× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হলুদ মাল্টায় ভরে আছে মতিউরের বাগান

রায়হানুল ইসলাম আকন্দ, শ্রীপুর (গাজীপুর)

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:০০ পিএম

আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৪৭ পিএম

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের ডালেশ্বর গ্রামে নিজ মাল্টা বাগানে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমান। প্রবা ফটো

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের ডালেশ্বর গ্রামে নিজ মাল্টা বাগানে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমান। প্রবা ফটো

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের ডালেশ্বর গ্রামের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমান গড়ে তুলেছেন পাঁচশ মাল্টাগাছের এক বাগান। যেখানে প্রায় সব গাছেই থোকায় থোকায় ঝুলছে হলুদ মাল্টা। তার দাবি এটি মিসরীয় জাতের হলুদ মাল্টা। দেশে সবুজ বর্ণের মাল্টার ফলন হলেও প্রথম তিনি হলুদ জাতের মাল্টার বাগান করেছেন।

২০২১ সালের জুলাইয়ে মাল্টার বাগান করে তিন বছরের মাথায় প্রথম ফলনেই পুঁজির ২৪ লাখ টাকা খরচ উঠিয়ে বাড়তি লাভের স্বপ্ন দেখছেন উদ্যোক্তা মতিউর। চলতি বছর ৫০ হাজার কেজি মাল্টা ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আয়ের কথাও জানালেন এ উদ্যোক্তা। তার বাগান ঘুরে দেখতে ও নিজ হাতে মাল্টা ছিঁড়ে খাওয়ার স্বাদ নিতে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

তিন একরের কিছু বেশি জায়গাজুড়ে পাঁচশ মাল্টা ও ৬০টি কমলার চারা লাগান। বর্তমানে মাল্টা গাছের বয়স প্রায় সাড়ে তিন বছর। গত বছরের মধ্যভাগে তার বাগানে প্রথম ফলন হয়। এ পর্যন্ত মাল্টার বাগানে খরচ হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টাকা। প্রতি গাছে তার ২০ কেজি ফলন হয়েছে। বাগানে ৫০০ মিসরীয় হলুদ মাল্টা, ৩০টি চায়না ও ৩০টি দার্জিলিং কমলার গাছ রয়েছে। বর্তমানে ৫৬০টি গাছে ফল ধরেছে। মতিউরের ভাষ্যমতে, গড়ে প্রতি গাছে ২০ কেজি ফলন হলে ১০ টন তথা ১০ হাজার কেজি মাল্টা বিক্রি করা যাবে। বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে আড়াইশ টাকা কেজি দরে।

দর্শনার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, মাল্টাগুলো দেখতে বেশ সুন্দর এবং বাইরের দেশের মতো। নিজের হাতে গাছ থেকে ছিঁড়ে খাওয়ার আনন্দ অন্যরকম। বাংলাদেশও কিছুদিনের মধ্যে বাইরের দেশের মতো হয়ে যাবে। আরও অনেক ফলের আবাদ হবে।

স্থানীয় এমদাদুল হক বলেন, আজ থেকে ১০ বছর আগে আমাদের দেশে মাল্টার আবাদ শুরু হয়। আজকে এভাবে দেশে মাল্টার চাষ হবে ভাবতে অবাক লাগছে। ফলটি আরও বেশি করে উৎপাদন করা গেলে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আর্জন করতে সক্ষম হবে দেশ।

চিকিৎসক খায়রুল আলম বলেন, এখানে যেভাবে কৃষিকাজ করতেছে তাতে ফলও ধরেছে প্রচুর। এখানে দর্শনার্থী ও ক্রেতার ভিড় দেখলাম। অনেক শিক্ষিত ভাইবোন বেকার থাকলে উদ্যোক্তা হয়ে কৃষি সমৃদ্ধির কাজে নিয়োজিত হলে দেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারবেন। সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।

ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, মাল্টা বাগান ঘুরে দেখলাম, খুবই সুন্দর। বাগানটি এখন পিকনিক স্পট হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতিনিয়ত মানুষ পরিদর্শন করতে আসছে। পরিবেশটাও খুব সুন্দর, ঘুরে শান্তি পাওয়া যায়।

বাগানের কর্মী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সারা দিন ক্রেতাদের সিরিয়াল থাকে। ২৫০ টাকা কেজি দরে প্রতিদিন ১ লাখ টাকার বেশি মাল্টা বিক্রি হয়।

উদ্যোক্তা প্রকৌশলী মতিউর রহমান বলেন, করোনার সময় মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। তখন নিজ থেকে কিছু করার ভাবনা আসে। ইউটিউব দেখে জানতে পারি প্রতিদিন বাংলাদেশে গড়ে প্রায় ৬০০ টন মাল্টা লাগে এবং পুরোটাই আমদানিনির্ভর। বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা। অথচ বাংলাদেশে এর উৎপাদন নেই বললেই চলে। সেই থেকে মাল্টার বাগানের পরিকল্পনা করি। ২০২১ সালের ১৩ জুলাই থেকে ১৫ জুলাইÑ এই তিন দিনে মাল্টার গাছ লাগাই করি।

তিনি আরও বলেন, বাগানের জন্য ২ একরের কিছু বেশি জমি লিজ নেওয়া আছে। বার্ষিক ৪৯ হাজার টাকা ভাড়ায় ২০৩১ সাল পর্যন্ত লিজের মেয়াদ রয়েছে। দেশে ১০ বছর ধরে মাল্টার চাষ হলেও প্রচলিত জাতে কৃষক লাভবান হচ্ছেন না। আমার বাগানের জাতটি পুরোটাই ভিন্ন। এটি মিসরীয় হলুদ মাল্টা।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, শ্রীপুর মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী। স্থানীয়দের অনেকে মাল্টা চাষে উদ্যোগ নিয়েছেন। মাঠপর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ ভূমিকা রাখছেন। আশা করি, আরও উদ্যোক্তা তৈরি হবে। দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারব।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা