দিনাজপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৩ ১৭:৫৩ পিএম
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৩ ১৯:১৫ পিএম
দিনাজপুরে লিচু-গ্রামখ্যাত মাসিমপুরে মধু উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। প্রবা ফটো
এ বছর দিনাজপুরের লিচু বাগান থেকে দেড় হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।
তিনি বলেন, ‘এ মধু বিক্রি করে ১২০০ কোটি টাকা আয় হতে পারে। আর ২ লাখ বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে।’
সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে দিনাজপুরে লিচু-গ্রামখ্যাত মাসিমপুরে মধু উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
মধু উৎপাদন সম্ভাব্যতাকে সম্প্রসারণে মৌ-পালনবিষয়ক প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে তিনি সনদ বিতরণ করেন।
ইকবালুর রহিম বলেন, ’বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে লিচু-বাগানে মধু চাষ ও মধু উৎপাদনের মাধ্যমে বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। মধু উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতেও সহায়ক ভূমিকা রাখছে।’
তিনি বলেন, ’মধু উৎপাদনের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মধু উৎপাদন জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। মধু এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।’
দিনাজপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক খন্দকার মোহাম্মদ রওনাকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও আলোর পথে জাগো যুব সংগঠনের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল-আল-মামুন, দিনাজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইমদাদ সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফরিদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম সোহাগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মামুন হাসান চৌধুরী, আউলিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, আউলিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. জাকির হোসেন, উত্তরবঙ্গ মৌচাষী সমিতির সহসভাপতি আব্দুর রশিদ, বিসিকের মৌ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. রুহুল আমীন।
আলোচনা সভা শেষে ৮০ জন মৌ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন প্রধান অতিথি। পরে তিনি মৌখামারের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, দিনাজপুরের লিচু-বাগানগুলোতে গত বছরের চেয়ে এ বছর মৌমাছির আনাগোনা বেশি। স্থানীয় উদ্যোক্তাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৌখামারিরা এসেছেন। তারা বলছেন, দেড় হাজার মেট্রিক টন মধু আহরণের পাশাপাশি মৌমাছির পরাগায়নের মাধ্যমে লিচু উৎপাদন ৩০ ভাগ বাড়বে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানিয়েছেন, এ বছর জেলায় সাড়ে ৫ হাজার বাগানের ৭ হাজার ৫৫২ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হচ্ছে। এবার লিচুর ফলনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪০ হাজার ৭১২ মেট্রিক টন। মাদ্রাজি, বেদেনা-বোম্বাই-চায়না থ্রি, কাঁঠালিসহ বিভিন্ন জাতের লিচু উৎপাদন হয় এ জেলায়। বেদেনা লিচু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়। এই সু-স্বাদু লিচুর খ্যাতি রয়েছে বিশ্বজুড়ে। বাগানে মধু আহরণে মৌমাছির পরাগায়নের মাধ্যমে লিচুর ফলন আরও ৩০ ভাগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ’লিচু-বাগানে মধু উৎপাদনে মৌখামারি ও লিচু বাগানমালিকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও কৃষি বিভাগ।’