পটুয়াখালী সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৫৫ পিএম
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:২৯ পিএম
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে ‘ঘৃত বোম্বাই’ নামে সুগন্ধি মরিচ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন শতাধিক কৃষক। সুঘ্রাণ যুক্ত এ মরিচের চাহিদা থাকায় এখানে ব্যাপকভাবে এর চাষ হচ্ছে। বাঁশ আর পলিথিনের শেড দিয়ে সারা বছর চলছে মরিচের আবাদ। অল্প জমিতে এ মরিচ চাষ করে স্বল্পপরিচর্যায় ব্যাপক ফলন ফলছে। লাভও হচ্ছে বেশি।
মরিচ চাষের সাফল্যে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা, ইসলামপুর, মজিদপুর, বাইনতরা, এলেমপুর, ফরিদগঞ্জ, ছোটাবাছা, ডামুরতলা, নাওভাঙ্গাসহ আশপাশের গ্রামেও বাণিজ্যিকভাবে ঘৃত বোম্বাই মরিচের চাষ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন এসব এলাকার শতাধিক কৃষক।
মজিদপুর গ্রামের ঘৃত বোম্বাই চাষের সফল কৃষক জাকির হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি ২০১৩ সালে প্রথম এ মরিচের আবাদ শুরু করি। সে সময় ইউটিউব দেখে গ্রিনহাউস পদ্ধতিতে বেড তৈরি করি। ফলন ভালো হওয়ায় ও বাজারে চাহিদা থাকায় পরে আরও ব্যাপকভাবে এ মরিচের চাষ শুরু করি। বর্তমানে প্রতি বছর ৩-৪ লাখ টাকার ঘৃত বোম্বাই মরিচ বিক্রি করি। ১ বিঘা জমিতে খরচ হয় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি সাত দিন পরপর মরিচ তুলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করি। পাইকারি ক্রেতাদের কাছে প্রতি হাজার মরিচ ২-৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।’
কুমিরমারা গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমরা একবার মরিচ তুলি। গত সপ্তাহে ১৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। স্থানীয় পাখিমারা বা কলাপাড়ায় আমরা মরিচ বিক্রি করি, সেখান থেকে পটুয়াখালী, বরিশাল, ঢাকা পর্যন্ত চলে যায়। অতিবৃষ্টি বা খরার কারণে অনেক ক্ষেত্রে চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। ইউটিউব দেখেই আমরা গ্রিনহাউস তৈরি করি। তবে তাদের মতো উন্নতমানের গ্রিনহাউস করার সামর্থ্য আমাদের নেই। আমরা বাঁশ দিয়ে খুঁটি বানিয়ে প্রথমে আবাদ শুরু করি। আমি এ বছর ৪ শতক জমিতে মরিচের আবাদ করেছি এবং এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছি।’
কৃষক আনোয়ার বলেন, ‘২০১৮ সালে মরিচের চাষ শুরু করেছি। এতে লাভবান হয়েছি। আমাদের সংসার মোটামুটিভাবে চলে যাচ্ছে। মরিচ চাষে কষ্ট কম। বিক্রি করতেও ঝামেলা পোহাতে হয় না। দূরে যাওয়া লাগে না। পাইকাররা বাড়িতে এসে নগদ টাকা দিয়ে মরিচ নিয়ে যান। বর্তমানে ধানের চেয়েও মরিচ চাষে লাভ বেশি।’
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘যেহেতু বোম্বাই মরিচের চারা দীর্ঘদিন বাঁচে এজন্য ফলনও পাওয়া যায় দীর্ঘদিন। আমরা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি। কৃষক যাতে চাষে আরও উন্নতি করতে পারেন, সেজন্য তাদের বালাইনাশকসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তা ছাড়া এর বাজারমূল্যও ভালো। আশা করি কৃষক আরও উদ্যোগী হয়ে উঠবেন।’