জয়পুরহাট সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:১৫ পিএম
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩১ পিএম
জেলায় ইতোমধ্যে ৩২৫ হেক্টর জমিতে চাষিরা মরিচ আবাদ করেছেন। ছবি : প্রবা
শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। একটু কুয়াশা কমে গেলেই শুরু হয় মরিচ তোলা। সারা দিন চলে গাছ থেকে মরিচ তোলার কাজ। দিন শেষে বিকালে স্থানীয় বাজারেই পাইকারি বিক্রি হয় সে মরিচ। এবার মরিচের ফলন ভালো, আবার বাজারে দামও ভালো। তাতেই বেশ খুশি জয়পুরহাটের পাঁচ উপজেলার মরিচ চাষিরা।
জেলা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ইতোমধ্যে ৩২৫ হেক্টর জমিতে চাষিরা মরিচ আবাদ করেছেন। চাষিরা আরও জমিতে মরিচ লাগাচ্ছেন। জেলার সদর ও পাঁচবিবি উপজেলায় মরিচের আবাদ সবচেয়ে বেশি। এ দুই উপজেলায় আড়াইশ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে মরিচের।
তিনি আরও বলেন, কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলায় আলুর আবাদ বেশি। তবে ওই এলাকাগুলোয়ও প্রায় ৭৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করেছেন চাষিরা।
কয়েকজন মরিচ চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন সপ্তাহে এক-দুই দিন মরিচ তোলা হয়। একই দিন বিকালে কিংবা পরদিন সকালে স্থানীয় হাটগুলোয় পাইকারি দরে তা বিক্রি করা হয়। আবার নতুন করেও অনেক জমিতে মরিচের চারা রোপণ করা হচ্ছে। এসব চারার গাছ থেকে তিন-চার মাস পর আবারও মরিচ তোলা যাবে।
ক্ষেতলাল উপজেলার ভাসিলা এলাকার মরিচ চাষি আনিছুর রহমান বলেন, ‘৩০ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে ১২ শতক জমি পত্তন নিয়েছি। এ জমিতে মরিচ লাগিয়েছি। আবাদ বেশ ভালো হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে এক দিন মরিচ তোলা হয়। মরিচের দামও ভালো আছে। এখন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে মরিচ বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে খরচের দ্বিগুণ লাভ হবে।’
আরেক চাষি খাজা প্রামাণিক বলেন, ‘আমি ১০ শতক জমিতে সনি জাতের মরিচ আবাদ করেছি। এখন শীত মৌসুম, এজন্য মরিচের ফলন একটু কমেছে। আগে এ জমিতে ৩ মণ মরিচ তুলেছি, এখন দুই থেকে আড়াই মণ হচ্ছে। তবে দাম মোটামুটি ভালো। ৩ মণ মরিচ তুলে বাজারে নিলে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ দর পেতাম। এখন ১ মণ মরিচই ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
আক্কেলপুরের তিলকপুর এলাকার কৃষক মিশুক হোসেন বলেন, ‘এবার দেড় বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করেছি। বর্তমানে ভালো দাম যাচ্ছে। এমন দাম থাকলে দেড় বিঘায় ১ লাখ ২০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করা যাবে।’
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছা. রাহেলা পারভীন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘জেলায় এবার ৩২২ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে ইতোমধ্যে ৩২৫ হেক্টর জমিতে মরিচ রোপণ হয়েছে। আবাদ আরও বাড়বে। মরিচের ফলন ভালো হয়েছে, দামও ভালো আছে। মরিচের জন্য কৃষি বিভাগের আলাদা করে কোনো প্রণোদনা নেই। তবে কৃষি বিভাগের উপসহকারীরা মরিচ চাষিদের প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ দিচ্ছেন।