× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘আলু নিয়া এখন হামরা বিপদেই আছি বাপু’

দিনাজপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:০১ পিএম

আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:২৩ পিএম

বিক্রির জন্য আলু বস্তাবন্দি করেছেন কৃষকরা। প্রবা ফটো

বিক্রির জন্য আলু বস্তাবন্দি করেছেন কৃষকরা। প্রবা ফটো

‘এই জাড়োত আলু গরুও খায় না। আলু নিয়া এখন হামরা বিপদেই আছি বাপু। আলু ১০ করি বাহে? বীজ কিনা, লাগানো, পরিচর্যা, উঠানো মিলিয়া হামার কেজি পইছে ১৫-১৭ টাকা। এখন বেচেছি ৮-৯ টাকা। খুব বিপদই আছি বাপু।’ কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুর সদরের উলিপুর এলাকার একজন প্রান্তিক আলুচাষি রফিকুল ইসলাম। 

তিনি পূণর্ভবা নদীসংলগ্ন আড়াই বিঘা জমিতে আলুসহ নানান সবজি আবাদ করেছেন। তবে এবার দেড় বিঘা জমিতে আলু আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন তিনি।

বিরল উপজেলার পুরিয়া গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছর মোটামুটি লাভ থাকলেও এবার অবস্থা করুণ। আলু নিয়ে এবার আমরা বিপদে আছি। সরকারের সহায়তা ছাড়া কৃষকের মরণদশা। সার, কীটনাশক, ডিজেল, বীজ ও শ্রমিকের মূল্য বেশি। কিন্তু উৎপাদিত পণ্যের দাম নাই। এভাবে কৃষক কীভাবে বাঁচবে ভাই?’ 

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘সবকিছুর দাম বেড়েছে, শুধু আলুর দাম বাড়েনি। বিঘায় প্রায় ৮০ বস্তা আলু হয়। এক বিঘা জমির আলুর দাম যদি এক লাখ টাকা হতো তাহলে খরচ বাদে কিছুটা লাভ হতো। কিন্তু এবার ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দাম পাচ্ছি। এই অবস্থা থাকলে কৃষকেই শেষ।’

শহরের আলু ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বাজারে নতুন আলু উঠলেও পুরাতন আলু কিনছেন ক্রেতারা। নতুন আলু বেশি দিন থাকে না। নতুন আলু প্রথম দিকে বিক্রি হয়েছে ভালোই। এখন নতুন আর পুরাতনের দাম একই।’

উত্তরের শষ্যভান্ডারখ্যাত দিনাজপুরে এবার আগাম আলু বাজারে তুলে প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাচ্ছেন না কৃষক। বর্তমানে বাজারে ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হলেও ওই আলু কৃষকদের কাছ থেকে পাইকাররা কিনছেন ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে। 

বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ায় এবার উৎপাদন খরচ বেড়েছে। প্রতিকেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ টাকা। সেই সঙ্গে পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে আলু এনে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক। 

এদিকে দাম কম পাওয়ায় হিমাগার থেকে গত বছরের আলুও তোলেনি অনেক কৃষক ও ব্যবসায়ী। নির্ধারিত সময়ের বেশি সময় ধরে হিমাগারে আলু রাখায় লোকসান হচ্ছে তাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমাদের হিমাগারে আলু রাখা ও নেওয়ার নির্ধারিত সময় হচ্ছে মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। কিন্তু আলুর দাম কম হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের বাইরেও হিমাগারের মেশিন চালানো লাগছে। এক মাসের বিদ্যুৎ বিল প্রায় ১২-১৩ লাখ টাকার মতো। এই টাকা পুরোটাই লোকসান।’

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে দিনাজপুরে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৯৬৪ হেক্টর জমি। তবে উৎপাদন হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৮৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার কম জমিতে আলু উৎপাদন হলেও ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

দিনাজপুর জেলায় হিমাগারের সংখ্যা ১৩টি। সবগুলো হিমাগার মিলিয়ে আলু ধারণক্ষমতা এক লাখ ১৬ হাজার ১০ টন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ আলু বীজের। বাকিগুলো খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎপাদন এবং আলুর বহুমুখী ব্যবহার সম্ভব হলে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হতেন বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা নুরুজ্জামান। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা