প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩ ১৮:৩৩ পিএম
আপডেট : ৩১ মে ২০২৩ ১৮:৪৬ পিএম
দেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ দশমিক ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী। যাদের ৭০ শতাংশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কৃষিতে শ্রম দেওয়া এসব নারীর ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ কোনো পারিশ্রমিক পান না। বাকি ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ বাজারমূল্যের চেয়ে কম পারিশ্রমিক পান বলে উল্লেখ করেছেন অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক আবুল বারকাত।
বুধবার (৩১ মে) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জাতীয় বাজেটে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে অংশীদারত্ব, বাজেট ভাবনা ও মনিটরিং’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
মানবাধিকারকর্মী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত, বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিকুজ্জামান ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, জাতীয় আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।
সেমিনারটির আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার।
আবুল বারকাত বলেন, ’জাতীয় বাজেটে পারিবারিক কৃষি বলতে কিছুই নেই। সেখানে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্যও নেই। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পারিবারিক কৃষি বা ক্ষুদে প্রান্তিক কৃষকের জন্য বরাদ্দ কত তার সঠিক হিসাব যেমন নেই, ঠিক জনসংখ্যা কত তারও হিসেব নেই। যদিও খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, কৃষি সহায়তা কার্যক্রম, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার ও জাতীয় কৃষিনীতি বাস্তবায়নে অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন নিয়ে কথা বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ’দেশে পারিবারিক কৃষিসংশ্লিষ্ট মানুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১০ লাখ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার ৪৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে তাদের হিসাবে পারিবারিক কৃষির জন্য বরাদ্দ ২৯ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। এটি জাতীয় বরাদ্দের মাত্র ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় মাথাপিছু বরাদ্দ ৩৯ হাজার ৮৮৬ কাটি টাকার বিপরীতে পারিবারিক কৃষিতে বরাদ্দ ৩ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। এটি জাতীয় মাথাপিছু বরাদ্দের চেয়ে ৯১ শতাংশ কম। অথচ আদর্শ বরাদ্দ হওয়ার কথা ছিল ৩ লাখ ২৩ হাজার ৭৭ কোটি টাকা, অর্থাৎ জাতীয় বরাদ্দের ৪৭ দশমিক ৬ শতাংশ।’
রাশেদ খান মেনন বলেন, ’আইএমএফের শর্তগুলো পূরণ করে কীভাবে কাজ করা যাবে সেটিই হয়তো এ বাজেটে থাকবে। এখনকার বাজেটগুলো আমলা ও ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য দিয়েই করা হয়। এই বাজেট প্রণয়নে সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণ নেই। আগে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনা হতো। এখন সেটি হয় না। আমলারা তৈরি করে থাকে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে গিয়ে অনুমতি নিয়ে চলে আসে।’
তিনি বলেন, ’জিডিপিতে গৃহস্থালি নারীর অংশগ্রহণ কতটুকু এবার তা অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। সেখানে গ্রামীণ ও পারিবারিক কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ কতটুকু তা উল্লেখ করতে হবে।’