নিয়ন দুলাল, লালমনিরহাট
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫ ১৭:৩৩ পিএম
আপডেট : ২২ মে ২০২৫ ১৭:৩৬ পিএম
ভুট্টা চাষে খরচ কম লাভ বেশি। ফলে লালমনিরহাটে চরাঞ্চলের কৃষকরা ফসলটি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। কাউন, গম, তিল, বাদাম ও বোরো ধান চাষের চেয়ে ভুট্টায় কম খরচ, লাভ বেশি। এ সুযোগ কৃষকরা হাতছাড়া করছেন না। চরাঞ্চলের পতিত জমি ও বালুচরে প্রচুর ভুট্টার চাষ হচ্ছে। এতে কৃষকরা যথেষ্ট লাভবান হবেন বলে তাদের প্রত্যাশা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর রবি মৌসুমে লালমনিরহাটে ভুট্টা চাষ হয়েছিল ৩২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর জেলায় ভুট্টা চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। ফলে এবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৫ হেক্টর, যা গত রবি মৌসুমের চেয়ে ১৪৫ হেক্টর বেশি।
এবার আশা করা হচ্ছে, ৭৮ হাজার ৪৬৫ টন ভুট্টা উৎপাদন হবে, যা গত বছরের চেয়ে ১৮ হাজার ১০০ টন বেশি। এখন পর্যন্ত উৎপাদিত ভুট্টার ৩০ শতাংশ ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষকরা। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে তারা নিশ্চিতভাবে লাভের মুখ দেখবেন।
জেলার সদরসহ পাঁচটি উপজেলাতেই চোখে পড়ার মতো ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছে। সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী ফুলগাছ ও কুলারঘাট ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর ভুট্টা চাষ করা হচ্ছে।
চর ফলিমার এলাকর চাষি মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর নিজেরসহ অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ভুট্টা চাষ করে ভালো দাম পেয়েছি। এবার চাষ আরও বাড়িয়ে দিয়েছি। আশা করছি, গত বছরের চেয়ে ফলন ও দাম দুই-ই ভালো পাব।
আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চর কুঠিবাড়ির একজন কৃষক আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ভুট্টা চাষাবাদে ভালো লাভ পাওয়া যায়। তামাক ও অন্যান্য ফসলের চেয়ে এতে পরিশ্রম কম। বিঘাপ্রতি ৮ থেকে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা খরচ হয়। গত বছর বিঘাপ্রতি (৩৩ শতক) ২৫-৩০ মণ ভুট্টা পেয়েছি। বিক্রি করে খরচ বাদে ১২-১৩ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এ বছর সার, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম যে হারে বেড়েছে; সে তুলনায় ভুট্টার দাম বাড়লে মোটামুটি লাভবান হওয়া যাবে।’
জেলার পাটগ্রাম উপজেলার ভুট্টাচাষি রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘অন্য যেকোনো ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে লাভবান হওয়া যায়। তামাকের চেয়েও এর চাষাবাদ পদ্ধতি সহজ এবং স্বাস্থ্যসম্মত। এবার তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে লাভের মুখ দেখব।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সইখুল আরিফিন বলেন, এ বছর চরাঞ্চলে ভুট্টার চাষ বেড়েছে। আমরা ৬ হাজার ২০০ কৃষকের মধ্যে সার, বীজসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়েছি। আশা করছি, কৃষকরা আরও বেশি লাভের মুখ দেখবেন। আগামীতে জেলায় ভুট্টা চাষ বাড়বে বলেও আশা করছি।’