× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তুঁতের গাছ চাষ না করে সবজির আবাদ

রেজাউল করিম, গাজীপুর

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫ ০৯:৩২ এএম

আপডেট : ২৪ মে ২০২৫ ২০:৪২ পিএম

কোনাবাড়ি রেশম বীজাগারের জায়গায় এখন সবজি চাষ হচ্ছে। প্রবা ফটো

কোনাবাড়ি রেশম বীজাগারের জায়গায় এখন সবজি চাষ হচ্ছে। প্রবা ফটো

বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড গাজীপুর জোনাল রেশন সম্প্রসারণ অফিস ও কোনাবাড়ি রেশম বীজাগারের ৪৮ বিঘার বিশাল জায়গায় মাত্র তিন বিঘা জায়গায় তুঁতের চাষ হচ্ছে। 

বাকি জমিতে বাইরের লোক শাকসবজি চাষ করছেন। এ ছাড়াও বছরের পর বছর চলে গেলেও কোনো বীজ ও পোকা উৎপাদন হচ্ছে না । 

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশেই জোনাল রেশম সম্প্রসারণ অফিসটি। কাগজে-কলমে সেখানে দুজন কর্মকর্তা থাকলেও জরাজীর্ণ রুমগুলোয় দীর্ঘদিন ধরেই কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে। 

সরেজমিন দেখা যায়, জোনাল রেশন সম্প্রসারণ অফিসের ৪৮ বিঘা জায়গার মাত্র তিন বিঘায় তুঁত গাছ লাগানো হয়েছে। কয়েকটি ছোট ছোট কোয়ার্টার রয়েছে। সেখানে কয়েকটি পরিবার বাস করে। সহকারী পরিচালকের রুমের সামনে পশ্চিম পাশে তালাবদ্ধ পোকা উৎপাদনের ভবন। তবে অনেক বছর ধরে পোকা উৎপাদন বন্ধ থাকায় সেটিও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কেন্দ্রের সামনের বিশাল অংশজুড়ে ফসলের মাঠের মতো আইল দিয়ে ভাগ করা। ছোট বড় বিভিন্ন আয়তনের ভাগ করা জমিতে বিভিন্ন সবজি লাগানো রয়েছে। লাল শাক, পালন শাক, পাট শাক, ঢেঁড়স, বেগুন, কলমি শাক, ঝিঙে, চিচিঙ্গাসহ নানা সবজি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তুঁত গাছ, পোকা ও রেশম গুটি উৎপাদন না হওয়ায় এসব জায়গায় সবজি চাষবাস করা হয়। এসব জমি বাইরের লোকজনকে বর্গা দিয়েছেন সহকারী পরিচালক। কারও কাছ থেকে ৩ ভাগের এক ভাগ সবজি ও কারও কাছ থেকে এককালীন টাকায় বর্গা দিয়েছেন তিনি। লোকবল কম থাকায় ও জবাবদিহিতা না থাকায় অসাধু কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন সহকারী পরিচালক। 

এ ছাড়াও এই গাজীপুর জোনাল রেশন সম্প্রসারণ অফিস ও কোনাবাড়ি রেশম বীজাগারে আশপাশের দুটি কারখানা থাকায় পোকা উৎপাদন করা যায় না। কারখানার ধোঁয়ায় রেশম পোকা মারা যায়। 

সচেতন মহল বলছে, একসময় ভারতীয় উপমহাদেশসহ আন্তর্জাতিক বাজারে রেশম বস্ত্রের বেশ কদর ছিল। রেশমের পুরোনো ঐতিহ্য, গুণগত মান ও জনপ্রিয়তায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে রেশম কাপড়ের চাহিদা এখনও রয়েছে। হতদরিদ্র মানুষদের বিশেষ করে রেশম চাষের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়ানো হলে বাড়বে কর্মসংস্থান। 

তবে গাজীপুরের এই জোনাল অফিসে তেমন কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়না। বিশাল সম্পদ পড়ে আছে অথচ সেখানে উৎপাদন নেই। বর্গা দিয়ে সবজি চাষ হচ্ছে। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে।

দায়িত্বশীলরা বলেন, তুঁত গাছের পাতা রেশম গুটি পোকার প্রিয় খাবার। তবে কারখানার শব্দ, ধোঁয়াসহ বিভিন্ন কারণে এখানে পোকা উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ফলে জায়গাগুলোর সঠিক ব্যবহার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। 

কোনাবাড়ি এলাকার স্থানীয় ব্যক্তি মো. আলাল নামে একজন বলেন, ‘ওই অফিসের জায়গায় যে সবজি চাষ হয়, তা এনে বাজারে বিক্রি করি। ওখানে সবজি ছাড়া অন্য কিছু চাষ হয় কি না জানা নেই। শুনেছি ওখানে রেশম চাষ করা হয়। কিন্তু কোনো দিন তা চাষ হতে দেখিনি।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চাষি বলেন, ১০ হাজার টাকা দিয়ে এখানে জমি নিয়েছি একটু। সেখানে আমি সবজি চাষ করি। 

গাজীপুর জোনাল রেশন সম্প্রসারণ অফিস ও কোনাবাড়ি রেশম বীজাগারের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমাদের লোকবল সংকট। আমরা মাত্র দুজন কর্মকর্তা আছি। তাও দেশের বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালন করতে হয়। আমাদের যখন শ্রমিক দরকার তখন পাওয়া যায় না। এজন্য কয়েকটি পরিবারকে থাকতে দিয়েছি।’ 

সবজও চাষের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পতিত সবজি চাষ করতে দিয়েছি। চাষ করে ২ ভাগ চাষি নেয়। এক ভাগ আমাদের দেয়।’ বর্গার বিষয়ে বলেন, ‘অনেকেই ঠিকমতো সবজিও দেয় না। এজন্য এককালীন টাকা নিয়ে থাকি। সেটা অফিসের কাজে ব্যবহার করা হয়।’

বেশম চাষের বিষয়ে বলেন, ‘এখানে অনেক আগে গুটি উৎপাদন হতো। কিন্তু কারখানার ধোঁয়ায় পোকা মরে যায়। এ কারণে রেশম গুটি উৎপাদন বন্ধ আছে। এখন আমাদের যেটুকু লাগে সেটুকু যায়গায় তুঁত গাছ লাগিয়েছি। ৪৮ বিঘার মধ্যে এবার তিন বিঘায় তুঁত চাষ করা হচ্ছে।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা