× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল

ঘর সামলে সমানতালে বাইরেও কাজ করেন নারী

সাইদুর রহমান আসাদ, সুনামগঞ্জ

প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪ ১০:৩৭ এএম

আপডেট : ০১ মে ২০২৪ ১০:৩৮ এএম

ঘর সামলে সমানতালে বাইরেও কাজ করেন নারী

হাওরে ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। বছরের এই সময়ে অবসর বা দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। ২ লক্ষাধিক পুরুষ শ্রমিক ও ১ হাজার হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটলেও খলায় ধান শুকানোসহ গোলায় তোলার জন্য প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ করছেন নারীরা। আর নারী-পুরুষের শ্রমেই হাওরে এবার ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ধান উৎপাদন হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, এবার ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যা গতবারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬২ হেক্টর বেশি। এবার ১৩ লাখ ৭ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় ৬৮ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। এবার ৯ লাখ ১৩ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যার বাজারমূল্য ৪ হাজার ১১০ কোটি টাকা।

জেলায় মোট ৪ লাখ কৃষক পরিবার রয়েছে। এরা সরাসরি হাওরে ধান চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা জমিতে বীজ বপন, রোপণ ও ধান কাটার কাজ করেন। নারী সদস্যরা গবাদি পশুর জন্য খড় শুকানো, খলায় ধান শুকানো, ওড়ানো (ছাঁটা ধান আলাদাকরণ), গোলায় তোলার জন্য প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ করেন। এভাবেই নারী-পুরুষের সম্মিলিত শ্রমে মজবুত হচ্ছে হাওরের অর্থনীতি।

শনির হাওর, মাটিয়ান হাওর, খরচার হাওর, ঝাউয়ার হাওর ও দেখার হাওরের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, হাওরে ধান কাটছেন পুরুষ এবং মাঠে কাজ করছেন নারী। পুরুষ ধান কাটলেও নারী মেশিনে মাড়াই, খড় নাড়া, খলা তৈরি, শুকানোসহ নানা কাজ করছেন। তাদের সঙ্গ দিচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা। শুধু চাষি পরিবারের নারীরাই নন, শ্রমজীবী নারীরা কাজে নেমেছেন হাওরে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈশাখী মৌসুমে ধান কাটার সময় হাওরের চাষি পরিবারের নারী-পুরুষরা সাধারণত বাড়িতে থাকেন না। পুরুষরা হাওরের ভেতর ধান কাটার কাজ করেন। নারীরা সেই ধান মাড়াই, গবাদি পশুর জন্য খড় সংগ্রহ, ধান শুকানো, খলাঘর তৈরিসহ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। অনেক নারী পরিবারের পুরুষের সঙ্গে হাওরের কান্দায় সাময়িক তৈরি খলাঘরেও অবস্থান করেন। কৃষক পরিবারের পাশাপাশি দরিদ্র ও শ্রমজীবী পরিবারের নারীদেরও শ্রমিক হিসেবে হাওরে নেমে কাজ করতে দেখা গেছে।

তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা আজমিলা বেগম। এ গ্রামের হারিছ আলীকে বিয়ে করে ৪৭ বছর আগে এখানে আসেন। যুক্ত হন গৃহস্থালি কাজে। একই সঙ্গে বৈশাখ মাসে খলায় ধান-খড় শুকানো ওড়ানো ও ধান গোলায় তোলার কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘সারা বছর ঘরের কাজ করি। বৈশাখ মাসে কাজ বাড়ে। সকালে রান্না শেষ করে পরিবারের সবাইকে খাওয়াই। এরপর খলায় যাই। ধান শুকানো, ওড়ানোর কাজ করে গোলায় তুলি। একই সঙ্গে গরুর খড় শুকিয়ে বাড়িতে নিই।’

একই গ্রামের মোছাম্মত শাহেনারা বেগম বলেন, ‘প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। ধান কাটার শুরুর দিন থেকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খলায় থাকতে হয়। ব্যাপারী দিয়ে জমি থেকে ধান কেটে খলায় আনা হচ্ছে। পরে সেগুলো মাড়াই করে খলায় শুকাইছি। গরুর লাগি খড় শুকাইতাছি।’

কলাগাঁও গ্রামের নাছিমা বেগম বলেন, ‘রোদের তেজ বেশি। তবু মনে আনন্দ। এবারে সোনার বৈশাখ হয়েছে। ধান শুকিয়ে, উড়িয়ে বাড়ি তুলছি। খড়ও শুকিয়েছি। কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।’

ধুতমা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কৃষক তনু মিয়া বলেন, ‘নারীরা বেশি কাজ করে। বাড়িতে রান্নাবান্না করা লাগে। খলায়ও গেরস্থি করা লাগে। আমরাতো আসরের আজান হলে বাড়ি চলে যাব। তখন কোনো কাম নাই। আর নারীদের বাড়িত গিয়েও বিশ্রাম নাই।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা