× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চাষিরা ঝুঁকছেন নাবি জাতের আম চাষে

মেহেদী হাসান শিয়াম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৩ ১০:১৪ এএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি বাগানে ঝুলছে গৌড়মতি আম। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি বাগানে ঝুলছে গৌড়মতি আম। সম্প্রতি তোলা। প্রবা ফটো

বাজারে যখন আমের সরবরাহ কমে যায়, তখনই পাকতে শুরু করে গৌড়মতি, বারি-৪, বারি-১১, বারি-১৩ ও আশ্বিনা জাতের আম। মৌসুমের শেষে হওয়া এসব আমকে বলা হয় নাবি জাতের আম। এসব জাতের আম কম চাষাবাদ আর মৌসুমের শেষে বাজারে পাওয়া যায় বলে আশানুরূপ দাম পান চাষিরা। তাই নাবি জাতের আমবাগানে আগ্রহ বেড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষিদের। 

চাষিরা বলছেন, বর্তমানে জেলায় আমের বাগানগুলোর মধ্যে সিংহভাগই নাবি জাতের আম। সাধারণত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত আমের ভরা মৌসুম। এই সময়ে ফজলি, খিরশাপাতি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হাঁড়িভাঙা, নাগফজলিসহ গুটি জাতের আমগুলো বাজারে পাওয়া যায়। বাজারে যখন আমের সরবরাহ কমে যায়, তখনই নাবি জাতের আম পাকতে শুরু করে।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমিতে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ২৮৫ গাছে আশ্বিনা আম হয়, ২ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৩০ হাজার ৫৫৫ গাছে আম্রপালি হয়, ২৫২ হেক্টর জমিতে ২০ হাজার ৭০৫ গাছে বারি-১১ হয়, ৭৮৬ হেক্টর জমিতে ৬৬ হাজার ১৪০ গাছে বারি-৪ হয়, ১২৮ হেক্টর জমিতে ২১ হাজার ৯৫০ গাছে গৌড় আম, ৪০০ হেক্টর জমিতে ৪৪ হাজার ১২৫ গাছে কার্ডিমন আম হয়। এ ছাড়া আরও প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের নাবি জাতের আম চাষ হয়।

জেলার বাজারগুলোতে গৌড়মতি আম বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায়। বারি-৪ আম বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা, আশ্বিনা আম বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত, আম্রপালি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০, বারি-৭ আম বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া ইতোমধ্যে বাজার থেকে ব্যানানা আম বিক্রি শেষের পথে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করবে নাবি জাতের কার্ডিমন আম। 

নাবি জাতের আমচাষি কামরুল ইসলাম বলেন, গাছ রোপণের কয়েক বছরের মধ্যেই নাবি জাতের চারাগুলোতে আম আসতে শুরু করে। মৌসুমের শেষে আমগুলো পাকে, তাই বাজারে দামও বেশি পাওয়া যায়। ফলে এসব জাতের আম চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। 

কামরুল ইসলাম বলেন, গাছে মুকুল আসা থেকে শুরু করে আম নামানো পর্যন্ত গাছগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। প্রচলিত জাতের আমগুলো বাজারে বিক্রি শেষে নাবি জাতের আমগুলো পাকে। এই সময়ের মধ্যে বাড়তি পরিচর্যা খরচ গুনতে হয় বাগানমালিকদের। বাজারে যখন আম থাকে না, তখন নাবি জাতেরই আম দিয়ে বছরের বাকিটা সময় চাহিদা পূরণ হয়।

জেলার কল্যাণপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক বিমল কুমার প্রামাণিক বলেন, নাবি জাতগুলোর মধ্যে গৌড়মতি, বারি-১১, কার্ডিমন, বারি-৪ আম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে গৌড়মতি। গত পাঁচ বছরে হর্টিকালচার থেকে ৪৮ হাজার ও অনান্য নার্সারি থেকে আরও এক লাখ গৌড়মতির চারা বিক্রি হয়েছে। 

বিমল কুমার বলেন, নাবি জাতের আমবাগান যারা গড়ে তুলেছেন, তারা এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হননি। এমনকি আমরা কোনো খবরও পাইনি। নাবি জাতের আমগুলোর বাজারমূল্য আর চাহিদা বেশি থাকায় জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রতি বছরই নাবি জাতের চারাগুলোর দাম কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে চাষিরা কম দামে চারা কিনে আমের বাগান করতে পারেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক বুলবুল আহমেদ বলেন, প্রচলিত আমের মৌসুম শেষে বাজারে আম থাকে না, তখন চাহিদা মেটাতে বাজারে নামে নাবি জাতের আম। অতুলনীয় স্বাদ আর বাজারে চাহিদা থাকায় আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন বাগানমালিকরা। ফলে জেলার বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠছে নাবি জাতের আমের বাগান।

বুলবুল আহমেদ বলেন, জেলায় প্রায় ৩৮ হাজার হেক্টর আমবাগানের মধ্যে ২০ হাজার হেক্টরই নাবি জাতের। সম্প্রতি প্রচলিত আমের জাতগুলোর বাগান বাড়ছে না, তবে নাবি জাতের আমের বাগান সদর উপজেলার একাংশ, নাচোল ও গোমস্তাপুরে বাড়ছে। দেশের মানুষের চাহিদার পাশাপাশি বিদেশের বাজারেও এই জাতের আমের চাহিদা রয়েছে। তবে ঝামেলায় না গিয়ে আমচাষিরা দেশীয় বাজারেই নাবি জাতের আম বিক্রি করছেন। এসব আম গাছ থেকে নামানোর পর সপ্তাহখানেকের মধ্যে নষ্ট হয় না, বাজারে বিক্রিও হয় ভালো দামে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা