× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রাজশাহীতেই ২০ হাজার কোটি টাকার কৃষিবাজার

রাজু আহমেদ, রাজশাহী

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:১৫ পিএম

আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:২২ পিএম

রাজশাহীতেই ২০ হাজার কোটি টাকার কৃষিবাজার

রাজশাহীতে গত ১০ বছরে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৫ শতাংশ। প্রধান ১০টি ফসল যে পরিমাণ উৎপাদন হয়- তার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা, যা গত ১০ বছর আগে ছিল প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ১০ বছরের প্রতিবেদন এবং ফসলের বাজার দর বিশ্লেষণ করে এমন তথ্যই মিলেছে।

রাজশাহী জেলায় বর্তমানে ৪ লাখ ১৫ হাজার পরিবার কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার বাইরে শিক্ষিত যুবকরা উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসছেন কৃষিকাজে। বিনিয়োগ করছেন বিপুল অর্থ। আর এই উদ্যোক্তাদের হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে রাজশাহীর কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি।

২০২৩ সালে রাজশাহী জেলায় মোট ৩ লাখ ৯৯ হাজার ১০৪ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। যেখানে ১০টি ফসলের উৎপাদন হয় ৩২ লাখ ৯৯ হাজার ৩০৪ টন, যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৯ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। ১০ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালে রাজশাহী জেলায় আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর। যেখানে এই ১০টি ফসলের উৎপাদনের পরিমাণ ২৪ লাখ ৪২ হাজার ৩৭৬ টন। যার তৎকালীন বাজার মূল্য ছিল ৪ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা।

প্রধান ১০টি ফসলের মধ্যে রয়েছে ধান, সবজি, পেঁয়াজ, আলু, সরিষা, গম, ভুট্টা, পাট, পান ও আম। আলুর বাজার সবচেয়ে বড়। উৎপাদিত আলুর বাজার ৫ হাজার কোটি টাকার (গড়ে ৫০ টাকা কেজি হিসেবে)। এর পরের অবস্থানে রয়েছে চাল। যার বাজার ৪ হাজার কোটি টাকার (গড়ে ৫৫ টাকা কেজি হিসেবে)। পানি ও পরিচর্যার বেশি প্রয়োজন হয় ধান চাষে। তাই ধানের চাইতে আলু বা অন্য অধিক লাভজনক ফসলের দিকে ঝুঁকছেন কৃষি উদ্যোক্তারা। 

আরও প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমি উৎপাদনের আওতায় আনতে মাঠে নেমেছে কৃষি অধিদপ্তর। এই জমি রয়েছে পদ্মার চরে। পবা উপজেলার হাসেম আলী বলেন, পবা হাটে তার একটি দোকান ছিল। তিনি সেই দোকান ছেড়ে দিয়ে এখন কৃষিজমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করছেন। প্রতি বিঘা জমি তিনি ২৫-৩০ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে আলু, সরিষাসহ সবজি চাষ করেন। তানোর উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মো. রহিম বলেন, শুধু ফসলের দাম বেড়েছে দেখলে হবে না। লেবার খরচ, কীটনাশক, সার ও বীজের দাম বেড়েছে। এখন প্রতি বিঘায় যে ধান উৎপাদনে খরচ হয় ১২ হাজার টাকা, ১০ বছর আগে তাতে খরচ হতো ৭ হাজার টাকা। তবে ওই একই জমিতে উৎপাদন বেড়েছে। 

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, জেলায় উৎপাদিত প্রধান ১০টি ফসলের বাজার দর এখন প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। আম ও পানের মতো ফসলগুলো রাজশাহী থেকে সরাসরি বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে এই অর্থনীতির আকার আরও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় জমিতে সেচের পাশাপাশি উন্নত জাতের বীজ-সার সরবরাহ করা হচ্ছে, কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে পরামর্শ। এভাবে আমরা এক ফসলি জমিগুলোকে তিন ফসলি জমিতে রূপ দিতে পেরেছি। তা ছাড়া কৃষিতে আধুনিক ব্যবস্থাপনার ফলে জমির উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি উদ্যোক্তারাও এখন প্রতিকূল আবহাওয়ায় করণীয় সম্পর্কে সজাগ। তারা আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়ে রাখছেন। সেই সঙ্গে নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে ঝুঁকছেন কৃষি উদ্যোক্তারা; যা একসময় এই অঞ্চলে কখনোই উৎপাদন হয়নি এমন ফল বা ফসল তারা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করছেন। এর মধ্যে মাল্টা, কমলা, ড্রাগন ফল, বিট, কপির মতো ফসল উল্লেখ যোগ্য। তা ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা, পেঁপে ও কুল চাষ কৃষকদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।

কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা আরও জানান, বহু বেকার যুবক কৃষিতে ঝুঁকছেন। তারা কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন। রাজশাহীতে বড় কোনো শিল্প-কারখানা না থাকায় এই অঞ্চলের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান কৃষিনির্ভর। যেখানে নতুন করে আশা জাগাচ্ছে শিক্ষিত যুবকদের বিনিয়োগ। পর্যায়ক্রমে সকল কৃষি উদ্যোক্তা ফসল উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন। কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি যা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে এবং জিডিপির আকার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখে চলেছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা