ে নিই।’

খলার পাশে অস্থায়ী দোকান করে গরম গরম জিলাপি বিক্রেতা মো. মাসুক মিয়া বলেন, ‘১২ থেকে ১৫ কেজি ধানের বিনিময়ে এক কেজি গরম গরম জিলাপি বিক্রি করি। ধান ভালো হলে ১২ কেজি আর একটু কম শুকানো হলে ১৫ কেজি রেখে ১ কেজি জিলাপি দিচ্ছি।’ তিনি জানান, প্রতি বছর বৈশাখে এক মাসের জন্য এ রকম অস্থায়ী দোকানঘর বসিয়ে জিলাপি বিক্রি করেন। প্রতি বছর এভাবে ২০ থেকে ২৫ মণ ধান সংগ্রহ করতে পারেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা