× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অপরিপক্ব তরমুজের কেজিও ৮০ টাকা

মধ্যাঞ্চলীয় অফিস

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৭:৪২ পিএম

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৮:২৯ পিএম

রমজানে ব্যাপক চাহিদা ঘিরে দাম পেতে ক্ষেত থেকে তোলা হচ্ছে অপরিপক্ব তরমুজ। কৃষকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা পিস হিসেবে কিনলেও চড়া দামে ক্রেতাদের তা কিনতে হচ্ছে কেজিতে। প্রবা ফটো

রমজানে ব্যাপক চাহিদা ঘিরে দাম পেতে ক্ষেত থেকে তোলা হচ্ছে অপরিপক্ব তরমুজ। কৃষকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা পিস হিসেবে কিনলেও চড়া দামে ক্রেতাদের তা কিনতে হচ্ছে কেজিতে। প্রবা ফটো

গরমে রোজায় মৌসুমি ফল তরমুজের চাহিদা বাড়ে স্বাভাবিকভাবেই। তবে মুসলিম উম্মাহর পবিত্র এই মাসে ইফাতারের একটি অনুষঙ্গ ফলটির দাম বাড়ে যেন অস্বাভাবিকভাবেই। ব্যাপক চাহিদা ঘিরে দাম পেতে ক্ষেত থেকে তোলা হচ্ছে অপরিপক্ব তরমুজ। কৃষকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা পিস হিসেবে কিনলেও ক্রেতাদের তা কিনতে হচ্ছে কেজিতে। কিশোরগঞ্জে সেই পরিপক্ক তরমুজও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। যেটিকে ক্রেতারা বলছেন ‘অস্বাভাবিক দাম’। কারাসাজিতে অসাধু ব্যবসায়ীরা চড়া লাভ করলেও সে তুলনায় উৎপাদনকারী কৃষক পান না কিছুই। আর বর্তমান চড়া বাজারে তরমুজ কিনে খাওয়ার সবার সাধ্যে বিশেষ করে নিম্নবিত্তদের নেই। তাই অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে সরকারকে বাজার মনিটরিংয়ে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান ভোক্তাদের।

কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি অফিস জানায়, সাধারণত ডিসেম্বর মাসে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফল ওঠে এপ্রিলে। এরপর মে মাসজুড়ে মাঠে তরমুজ থাকে। সেই মাসই ভরা মৌসুম। পরিপক্ক তরমুজ উঠতে উঠতে চৈত্র মাস বা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ হয়। কিন্তু চাষিরা আগেভাগেই অপরিপক্ব তরমুজ তুলে বেশি লাভের আশায় বিক্রি শুরু করে দিয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের স্টেশন রোড ফল বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ক্রেতারা বলছেন, রমজানে সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। কৃষকের কাছ থেকে পিস হিসেবে তরমুজ কিনে কেজি হিসেবে বিক্রি করছেন তারা। তাও চড়া দামে। ফলে অনেক ক্রেতার ইচ্ছে থাকার পরও দাম বেশির কারণে কিনতে পারছেন না।

অপরদিকে বিক্রেতারা বলছেন, মোকামেই যদি কিনতে দাম বেশি পড়ে, তাহলে তো বেশি দামে বিক্রি করতেই হবে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একজন কৃষক পাঁচ থেকে ছয় কেজির একটা তরমুজের দাম পান সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা। কিশোরগঞ্জে আনতে পরিবহন খরচ তরমুজপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০ টাকা। এরপর তিন দফা হাত বদলে সেই তরমুজ ক্রেতাদের কিনতে হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় তরমুজের আগাম ফলন এবার বেশ ভালো। রোজার চাহিদাকে মাথায় রেখে কৃষকরা এই তরমুজ ফলিয়েছেন।

স্টেশন রোডের এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, গত বছর এ সময় ১০০ তরমুজ ১২-১৩ হাজার টাকা করে আড়ত থেকে কেনা গেছে। এবার দ্বিগুণ দাম। তারপরও রোজার আগের দিন পাওয়া যায়নি। সে কারণে অস্বাভাবিক দামে কেনাবেচা হচ্ছে মৌসুমি ফলটি।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরে রোজার আগে প্রতি ১০০ তরমুজ কিনতে হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকায়, যা তিন-চার দিনের ব্যবধানে ৫-৬ হাজার টাকা বেড়েছে। তাই খুচরায় ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিন-চার দিন আগেও ৭০ টাকায় তরমুজ বিক্রি করেছেন তারা।

পাইকারি ফল বিক্রেতা আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে। তাই আগেই তরমুজ বাজারে এসেছে। কারণ রোজাদাররা টাকা বেশি দিয়ে হলেও একটু ফল মুখে দিতে চান। ইফতারে নতুন নতুন ফল রাখতে চান। সঙ্গে আবার গরমও পড়তে শুরু করেছে। সব মিলে তরমুজের বাম্পার চাহিদা।’

তিনি বলেন, ‘এখন শুধু যারা আগে আবাদ করেছিলেন, তারা আগে তরমুজ তুলতে পারছেন। আবার বাড়তি লাভের আশায় অনেকে অপরিপক্ব তরমুজ বিক্রি করে দিচ্ছেন। আসলে কয়েক দিন পর যেসব তরমুজ আসবে, সেগুলো পরিপক্ক হবে।’

বড়বাজারের ব্যবসায়ী সাব উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এখনও তরমুজের মৌসুম আসেনি। রোজার কারণে চাষিরা আগেভাগে তরমুজ তুলে ফেলছেন। যে কারণে অন্য বছর এ সময়ে ৫০-৫৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত। এখন বাজারে যে তরমুজগুলো দেখা যাচ্ছে, তা আকারে ছোট, তিন কেজির মধ্যে বেশি। বড় তরমুজ নেই বললেই চলে। এসব তরমুজের বেশিরভাগই অপরিপক্ব।’

তবে চড়া দামে কেজিতে তরমুজ বিক্রিতে প্রশাসনের কড়া নজরদারির কথা বলছেন ক্রেতারা। পিস হিসেবে তরমুজ কিনতে চান তারা।

ক্রেতা কাশেম মিয়া বলেন, ‘৮০ টাকা কেজি দরে চার কেজি ওজনের একটি তরমুজ কিনেছি। দামটা অনেক বেশি। বাড়ির বাচ্চারা বায়না ধরেছে তরমুজ খাবে, কিছু করার নেই যত দামই হোক কিনতে হয়েছে।’

বড়বাজার থেকে তরমুজ কিনতে আসা ক্রেতা নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘রোজা বলেই তরমুজ কিনতে এসেছি। তবে দাম অনেক বেশি চাচ্ছে। তা ছাড়া তরমুজগুলো অপরিপক্ব। বেশি বড় হয়নি। কেজি দরে একটি তরমুজ কিনতে গেলে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পড়ে যাচ্ছে। যদি দামটা ৪০-৫০ টাকা কেজি হতো তাহলে আমাদের মতো ক্রেতাদের সুবিধা হতো।’

কাশেম ও নুর মোহাম্মদের মতো অন্যান্য ক্রেতাদেরও ভাষ্য, অনিয়ন্ত্রিত এই বাজারে শুধু তরমুজ নয়, অন্যান্য ফলমুলে দামও চড়া। যার অধিকাংশ মানুষের কিনতে দুবার ভাবতে হয়, হিমশিম খেতে হয়। তাই মানুষের কষ্টের কথা ভেবে অসাধু ব্যবসায়ী ও বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সরকারের আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা