আলাপন
লিমন আহমেদ
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪ ১৫:১০ পিএম
রোজিনা
ঢাকাই সিনেমায় রোজিনার ক্যারিয়ার শুরু চার দশক আগে। অনেক সুপারহিট সিনেমার নায়িকা তিনি। দেশে-বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছেন নিজের অভিনয় দিয়ে। সিনেমাও পরিচালনা করেছেন। সিনেমাটির নাম ‘ফিরে দেখা’। এটি মুক্তি পেয়েছে গেল বছর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি অনেক পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছেন। চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদান রাখায় বাংলাদেশ কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ফেডারেশন ও টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ (ট্রাব) বরেণ্য এ অভিনেত্রীকে আজীবন সম্মাননা দিয়েছে। চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার, অর্জন ও সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে রোজিনার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন লিমন আহমেদ-
আরও একটি স্বীকৃতি যুক্ত হলো ক্যারিয়ারে। কেমন লাগছে?
অবশ্যই ভালো। আমি আজীবন সিনেমার মানুষ হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছি। সেটা পেরেছি। কোটি কোটি দর্শক আমাকে সিনেমার জন্যই ভালোবাসেন। সম্মান করেন। এটা আমি সব সময়ই অনুভব করি। নিজেকে ধন্য মনে করি। একজন শিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য দেশি-বিদেশি স্বীকৃতি আমি পেয়েছি। নতুন করে যে সম্মাননা পেলাম সেটা আমার ক্যারিয়ার আরও সমৃদ্ধ করেছে। আমি বাংলাদেশ কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ফেডারেশন ও টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ (ট্রাব)-এর কাছে কৃতজ্ঞ। যেকোনো স্বীকৃতিই প্রেরণা দেয়।
আজকাল পুরস্কার প্রদানের নামে অনেক মানহীন আয়োজন দেখা যায়। অনেক বড় শিল্পী ও গুণী মানুষ সেসব পুরস্কার গ্রহণ করে আলোচনায় নিয়ে আসেন। বিষয়টা কীভাবে দেখেন?
দেখুন, একজন শিল্পী তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে কোনো পুরস্কার বা অর্জন পেলে সেটা গ্রহণ করবেই। তবে হ্যাঁ, একটু খোঁজখবর নেওয়া উচিত যে কী পুরস্কার পাচ্ছি, কেন পাচ্ছি। আমাকে যে-কেউ যেকোনো স্বীকৃতি দিলেই সেটা নেওয়া উচিত হবে না। ভাবতে হবে যারা আমাকে পুরস্কৃত বা সম্মাননা দিচ্ছেন তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? সমাজে তাদের ভূমিকা কী। অনেক রকম সমালোচনাই দেখি নানা রকম পুরস্কার প্রদানের আয়োজন নিয়ে। অনেকে পুরস্কার নিয়ে বাণিজ্য করেন। এটা একটা ব্যবসা হয়ে গেছে কারও কারও কাছে। এটা অবশ্যই বেদনার।
নতুন সিনেমা পরিচালনার পরিকল্পনা করছেন। কত দূর এগোলো প্রস্তুতি?
নতুন সিনেমার ব্যাপারে আমি আরও সময় নিতে চাই বিস্তারিত জানাতে। বর্তমানে সিনেমাটির চিত্রনাট্য তৈরি হচ্ছে। আমি সময় ও দর্শক মাথায় রেখে একটি আইডিয়া বাছাই করেছি। সে অনুযায়ী গল্পটা তৈরি হবে। সব শ্রেণির দর্শক যেন এটি উপভোগ করেন। একজন শিল্পী হিসেবে শুধু বিনোদনের দিকটা ভাবলে চলে না, অনেক রকম দায়বদ্ধতাও থাকে। সে বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে এবারের সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে। তবে এর নাম, শিল্পী তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
কবে নাগাদ শুটিং শুরুর পরিকল্পনা করছেন?
গল্প তৈরির কাজটি শেষ হোক। তারপর শিল্পী চূড়ান্ত করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামব। শুটিং কবে থেকে করব এখনই বলতে পারছি না। তবে চলতি বছরই সিনেমাটি মুক্তি দিতে চাই। সেভাবেই আমি প্রস্তুত হচ্ছি। শুটিংয়ের আগে বড় পরিসরে এর মহরত হবে। সবাইকে সবকিছু চূড়ান্তভাবে জানাব।
আপনার পরিচালনায় প্রথম সিনেমা ‘ফিরে দেখা’ সরকারি অনুদানের ছিল। এবারেরটিও কি সে রকমই হবে?
এখনও নিশ্চিত নয়। তবে সিনেমার ধরনে পরিবর্তন থাকবে। ফিরে দেখা ছিল মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম ও মানব-মানবীর প্রেমের গল্প। আর নতুন ছবিটায় আমি ভিন্ন কিছু বলতে চাই। সামাজিকতা, পরিবার ইত্যাদি। সরকারি অনুদান বা আমার নিজের ব্যক্তি উদ্যোগ- যেকোনোটাই হতে পারে।
সিনেমার অভিনয়ে আপনাকে দেখা যায় না কেন?
তেমন সিনেমার প্রস্তাব তো আসে না যে কাজ করব। দীর্ঘদিন অভিনয় করে এখন যেই সেই চরিত্রে তো আর কাজ করতে পারি না। দর্শক যদি আমাকে উপযুক্ত গল্পে ও চরিত্রে না পান তাহলে কাজ করে আদতে কোনো লাভ নেই। তাই অভিনয় করা হয় না।
শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে এরই মধ্যে শোরগোল শুরু হয়েছে। আপনাকে কি এবার দেখা যাবে নির্বাচনে?
আপনারা জানেন আমি সর্বশেষ নির্বাচনে কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত ছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে পদত্যাগও করেছিলাম। অনেক কারণ ছিল। নিজের ব্যস্ততাও ছিল অনেক। সেজন্যই সরে এসেছিলাম। এবারের নির্বাচন নিয়ে আমি কিছু ভাবিনি। আমি শিল্পী মানুষ, শিল্পীদের কল্যাণে সমিতির সব ভালো কাজের সঙ্গে আছি।