× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দাম না পেয়ে গরুকে খাওয়াচ্ছেন সবজি, লোকসানে কৃষক

নোয়াখালী প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:১২ পিএম

আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:১৫ পিএম

নোয়াখালীর কৃষকরা ন্যায্য দাম না পেয়ে গরুকে সবজি খাওয়াচ্ছেন। প্রবা ফটো

নোয়াখালীর কৃষকরা ন্যায্য দাম না পেয়ে গরুকে সবজি খাওয়াচ্ছেন। প্রবা ফটো

নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চল সুবর্ণচরকে জেলার শস্যভাণ্ডার বলা হলেও ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির পর উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় লোকসানে রয়েছেন কৃষক। দাম না পেয়ে কেউ গরুকে খাওয়াচ্ছেন সবজি আবার কারও জমিতেই নষ্ট হচ্ছে সবজি। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বাজারে। ক্রেতারা একপ্রকার ‘পানির দরে’ কেনা সবজির স্বাদ নিতে পারছেন ঠিকই, কিন্তু এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন উৎপাদনকারী কৃষকরা। ফসলের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে তাদের এখন মাথায় হাত। 

সরজমিন দেখা গেছে, সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে কৃষকরা লাউ, শিম, করলা, টমেটো, বেগুন, শসা ও মরিচসহ শীতকালীন সবজি আবাদ করছেন। স্বল্প খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ার আশা নিয়ে রোপণ করা শীতের সবজি এখন লোকসানে ফেলেছে কৃষকদের। ফলে বাধ্য হয়ে এসব সবজি গরুকে খাওয়াচ্ছেন অথবা জমিতেই নষ্ট হচ্ছে।

কৃষক ইসমাইল হোসেন দুদু সওদাগর বলেন, ‘আমরা পারিবারিকভাবেই কৃষক। প্রতি বছরই চাষাবাদ করি। এবারের মত ধরা আগে কখনো খাই নাই। এক কেজি শিম বাজারে বিক্রি করতে গেলে ২০ টাকা দাম পাই না কিন্তু কিনতে গেলে ৩০ টাকার নিচে কেনা যায় না। লাউয়ের দাম এত কম যে গরুকে খাওয়ানো লাগতেসে। আবার গরুর ঠান্ডা লাগে লাউ খাওয়ালে তাই জমিতেই সবজি নষ্ট হচ্ছে।’ 

মিলন হোসেন নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘প্রতি বছর শীতকালীন সবজির চাহিদা থাকে, দামও ভালো পাইতাম। লাভের আশায় চলতি মৌসুমে অনেকেই সবজি চাষাবাদ করেছেন। কিন্তু এ বছর নানান জাতের সবজিতে বাজার ভরে যাওয়ায় উৎপাদন ভালো হলেও মুনাফার অঙ্ক শূন্যের ঘরে। ভয়াবহ বন্যার কারণে আমাদের গতবারের ফলন খারাপ হয়েছে। এবার বাজারে দাম কম পাওয়ায় আমাদের সবজি জমিতেই নষ্ট হচ্ছে। ফুলকপি ট্রাক্টর দিয়ে অন্য সবজি গরুকে খাইয়ে নষ্ট করতে হচ্ছে।’ 

মো. সিরাজ উদ্দিন নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘আমরা সবাই কৃষক। আমাদের কৃষি পণ্য সারা দেশে যায়। কিন্তু প্রতিদিন আমরা লাখ লাখ টাকা লোকসান দিচ্ছি। ২২ টাকায় এক কেজি শিম ক্রয় করে আড়তে বিক্রি করতে বাধ্য হই ১৮ টাকায়। এতে করে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না অন্যদিকে বেপারীরা লাখ টাকা লোকসান গুনতেসেন। আমরা চাই কৃষক তার ন্যায্যমূল্য পাক। সরকারের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। কৃষক না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না। সার ও কীটনাশকের দাম হুহু করে বাড়তেসে। আমরা মরে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না।’

মো. আজাদ উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাজারে দাম নেই, পাইকারি ব্যবসায়ীরাও আসছেন না। তাই জমিতে নষ্ট হচ্ছে সবজি। এসব সবজি বিক্রি করে আমদের পরিবহন ও শ্রমিক খরচও উঠছে না। বিশেষ করে ঋণ নিয়ে সবজি আবাদকারী কৃষকরা বেশি হতাশ হয়ে পড়েছেন।’ 

নোয়াখালী জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মুমু পোদ্দার বলেন, ‘আমাদের নোয়াখালীতে এ বছর শীতকালে সব উপজেলায় রবি শস্যের ফলন ভালো হয়েছে। বিশেষ করে সুবর্ণচর উপজেলায় ফলন ভালো হয়েছে। তবে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার বিষয়টি আমাদের জানা নাই। আমরা সংশ্লিষ্টদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।  এছাড়াও মার্কেট লিংক করে দেব যেন ন্যায্যমূল্য পায় এবং ভোক্তাদের যেন ক্ষতি না হয়।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা