× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঘুরে দাঁড়ানোর করুণ গল্প জানালেন আলিফ আলাউদ্দিন

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৪৯ পিএম

আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৫৩ পিএম

ঘুরে দাঁড়ানোর করুণ গল্প জানালেন আলিফ আলাউদ্দিন

সংগীতজগতের জনপ্রিয় নাম আলিফ আলাউদ্দিন। দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তার কিডনির ৮০ ভাগ বিকল। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এখন তার এককদম হাঁটার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় তার সাথে ছায়া হয়ে আছেন তার স্বামী মিউজিশিয়ান কাজী ফয়সাল আহমেদ। 

আলিফ তার জীবনের এমন কঠিন সময়টি বরাবরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন। জানান শারীরিক পরিস্থিতির খবর।

আলিফ বর্তমানে ভারতের চেন্নাইতে ডায়ালাইসিসের জন্য গেছেন। সেখান থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের জীবনযুদ্ধের গল্প তুলে ধরলেন। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, ছাত্রজীবনের সংগ্রাম, নিজের বিয়ে ও কাছের মানুষদের পাশে থাকার অজানা গল্প জানালেন আলিফ। 

দীর্ঘ স্ট্যাটাসে আলিফ লিখেছেন, ‌‘আমার বাবা মা যখন আলাদা হয়ে যান তখন আমার বয়স অনেক কম। ক্লাস ৯-এ পড়ি। মা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করে তখন শারীরিকভাবে দুর্বল। আমার সামনে ও লেভেল পরীক্ষা। তখনই মাথায় আসলো কিভাবে পড়াশোনা তাড়াতাড়ী শেষ করে চাকরীতে জয়েন করা যায়। মাকে প্রায় ৪০,০০০ টাকার মতো ওষুধ খেতে হতো। 

ও লেভেল শেষ করেই ঢুকে পড়লাম আমার স্কুল BIT- র ফ্রেন্চ টিচার হিসেবে চাকরি করতে। এ লেভেল না করে সরাসরি বিবিএ পড়তে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালতে ভর্তি হলাম। সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, তারপর বিআইটি গিয়ে ক্লাস নিয়ে আবার ভার্সিটি ফিরে ক্লাস করা। সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরে টিউশনি। আর তারপর নিজের পড়ালেখা।  

আমার মা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন টেলিভিশনের প্যাকেজ প্রোগ্রাম তৈরি নিয়ে। জীবন তো চলতে হবে। মজার ব্যাপার হলো, কিছুদিন আগেও সালমা ভাবী, আলিফ আম্মু বলে ডাকা মানুষগুলোর নতুনরূপ দেখা শুরু করলাম। গায়ে মাখিনি।

সময় কোথায়, অনেক কাজ ভেবে এগিয়ে গেছি। তবে মনে রেখেছি, ভুলিনি। মনে মনে রাগ পুষে রাখিনি। রাগ পুষে রাখা মানুষ আমি না। আমি শুধু মনে রেখেছি যেন দ্বিতীয়বার এরা আমাদের বোকা বানাতে না পারে। মার কাছ থেকে পাওয়া আমার অসামান্য মানসিক শক্তি। 

আমার খালা মামারা পাশে না থাকলে হয়তো কিছুই করতে পারতাম না। অনেক প্রাচু্র্যে বড় হওয়া আমি এ ধাক্কাকে জয় করার নেশায় মত্ত হলাম। অনেক ছোট ছোট পথ হেঁটে লম্বা পথও পাড়ি দিয়ে ফেললাম। মাঝে খুব ভাল মনের একজন মানুষকেও জীবনসঙ্গী হিসেবে পেলাম। ঘর আলো করে আমাদের কন্যা সন্তানও এলো। দিন সুন্দর পার হয় ঠিকই কিন্তু আমার মনে শুধু চিন্তা আমার মায়ের কিডনী রোগটা আমারও আছে। নিজের যত্ন নেবার আগেই মা আবার অসুস্হ হলেন। আবার মার ডায়ালাইসিস, আবার টেনশন। 

অনেক যন্ত্রণা নিয়ে মা আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন। আম্মুর কলিজার টুকরা ছিলাম আমি। কিভাবে মা দূরে আছে সে চিন্তা করার আগেই নিজের কিডনীর জটিলতা বাড়তে শুরু করলো। দিন যায় শরীর আরও খারাপ হয়। গত ৩/৪ বছর কি সময় পার করেছি তা বলে বোঝানো সম্ভব না। 

এখনও হাল ছাড়িনি। পরিবার বন্ধু বান্ধব যেভাবে আঁকড়ে ধরে রেখেছে, হাল ছাড়ি কিভাবে? অনেকেই আমাকে আমার ফেসবুক পেজে এসে লেখেন আলাউদ্দীন আলীর সন্তান হিসেবে সংগীত জগতে কি করতে পেরেছেন? আমি কিছুই করতে পারিনি, চাইও নি। আলাউদ্দীন আলী লাখে একটা হয়, আমার সে গুন নাই, আমি বাবার সাথে প্রতিযোগিতায় এ নামিনি। আমি চেষ্টাও করিনি, ইচ্ছাও হয়নি বিশাল কিছু করে ফেলবো। জীবনে চরকির মতো ঘুরতে ঘুরতে সে সময়ও পাইনি।

আমার কোন আক্ষেপ নেই। মাঝে মাঝে নিজের পজিটিভিটি দেখে নিজেই অবাক হই। আমি আমার মায়ের সন্তান, বাবার সন্তান। শরীর খারাপ নিয়ে হাসি মুখে গান করি, টিভিতে প্রোগ্রাম করি, বাড়ীতে রান্না করে সবাইকে খাওয়াই। আমার কখনও নিজের জন্য মায়া কান্না আসে না। আমি খুব অদ্ভুত। আমার অসামান্য মনোবল। ধন্যবাদ পরিবার, খুব কাছের কিছু বন্ধু এবং সর্বোপরি মহান সৃষ্টিকর্তা।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা