মেহেরপুর
মেহেরাব হোসেন অপি, মেহেরপুর
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৫ পিএম
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৮ পিএম
মেহেরপুরে আলুর বাম্পার ফলনেও শঙ্কায় চাষিরা। দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক। কয়েক সপ্তাহ আগেও বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৫ থেকে ২০ টাকায় ঠেকেছে। বিঘাপ্রতি ৮০ মণ করে আলু উৎপাদন হলেও তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকায়। অথচ প্রতি বিঘা উৎপাদন খরচ ৪৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতি বিঘায় কৃষককে লোকসান গুনতে হবে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা করে। হঠাৎ করে আলুর দাম নেমে যাওয়ায় শঙ্কায় আলুচাষিরা।
মেহেরপুর শহরের ফৌজদারী পাড়ার আলুচাষি ইয়াকুব হোসেন ডাবলু চলতি মৌসুমে প্রায় ৭০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। আশা ছিল ফলন বিক্রি করে লাভবান হওয়ার। কিন্তু হঠাৎ করে আলুর দাম কমে যাওয়ায় চরম সংকটে পড়েছেন তিনি। যেখানে প্রতি বিঘায় ৪০-৫০ হাজার টাকা করে লাভ হওয়ার কথা ছিল, সেখানে বিঘায় ১০ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে।
কৃষক ডাবলু জানান, চলতি মৌসুমে আলুর বীজ সংকটে দাম ছিল দ্বিগুণ। সার, কীটনাশক ও অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় আলু উৎপাদন খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষ করতেই কৃষকদের খরচ পড়েছে ৪৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী এক বিঘা জমি থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে। যেখানে উৎপাদন খরচ ৫০ হাজার টাকার আলু বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে ৪০ হাজার টাকা সেখানে প্রতি বিঘায় ১০ হাজার টাকা করে লস গুনতে হচ্ছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার আরেক আলুচাষি ইসমাইল হোসেন বলেন, আলু চাষ করে বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছি। মাঠের পর মাঠ আলু থাকলেও বিক্রির জন্য ক্রেতা নেই।
গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের আলুচাষি চাঁদ আলী বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগেও মেহেরপুর বাজারে প্রতি মণ আলু বিক্রি হয়েছে ১৬০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা করে। মাঠের দাম আরও কম।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৩০ হেক্টর জমিতে। তবে উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০০ হেক্টর বেশি। চলতি মৌসুমে প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৫ মেট্রিক টন আলু। সে হিসাবে চলতি মৌসুমে ২৭ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টন আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে, তবে দাম কিছুটা কম। যেহেতু ফলন ভালো হয়েছে সে ক্ষেত্রে দাম কিছুটা কম হলেও লাভবান হবে চাষিরা।