অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৩ পিএম
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৮ পিএম
পুস্তকীয় নাম বরই হলেও অনেকে ডাকে কুল। দেখতে সুন্দর। টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফল এখন ছোট-বড় সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয়। গত কয়েক দশকে পার্বত্য অঞ্চলে আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস ও অন্যান্য ফলনের পাশাপাশি বরই চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা।
দেশি জাতের বাইরেও রয়েছে বাউ কুল, আপেল কুল, নারকেল কুল, বলসুন্দরী অথবা কাশ্মিরি। তবে স্থানীয় চাষি-ভোক্তা সকলের মন জয় করেছে টক-মিষ্টি স্বাদের বলসুন্দরী জাতের কুল বা বরই।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাউ কুল, আপেল কুল, নারকেল কুল, বলসুন্দরী ও কাশ্মিরি কুল আবাদ হচ্ছে। তবে খেতে টক হওয়ায় দেশি জাতের কুলের চাহিদা কম। এক্ষেত্রে মিষ্টি জাতের কুলের চাহিদা রয়েছে সর্বত্র। ন্যায্যমূল্য পাওয়া, অনুকূল আবহাওয়া ও অন্যান্য ফসলের তুলনায় খরচ ও রোগবালাই কম হওয়ায় কুল চাষ দিন দিন বাড়ছে। অনেক চাষি মৌসুমি চাষাবাদের পরিবর্তে স্থায়ীভাবে নিজের জমিতে কুল চাষ করছেন।
সম্প্রতি কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকায় চাষকৃত এই বরই বা কুল বিক্রয় করতে এসেছেন চাষিরা। তবে হাট-বাজারে বলসুন্দরী জাতের কুলের দেখা মিলছে বেশি। চাষিরা কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা খুচরা দরে বিক্রয় করছেন বলসুন্দরী জাতের কুল। অনেকে কেজি দরে আবার অনেকে পাইকারি দরে কিনছেন এসব বরই।
কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে বরই চাষ হয়। তার মধ্যে বলসুন্দরী জাতের বরইয়ের চাষ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। হেক্টরপ্রতি ২০ টন উৎপাদন হিসাবে সর্বমোট ৩০০ টন বড়ই চাষ হচ্ছে কাপ্তাইয়ে।
কাপ্তাইয়ের বরইচাষি সমীরণ তঞ্চঙ্গ্যা, স্বপ্না মারমাসহ কয়েকজন জানান, পাহাড়ের এসব কুল খেতে বেশ সুস্বাদু হওয়ায় সারা দেশে এর কদর রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বেশিরভাগ বাগানের কুল পরিপক্ব হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই কুল বিক্রয় হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রান্তিক চাষিরাও বেশ লাভবান হচ্ছেন।
কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. ইমরান আহমেদ জানান, সাধারণত রবি মৌসুম অর্থাৎ শীতকালে এই বরই চাষের ফলন হয়ে থাকে। কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে এই বরই বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে স্থানীয় কুলচাষিদের বিভিন্ন সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কাপ্তাইয়ের বরইচাষিরা লাভবান হয়েছেন।